কোষ্ঠকাঠিন্য এমনিতেই একটি যন্ত্রণাদায়ক ও বিরক্তিকর সমস্যা। রমজানে অনেকেরই এই প্রবণতা বেড়ে যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ
কেউ যদি পর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করার পরও সপ্তাহে তিনবারের কম পায়খানায় যান, তখন একে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা যেতে পারে। নিচের লক্ষণগুলো দেখে কোষ্ঠকাঠিন্য নির্ণয় করা যায়:
• শক্ত পায়খানা হওয়া,
• পায়খানা করতে অধিক চাপের দরকার হওয়া,
• অধিক সময় ধরে পায়খানা করার পরও পূর্ণতা না আসা,
• আঙুল কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে পায়খানা বের করা এবং
• মলদ্বারের আশপাশ এবং তলপেটে ব্যথা অনুভব করা।
রমজানে কীভাবে ভালো থাকবেন
ইফতারের পর থেকে সাহ্রি পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। খেতে হবে অধিক আঁশসমৃদ্ধ খাবার। যেমন ঢেঁকিছাঁটা চাল, লাল আটা, গোটা শস্য, শাকসবজি ও ফলমূল। যেসব খাবার শরীরে পানি কমিয়ে ফেলে, সেসব খাবার বা পানীয়, যেমন চা, কফি, অধিক মসলাযুক্ত ও তেল-চর্বিজাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া ও মাংস কম খেতে হবে।
একটি কমলা খোসা ছাড়িয়ে নিন। ব্লেন্ড করে রসটুকুর সঙ্গে সামান্য লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন। এবার খেয়ে নিন। এটিও আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেবে।
লেবু যে শুধু কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে তা-ই নয়, এটি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে।
এর সঙ্গে জিরা ও মধু যোগ করে খেলে তো কথাই নেই!
একটি লেবুর অর্ধেকটা নিয়ে রস বের করে নিন। এককাপ গরম পানি নিন। এবার গরম পানিতে লেবুর রসটুকু মেশান। সঙ্গে মেশান এক চা চামচ মধু ও আধা চা চামচ জিরা গুঁড়া। ভালো করে মিশিয়ে খেয়ে নিন। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি মিলবে সহজেই।
নাসপাতি খেতে হবে রস করে। এর মধ্যে আছে সরবিটল। এই সরবিটল মলের নির্গমনে বাঁধা দূর করে, তাই এই রস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভীষণ কার্যকরী। এর সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন সামান্য লেবুর রস। লেবুর রসে আছে ভিটামিন ও মিনারেল যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
দুটি নাসপাতির বীজ বের করে ফেলে দিন। নাশপাতি ছোট ছোট টুকরা করে কেটে নিন। এবার ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। একটি ছাকনিতে রস ছেঁকে নিন। এবার দুই চামচ লেবুর রস ও একটি চিমটি লবণ মেশান। এবার খেয়ে নিন। ইফতারে এটি খেলে ভালো ফল পাবেন।
আপেলে যে প্রচুর ফাইবার আছে, একথা আমরা সবাই জানি। আরও আছে ভিটামিন আর মিনারেল। আপেলের রস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। এর সঙ্গে সামান্য মৌরি গুঁড়া করে মিশিয়ে নিতে পারেন। মৌরিতে আছে ডায়াটেরি ফাইবার। এটি মলের মধ্যে পানির অংশ যোগ করে মল করে নরম।
একটি আপেলের বীজ বের করে ফেলে দিন। আপেলটি ছোট ছোট টুকরা করে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। আধা কাপ পানি মেশান। এবার একটি ছাঁকনিতে ছেঁকে রসটুকু বের করে নিন। এর সঙ্গে আধা চা চামচ মৌরির গুঁড়া মেশান। এরপর খেয়ে নিন। সাহরি বা ইফতার, আপনার সুবিধামতো সময়ে তৈরি করে খান এটি।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য ইসবগুলের ভূসি পানিতে ভিজিয়ে সাথে সাথে খেয়ে ফেললে এবং গরু ও খাসির গোশত এবং অন্যান্য চর্বিযুক্ত খাবার যেগুলো মল শক্ত করে তা থেকে দূরে থাকলে অনেকে উপকার পাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৪
এএটি