ঢাকা: একটি শিশুকে হত্যার দায়ের দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। কিন্তু ওই বিচারকে ভুল বলে (মিসকারেজ অব জাস্টিস) তাদের খালাস দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
রায়ে আদালত অভিমত দিয়েছেন, এই মামলায় খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা চাইলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ বা পুর্নবাসন চাইতে পারেন।
বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৬ জানুয়ারি দেওয়া এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি রোববার (২৯ মে) পাওয়া গেছে।
উচ্চ আদালতে দুই আসামির পক্ষে ছিলেন এস এম মাহবুবুল ইসলাম ও মোহাম্মদ শিশির মনির। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
কেন ভুল বিচার সে বিষয়ে শিশির মনির জানান, হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া শিশুর মাথা পাওয়া গেছে কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায়। অথচ শরীর পাওয়া গেছে গাজীপুরের শালবনের ভেতরে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাওয়া যাওয়া মাথাটি আট থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুর। অন্যদিকে শালবনের ভেতরে পাওয়া শরীরের অংশটি ১৪ বছর বয়সী একজনের। রাষ্ট্রপক্ষ শিরচ্ছেদ হওয়া মাথা (শালবনে পাওয়া) ওই শরীরের অংশ, সেটা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া তাদের গ্রেফতারের পর নির্ধারিত সময়ে আদালতে হাজির না করে দুই/তিন পরে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটা আইন না মেনেই করা হয়েছে।
শিশির মনির আরও বলেন, আদালত বলেছেন তারা ১৬ বছর ধরে কারাবন্দি। এর মধ্যে ছয় বছর কনডেম সেলে আছেন। সন্দেহ নেই যে এই দুইজন ভুল বিচারের (মিসকারেজ অব জাস্টিস) শিকার এবং আদালতের অভিমত হচ্ছে তারা দুইজন এরজন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ বা পুর্নবাসন চাইতে পারেন।
২০১৬ সালের মার্চে মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে মো. রাজিব ওরফে গোলাম রব্বানি ওরফে শংকর চন্দ্র দেবনাথ এবং মো. জাকির হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার একটি আদালত।
নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০০৫ সালের ৯ এপ্রিল ঢাকার শাজাহানপুর ওভারব্রিজের নিচ থেকে স্থানীয় জনতা একটি ব্যাগসহ শংকর ও জাকিরকে আটক করে। তাদের ব্যাগে পাওয়া যায় এক বালকের কাটা মাথা।
এ বিষয়ে মামলা হওয়ার পর ২০১৬ সালের মার্চে বিচারকাজ শেষে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পরে তারা হাইকোর্টে আপিল করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
ইএস/আরআইএস