ঢাকা, রবিবার, ২৯ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

প্লাস্টিকের বক্সে গরম ভাত-তরকারি, প্রতিদিনের টিফিনে কী মিশছে খাবারে?

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৫
প্লাস্টিকের বক্সে গরম ভাত-তরকারি, প্রতিদিনের টিফিনে কী মিশছে খাবারে?

অফিসের টিফিন হোক বা ঘরে রান্না করা খাবার ডেলিভারি—প্লাস্টিকের বক্স যেন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে চাউমিন, বিরিয়ানি, মাংস, কিংবা কাবাব—সবই এখন প্লাস্টিকের বক্সে ভরে চলে আসে বাসায় বা অফিসে।

সঙ্গে থাকে প্লাস্টিকের চামচ বা কাঁটা চামচও।

যতই বলা হোক প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে হবে, বাস্তবে কিন্তু দিনে দিনে এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। অনেকেই প্রতিদিন অফিসে প্লাস্টিকের টিফিনবক্সে ভাত, তরকারি বা খিচুড়ি নিয়ে যান। সন্তানদের স্কুলেও দেওয়া হয় এমন বক্সেই খাবার। আবার মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করতেও ব্যবহার করা হয় এই একই কন্টেইনার।

কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন, এই অভ্যাস শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে?

গরম ভাত মানেই বিপদ!
গরম ভাত বা দানাশস্য জাতীয় খাবার প্লাস্টিকের বক্সে রাখলে, তা থেকে শরীরে ক্ষতিকর রাসায়নিক পৌঁছে যেতে পারে। গরম ভাতের বাষ্প থেকে প্লাস্টিকের গায়ে তৈরি হয় ‘আফলাটক্সিন’ ও ‘মাইকোটক্সিন’—দুই ধরনের বিষাক্ত যৌগ। এগুলো শরীরে গেলে লিভার এবং কিডনি আক্রান্ত হতে পারে, বাড়তে পারে জটিল রোগের ঝুঁকি।

শাকসবজির তরকারি মানেই মাইক্রোপ্লাস্টিক
যদি তরকারিতে শাকপাতা বা পাতা জাতীয় উপাদান থাকে, সেক্ষেত্রে প্লাস্টিকের অতি ক্ষুদ্র কণা—মাইক্রোপ্লাস্টিক—খাবারে মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি থাকে। আবার সেই বক্স যদি গরম করা হয়, তাহলে আরও বেশি পরিমাণে ক্ষতিকর কণা ঢুকে পড়ে খাবারে। নিয়মিত এই ধরনের খাবার খেলে হজমের সমস্যা থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

ডালের পুষ্টি কমে যায়
ডাল বা ভেজানো খাবার যদি প্লাস্টিকের পাত্রে বেশি সময় রাখা হয়, তাহলে তার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো দরকারি খনিজ উপাদান নষ্ট হয়ে যায়। ফলে খাবারের পুষ্টিগুণ কমে যায় অনেকটা।

ফল রাখলেও সমস্যা
অনেকেই প্লাস্টিকের বক্সে কাটা ফল নিয়ে যান অফিসে বা স্কুলে। বিশেষ করে কমলা, মালটা, পেয়ারা—যেগুলোয় ভিটামিন-সি বেশি থাকে, সেগুলো প্লাস্টিকের সংস্পর্শে এলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্লাস্টিক থেকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ফলের গায়ে ক্ষতিকর পদার্থ জমে যেতে পারে।

তাহলে কী করবেন?
প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন স্টিল, গ্লাস বা ফুড-গ্রেড সিলিকন কন্টেইনার। এগুলো একটু বেশি দামে হলেও দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য অনেক ভালো।

সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন—কারণ প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাসই গড়ে তোলে সুস্থ ভবিষ্যৎ।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৫
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।