ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ভয় নয়, আশ্রয় হোন

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৩
ভয় নয়, আশ্রয় হোন

ভালোলাগা থেকেই একটি সম্পর্কের শুরু, যার রেশ টেনে যায় ভালোবাসায়, আর সমাপ্তি বিয়ে পর্যন্ত। কিন্তু কৌশলগত দিক থেকে এই দায়িত্ব-কর্তব্য ও বোঝাপড়াগুলো দু’জনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

দায়িত্ব নিন দু’জনেই
একটি কথা উভয়েরই মনে রাখা উচিত, একতরফা আর যাই হোক সম্পর্ক হয় না। আমরা প্রায়ই ভুল করি, রিলেশনশিপ টিকিয়ে রাখা ও ভাঙনের সমস্ত দায়িত্ব ও সম্ভাবনা একটি পক্ষের ওপর ছেড়ে দিই। পুরুষেরা নারীদের আর নারীরা পুরুষদের দোষারোপ করেন।  

নিজেকে দিয়ে বিচার করুন
আপনি কর্মজীবী, আপনার সঙ্গীও তাই। কর্মক্ষেত্র ছাড়াও আপনাদের উভয়েরই পরিবার, বন্ধু ও অন্যান্য সামাজিক কিছু সম্পর্ক রয়েছে। দু’জনের দিক থেকেই এ বিষয়গুলোকে ছাড় দিন। লক্ষ্য করুন, আপনার আচরণে আপনার সঙ্গী এসব সম্পর্ক সহজভাবে সচল রাখতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন কিনা। যদি তিনি আপনাকে এ বিষয়ে ছাড় দিতে পারেন তাহলে আপনিও দিন।  

যোগাযোগ রাখুন
নারী-পুরুষ দু’জনেরই ব্যস্ততা রয়েছে। একটা কথা জানেন কি- বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম মানুষটিও সবচেয়ে বেশি সম্পর্কযুক্ত থাকার ক্ষমতা রাখেন। শুধু চাই ইচ্ছেটা। কাজের ফাঁকে ফাঁকে দু’একটা ফোন করে খোঁজখবর নিন- তিনি কেমন আছেন, খেয়েছেন কিনা। আদতে একদম সময় নেই বলে কিছু নেই, ভুলে যাওয়াটা ভিন্ন বিষয়।

মনোযোগ দিন, বাধা নয়
প্রিয় মানুষের প্রতি মনোযোগ মানেই এই নয়, তার দিকে সর্বক্ষণ নজর রাখতে হবে, তাকেই সারাক্ষণ ভাবতে হবে। তবে খেয়াল রাখা জরুরি। হতে পারে আপনার সঙ্গী আপনার প্রতি একটু বেশিই যত্নশীল, স্নেহপরায়ণ বা অবসেসড। কিন্তু এতে আপনি বিরক্ত। একটু ভেবে দেখুন তো- তিনি আপনাকে ভালোবাসেন বলেই আপনাকে নিয়ে ভাবেন, এতে বিরক্তি প্রকাশের কিছু নেই।  

ভালোবাসার প্রকাশ
নারী হোন বা পুরুষ, ভালোবাসার প্রকাশ করাটা খুব জরুরি। কথায় কথায় ভালোবাসি বলতে হবে তা নয় কিন্তু। আপনার কাজ ও আচার-আচরণে যেনো সেটা প্রকাশ পায় আপনার সঙ্গীর কাছে।

ভয় নয় আশ্রয় হোন
সঙ্গীর কাছে আপনার প্রতিমূর্তি কী বা কেমন তা নিয়ে ভেবেছেন কখনও তিনি কি আপনাকে ভয় পান নাকি আশ্রয় ভাবেন আপনার কথা বা আচরণ কি তার ভয়ের কারণ সম্পর্কে ভয় দূরত্ব সৃষ্টি করে। বর্তমান সময়ে রিলেশনশিপে স্ট্যাবিলিটির চেয়ে ব্রেক-আপের সংজ্ঞা বেশি স্পষ্ট। এসময়ের অনেক প্রেমিক যুগলদের কাছেই সম্পর্কের যেকোনো সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে ব্রেক-আপ। আপনি কি আপনার সঙ্গীর যেকোনো ভুল, আচরণ বা ঘটনার কারণেই ব্রেক-আপের হুমকি তার দিকে ছুঁড়ে দিচ্ছেন বা তিনি দিচ্ছেন আপনাকে যদি নিজেদের মধ্যে সমস্যা থাকে তাহলে সেটা নিজেরাই মিটিয়ে নিন। হোক একটু ঝগড়া, কথা কাটাকাটি, মান-অভিমান। সময় নিন, আপনাআপনিই সব ঠিক হয়ে যাবে।  

অযথা দোষারোপ করবেন না
কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দোষারোপ করবেন না। ভুল সবারই হয়, ক্ষমা করুন। আর যদি আপনার ভুলের জন্য সে আপনাকে দোষারোপ করে তাহলে ক্ষমা চেয়ে নিন। সম্পর্কটাই যদি মূখ্য হয়, তবে ক্ষমা চাইতে বা করতে ক্ষতি কী।   তবে এখানেও কথা আছে- আপনি কী চান সম্পর্কটা নিয়ে যদি নিতান্ত ওই ব্যক্তিটিকেই আর সহ্য না হয় বা ভালোলাগা কেটে যায় অথবা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাহলে ভিন্ন বিষয়। সেক্ষেত্রে নতুন সম্পর্ককে আমন্ত্রণ জানানোর খাতিরে বর্তমান সঙ্গীর সঙ্গে নেতিবাচক আচরণ বা তাকে অহেতুক দোষারোপ না করে সরাসরি বলে দিন সত্যটা। অযথা সম্পর্কের সমস্ত অসময়ের দোষ তার কাঁধে চাপাবেন না।

সুখী হওয়াই মূখ্য, ভাঙন নয়
আপনার সম্পর্কের মূলমন্ত্র কী চিরদিন সুখী হয়ে একসঙ্গে বাঁচা নাকি ভাঙনের ভয়ে একে অপরের থেকে গা বাঁচিয়ে কোনোভাবে সম্পর্ক বয়ে চলা কোনো বিষয় নিয়ে বিবাদ হলেই ব্রেকআপের কথা মাথায় আনবেন না, নিতান্তই যদি বাধ্য না হোন। কথায় কথায় ব্রেকআপের ভয় দেখাবেন না, এতে স্বাভাবিক আস্থা ও বিশ্বাসের অবক্ষয় হয়, যা সম্পর্ককে ঢিলে করে দেয়। ব্রেক-আপের ভয়কে সামনে রেখে কোনো সম্পর্ক সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। একে অপরকে বোঝান- আপনারা একসঙ্গে থাকবেন বলেই একই পথে চলছেন, তাই নিজেদের সব সমস্যাগুলোকে নিজেদেরই সামলে উঠতে হবে। ব্রেক-আপ করলে হয়তো একটি সম্পর্কের অবসান হবে, কিন্তু আদতে কি সুখী হওয়া সম্ভব?

নারী-পুরুষ উভয়েরই স্বাধীনতাবোধ রয়েছে। স্বাধীন চিন্তা ও নিজের একটি স্বতন্ত্র জগত রয়েছে প্রতিটি মানুষেরই। ভালোবাসার সম্পর্ক এমনই হওয়া উচিত যা পরস্পরের স্বাধীনতা, মূল্যবোধ ও সম্মানের স্থানগুলোকে অক্ষত ও সুরক্ষিত রাখবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৩
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।