ঢাকা: মায়াবী ছন্দে বাজছে মিউজিক। ছন্দের তালে তালে চলছে প্রদর্শণী।
বাংলানিউজ লাইফস্টাইল ঈদ ফ্যাশন প্রতিযোগিতার অপূর্ব এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয় শনিবার। বাংলানিউজের কনফারেন্স রুমে সম্মিলন ঘটে ফ্যাশন ডিজাইনার, সমালোচক আর ফ্যাশনশিল্পীদের।
এর আগে দেশের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলোর সেরা ডিজাইন জমা হয় বাংলানিউজের লাইফস্টাইল বিভাগে। লাইফস্টাইল এডিটর শারমিনা ইসলামের সমন্বয়ে সেখান থেকে বাছাই করা ডিজাইনগুলো নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতা।
প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন দেশখ্যাত ফ্যাশন হাউস অঞ্জনসের স্বত্বাধিকারী শাহিন আহমেদ, নগরদোলার স্বত্বাধিকারী আলী আফজাল, ফ্যাশন ডিজাইনার জাওয়াদ আরিফ ও ফ্যাশন বিষয়ক প্রশিক্ষক মাহমুদ রেহান।
বাংলানিউজের পক্ষ থেকে আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কনসালটেন্ট এডিটর জুয়েল মাজহার, হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন, চিফ অব করেসপন্ডেন্টস আহমেদ রাজু, কো-অর্ডিনেশন এডিটর সুকুমার সরকারসহ অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর, নিউজরুম এডিটর ও সংবাদকর্মীরা।
শামীম হোসেনের সাবলীল উপস্থাপনায় বাংলানিউজের কনসালট্যান্ট এডিটর জুয়েল মাজহার তার আলোচনায় দেশীয় ফ্যাশনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ এদেশের ফ্যাশনও এখন বিদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে শুরু করেছে। আমাদের কোনো কোনো কাজ গর্ব করার মতো। বিশেষ করে দেশীয় ঐতিহ্য আর মোটিফকে ঘিরে ভালেঅ ফ্যাব্রিক্স আর মনকাড়া ডিজাইনে আমাদের দেশের অনেক কাজই কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিদেশিদের টেক্কা দিতে পারে। আমরা এখন আমাদের দেশের ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে গর্ব করতে পারি। এদেশের তরুণরা এ শিল্পকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। কারণ স্কাই ইজ দ্য লিমিট---আকাশই আমাদের একমাত্র ঠিকানা। ”
তিনি ফ্যাশনের সম্ভাবনা নিয়ে বলেন, “আগে আমরা একজন বিবি রাসেলকে চিনতাম। এখন তার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে আমরা এখন অনেক বিবি রাসেলের জন্য পথ চেয়ে আছি। শত শত তরুণ তরুণীর মধ্য দিয়ে আমরা ভবিষ্যতের শতশত সুপার মডেল পাবো। মেধা আর মননের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে এদেশের ফ্যাশন একদিন বিশ্ববাজারে সবার কাছে সর্বাধিক সমাদৃত হবে। ”
মাহমুদ মেনন বাংলানিউজের পক্ষ থেকে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “এমন সুন্দর আয়োজনে যারা সহযোগী হয়েছেন, তারা নিঃসন্দেহে একটি ভালো কাজকে এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্নটিই লালন করেন। এ স্বপ্নকে সমৃদ্ধ করতে আরো আন্তরিক হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। এ আয়োজনের সব শুভার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ”
আহমেদ রাজু বলেন, “ফ্যাশন নিয়ে অনুশীলনের ফলে আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনেক ভালো ডিজাইন করতে সক্ষম হচ্ছে। ক্রমেই তারা তাদের উজ্জ্বল আলো ছড়াতে শুরু করেছে। এ শিল্পকে আরো বেশি সমৃদ্ধ ও সমাদৃত করে তুলতে হবে। ”
কোরিওগ্রাফার রাকিব খানের নির্দেশনায় ফ্যাশন হাউসগুলোর পোশাকে মঞ্চ আলোকিত করে তরুণ মডেলশিল্পীরা। ফ্রেসলুক থেকে নির্বাচিত বেশ ক’জন মডেল ছিলেন এ তালিকায়। তাদের মধ্যে ছিলেন অনুপ, জনি, ইমরান, শোভন, সজিব, জনি বাবু, শোভন কাপুর, শাহেদ, স্বর্ণ, সিফাত, অহনা, নিসা, জেনেট মৌ ও শিশুশিল্পী রাইসা।
শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টি-শার্ট নিয়ে ফ্যাশনশিল্পীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। মনোমুগ্ধকর বিভিন্ন ডিজাইনের এসব পোশাকে যখন শিল্পীরা একের পর এক মঞ্চে আসছিলেন, তখন উপস্থিতিদের হাতে বেজে উঠেছিল করতালির ঝড়। শিল্পীরাও নিপুনভাবে উপস্থাপন করেন তাদের পরিবেশনা।
তিনটি পর্বে বিভক্ত এ প্রদর্শনীতে বিচারকের মন্তব্যে শাহীন আহমেদ বলেন, “আমাদের ফ্যাশন ডিজাইন অনেক বেশি উন্নত হয়েছে। প্রতিযোগিতায় স্থান পাওয়া পোশাকের ডিজাইন সেটিই প্রমাণ করে। ”
প্রতিযোগিতার অপর বিচারক আলী আফজাল বলেন, “সত্যিই সব ডিজাইনগুলো ছিল মুগ্ধ করার মতো। ডিজাইনাররা তাদের সচেতন ও মননশীল চিন্তার প্রকাশ করেছেন। ”
প্রতিযোগিতায় বাছাইকৃত ফ্যাশন হাউসগুলো হলো দেশ অ্যাটায়ার, ফারজানা ব্লিস, ফারজানা কালেকশান, মুসলিম কালেকশান, উত্তরাঙ্গণ, অপস্, মেঘ, গোলাকার, নিখুঁত বাংলাদেশ, নীলকণ্ঠ, তাজুশীর, যোগী ও শান্তা মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাশন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
প্রতিযোগিতা প্রসঙ্গে বাংলানিউজের লাইফস্টাইল এডিটর শারমিনা ইসলাম বলেন, “সবার সহযোগিতা না থাকলে এ আয়োজন সম্ভব হতো না। ” সহযোগিতার জন্য তিনি নন্দন গ্রুপের মার্কেটিং ম্যানেজার জোবায়েদ আল হাফিজকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। সেইসঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানান বিচারক ও অংশগ্রহণকারী সব প্রতিষ্ঠানকে।
পুরো আয়োজনে দারুণ সব ছবি তোলার কাজটি সুনিপুনভাবে করেছেন বাংলানিউজের স্টাফ ফটোগ্রাফার নাজমুল হাসান ও নুর। ফ্যাশন শো এর বিউটি পার্টনার ওমেন্স ওয়ার্ল্ড ।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১২
এমএ/সম্পাদনা: আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর