ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা, ৫ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা, ৫ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

রংপুর: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক কিশোরীকে (১৬) বাসা থেকে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যার ঘটনায় পাঁচজন আসামিকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরের দিকে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।  

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন চার আসামি। আর এক আসামি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন।  

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গঙ্গাচড়া উপজেলার নরসিংহ মর্ণেয়া গ্রামের শামসুল আলমের ছেলে আবুজার রহমান (২৮), হান্নানের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৭), মতিয়ার রহমান মুন্সির ছেলে নাজির হোসেন (৩২), আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম (২৯) এবং আমিনুর রহমান (২৯)। এদের মধ্যে আলমগীর হোসেন পলাতক। পরে তাদের সরাসরি রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।  

মামলার বিবরণে জানা গেছে, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার নরসিংহ গ্রামের আইয়ুব আলীর কিশোরী কন্যার সঙ্গে একই গ্রামের সামসুল আলমের ছেলে আবুজার রহমানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই একপর্যায়ে কিশোরী মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে আবুজারকে বিষয়টি জানায়। ২০১৫ সালের ১৪ মে নিহত কিশোরীর বাবা-মা এক আত্মীয়র বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। বাসায় কিশোরী মেয়ে ও তার ভাগ্নি সান্তনা ছিল। এ সুযোগে আবুজার তাদের বাসায় এসে কিশোরীকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর আসামি আবুজার ও তার চার বন্ধু আলমগীর, নাজির হোসেন, করিম বাদশা ও আমিনুর পুর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে কিশোরী গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সে এসব ঘটনা সবাইকে জানাবে বললে- আসামিরা মেয়েটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করে মরদেহ বাড়ির অদূরে একটি ক্ষেতে ফেলে চলে যান। এ ঘটনায় নিহত কিশোরীর বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া থানায় মামলা দায়ের করে। এলাকাবাসী আসামি আবুজারকে ধরে পুলিশে সোপর্দ্দ করে। পরে পুলিশ তার দেওয়া জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে নাজির, করিম বাদশা ও আমিনুরকে গ্রেফতার করে। আসামির সবাই আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে জবাই করে হত্যার কথাও অকপটে জবানবন্দিতে জানায়। মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে পাঁচ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন। পলাতক আসামি আলমগীর গ্রেফতার হবার পর সাজা কার্যকর করা হবে বলেও বিচারক রায়ে উল্লেখ করে।  

প্রায় সাত বছর মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করা হয়।  

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত পাঁচ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।