মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথলী সংযোগ মোড়ে বাসচাপায় দুই সচিব নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় বাসচালককে নয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে দুই লাখ ছয় হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকেলের দিকে আসামির অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন মানিকগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক উৎপল ভট্টাচার্য্য।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি হলেন দ্রুতি পরিবহনের বাসচালক মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কামার খেলা গ্রামের মৃত হানিফের ছেলে। জামিনে বের হয়ে আত্মগোপন করেছেন তিনি।
নিহতরা হলেন- মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০১০ সালের সচিব রিজিয়া বেগম এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) ২০১০ সালের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান।
আনোয়ারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো প্রমাণ হওয়ায় আদালত দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৭৯ ধারায় বাসচালককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে তিন হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৩০৪-খ ধারায় তাকে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ৩৩৮-ক ধারায় তাকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে তিন হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৪২৭ ধারায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত।
বর্ণিত সাজাগুলো একটির পর একটি কার্যকর হবে। একই সঙ্গে আসামির ওপর ৩০৪-খ ধারায় আরোপিত অর্থদণ্ডের টাকা আদায় করে নিহত দুইজনের পরিবারকে সমানভাবে দেওয়ারও নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ৩১ জুলাই মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব রিজিয়া বেগম ও বিসিকের সেই সময়ের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাজেরো জিপ গাড়িতে করে গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন। পথে শিবালয় উপজেলার উথলী সংযোগ মোড়ে সকাল ৭টার দিকে দ্রুতি পরিবহনের বাসটি তাদের গাড়িকে চাপা দেয়। এতে গুরুতর আহত হন তারা। এ অবস্থায় তাদের মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সেদিনই বিসিক প্রধান কার্যালয় ঢাকার এজিএম মো. সামসুল হক বাদী হয়ে শিবালয় থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরংগাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সেই সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম ভূইয়া ২০১০ সালে বাসচালকের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করা হলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২২
এসআই