ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন কেক কেটে উদযাপন করেছে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম, পরিষদের সদস্য সচিব ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতজ উদ্দিন ফকির, দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল প্রমুখ।
শেখ হাসিনার জন্ম তৎকালীন ফরিদপুরের টুঙ্গিপাড়ায় ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। মায়ের কাছে বেড়ে ওঠা শেখ হাসিনা ১৯৫৪ সাল থেকে ঢাকায় পরিবারের সঙ্গে মোগলটুলির রজনী বোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী থাকা অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে অংশ নেন এবং কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। শেখ হাসিনা ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় ১৯৬৭ সালে এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী গ্রেফতার করে। এ সময় হাসিনা তার বাবার সঙ্গে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর রোডের বাসাতেই ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম কালো দিনে বোন রেহানাসহ পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালের ৯ মে মৃত্যুবরণ করেন হাসিনার স্বামী ড. এম ওয়াজেদ মিয়া।
শেখ হাসিনার জ্যেষ্ঠ সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও ছোট সন্তান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সালে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে দলের সভাপতি নির্বাচিত করে। ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।
শেখ হাসিনা স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন ও ১৯৯০ সালে অভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। এর মধ্যে তিনি ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ ও ১৯৯১-১৯৯৬ পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২০০১ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
তারপর ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন। বিরোধী দলে থাকার সময় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় এক জনসভায় তার ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। এ হামলায় শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ১৯ জন মৃত্যুবরণ করেন ও শতাধিক আহত হন। এই গ্রেনেড হামলার তদন্তকে ভিন্ন খাতে করার জন্য ‘জজ মিয়া’ নাটকসহ বেশকিছু প্রহসন সৃষ্টি করেছিল তৎকালীন চারদলীয় ঐক্যজোট প্রশাসন।
এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হন ২০০৭ সালে। ২০০৮ সালে জেল থেকে মুক্তিলাভের পরে তিনি চিকিৎসার্থে কয়েক মাস বিদেশে অবস্থান করেন। এরপর দেশে ফিরে দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ বছর নির্বাচনে জনগণের বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। গত ১৪ বছর ধরে শেখ হাসিনা দৃঢ় চেতনায় দেশের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২
ইএস/এসএ