শরীরের ওজন মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে, বিশেষ করে পেটে চর্বি জমলে তা হৃদরোগ ও টাইপ টু ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়টি অনেকেরই জানা।
* বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার দেহের নানা মাপকাঠি পরিবর্তিত হয় এবং এতে ওজনও বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে পুরুষ বা নারী, উভয়েরই দেহের ওজন বাড়তে পারে।
* মধ্যবয়সী নারীদের মেনোপজের জন্য পেটে বাড়তি চর্বি হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। তবে ভালো খবর হলো, চিকিৎসকের সহায়তায় এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়।
* অনেকেই বড় কোনো ব্যায়াম প্রোগ্রামের একাংশের ব্যায়াম করে থাকেন। কিন্তু আপনি যদি শুধু হৃৎপিণ্ডের জন্য ব্যায়াম করেন তাহলে তা পেটের চর্বি কমাতে ভূমিকা রাখবে না। এজন্য সঠিক ব্যায়াম করতে হবে। পেটের চর্বি কমানোর জন্য প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ২৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম বা ১২৫ মিনিট উচ্চমাত্রার নির্দিষ্ট ব্যায়াম করা যেতে পারে।
* আপনার কি অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে? ক্র্যাকার্স, চিপস, পরিশোধিত চিনি, কোমল পানীয়, মিষ্টি খাবার ইত্যাদি আপনার পেটের চর্বি বাড়িয়ে দেয়। এর বদলে প্রাকৃতিক উৎস থেকে পাওয়া খাবার যেমন ফলমূল, সবজি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ অন্যান্য খাবার আপনার পেটে চর্বি জমা থেকে রক্ষা করবে।
* মানবদেহ সব ধরনের চর্বিতে একই আচরণ করে না। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চমাত্রায় দ্রবীভূত চর্বি (মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্যের চর্বি) গ্রহণ পেটের চর্বি বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে কিছু উদ্ভিদ, মাছ, সূর্যমুখী তেল ও অলিভ অয়েলে থাকা অদ্রবীভূত চর্বি ক্ষতিকর নয়। বরং সঠিকভাবে খেলে পেটের চর্বি নিয়ন্ত্রণেও এগুলো ভূমিকা রাখে। অবশ্য মাত্রাতিরিক্ত যেকোনো খাবার খাওয়াই ক্ষতিকর হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
* পেটের চর্বি কমানোর জন্য অনেকেই অল্পমাত্রায় শারীরিক অনুশীলন করেন। কিন্তু কিছুদিন অনুশীলনের পর কোনো উপকার পান না। এর কারণ হতে পারে অপর্যাপ্ত অনুশীলন। তাই শারীরিক অনুশীলনের মাধ্যমে পেটের চর্বি কমানোর জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হবে। অন্যথায় কোনো পরিবর্তন নাও হতে পারে।
* আপনার পেটের চর্বি কমানোর সামান্য লক্ষণ দেখা গেলেই কি অনুশীলন বাদ দেন? ব্যায়াম পুরোপুরি সফল হওয়ার আগেই যদি আপনি অনুশীলন ছেড়ে দেন তাহলে এর ফলাফল ধরে রাখা সম্ভব হবে না। এ ছাড়া রয়েছে শুধু পেটের অনুশীলনের মতো কাজ করা। এক্ষেত্রে সারা দেহের জন্য সুষম অনুশীলন করা হতে পারে সঠিক উপায়।
* আপনার যদি কর্মক্ষেত্র, শিক্ষা, সন্তান ইত্যাদি নিয়ে অতিরিক্ত চাপের মাঝে থাকতে হয় তাহলে তা পেটের চর্বি বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে। এক্ষেত্রে অন্যান্য উপায় প্রয়োগ করার আগে মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
* আপনার যদি পর্যাপ্ত ঘুম না হয় তাহলে তা দেহের ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। এর অন্যতম রূপ হতে পারে পেটের চর্বি বৃদ্ধি। এজন্য ব্যক্তিভেদে প্রতি রাতে সাত থেকে ৯ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমানোর প্রয়োজন হয়।
* অনেকের দেহের মাঝখানের অংশ বিশেষ করে পেট, থাই, উরু ইত্যাদি গঠনগত কারণেই মোটা থাকে। জেনেটিক কারণেই এমনটা হতে পারে। এ ধরনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে পেটের চর্বি কমানো কঠিন; তবে অসম্ভব নয়। এজন্য বাড়তি পরিশ্রম করতে হয়।
* টেস্টোস্টেরোনের মাত্রার ওপর দেহের অনেক বিষয় নির্ভর করে। এ হরমোনটি দেহে উচ্চমাত্রায় থাকলে তা ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করতে হবে।
* পেটের চর্বি কমানোর ক্ষেত্রে উৎসাহের সঙ্গে অনুশীলন করার কোনো বিকল্প নেই। আপনি যদি পেটের চর্বি কমাতে চান আবার সব উপায়গুলো ঠিকঠাক মেনে না চলেন তাহলে তা কোনো উপকারে আসবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৫
এএটি