ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বৃদ্ধাকে নির্যাতন, আসামিদের জামিন অবিচারক সুলভ: হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২
বৃদ্ধাকে নির্যাতন, আসামিদের জামিন অবিচারক সুলভ: হাইকোর্ট

ঢাকা: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় এক বৃদ্ধাকে চুলের মুঠি ধরে টেনে নির্যাতন করার ঘটনার মামলায় গ্রেফতার আসামিদের নিম্ন আদালত জামিন দেওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে আসামিদের জামিন বাতিলে দুই সপ্তাহের রুল জারি করা হয়েছে।

স্বপ্রণোদিত হয়ে রোববার ১৮ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো.রেজাউল হাসান ও বিচারপতি মো.আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। তিনি জানান, ওই ঘটনায় আদালত আসামিদের জামিন বাতিলে রুল জারি করেন।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, হাটুলিয়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর স্ত্রী খাইরুনেছার একমাত্র সম্বল বসতভিটা কিনেছেন বলে দাবি করেন প্রতিবেশী সাবেক ইউপি সদস্য মো. সুরুজ মিয়া। এরপর গত ১৫ জুলাই শুক্রবার খাইরুনেছার জমিতে গাছ লাগাতে যান সুরুজ ও তার লোকজন। এ সময় খাইরুন্নেছা ও তার স্বজনেরা বাধা দিতে যান।

একপর্যায়ে সুরুজ ও তার লোকজন খাইরুন্নেছার চুলের মুঠি ধরে টেনেহিঁচড়ে নিতে থাকেন। অন্য প্রতিবেশীরা চলে এলে সুরুজ ও তার দল খাইরুন্নেছার উঠান থেকে চলে যান।

এ ঘটনায় আহত খাইরুনেছা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। নির্যাতনের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে পুলিশ হাটুলিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে আবদুল কাইয়ুম ও ফারুককে গ্রেফতার করে।

তারা হাটুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো. সুরুজ মিয়ার আত্মীয়।

পরে ২০ জুলাই দুই আসামিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জামিন দেন।

বিষয়টি নজরে নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।

আদেশে হাইকোর্ট বলেন, এই মামলায় ৩০৭ ধারার অভিযোগ ও প্রাথমিক প্রমাণ রয়েছে এবং আসামিরা বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করার মতো অপরাধ করেছেন মর্মে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ ছিল।

 

‘পুলিশ ফরোয়ার্ডিংয়ের বিবরণ মোতাবেক এই আসামিদের এই পর্যায়ে জামিন দেওয়ার যৌক্তিকতা ছিল না এবং এভাবে জামিন দেওয়ায় শক্তিশালী আসামিদের দ্বারা দুর্বল ভিকটিমকে ন্যায় বিচার ও নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত করাসহ মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ ও তদন্তকে প্রভাবিত করার বাস্তব কারণ ছিল। ’

উচ্চ আদালত আদেশে আরো বলেন, জামিনের আদেশটি স্পষ্টতই অবিচারক সুলভ এবং যেহেতু ২০ জুলাইয়ের জামিন আদেশের যথার্থতা, যৌক্তিকতা এবং তা আইন সঙ্গত কিনা যাচাই করার সঙ্গত কারণ রয়েছে।

তাই ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৩৩৯(১) ধারার বিধান মতে এই মর্মে স্ব-প্রণোদিত হয়ে জামিন আদেশ রহিত ও বাতিল পূর্বক আসামিকে আত্মসমর্পণ করার এবং জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

আদেশ পাওয়ার ১৪ কর্ম দিবসের মধ্যে এই রুলের ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি আদেশের অনুলিপি ময়মনসিংহের দায়রা জজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং ঈশ্বরগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) বরাবরে ইস্যু করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২
ইএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।