আদিম সময়ে পুরুষরা যখন শিকারে বের হতো, তখন তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের অনেক অস্ত্র থাকতো। সব অস্ত্র দু হাতে বহন করা সম্ভব ছিল না, তাই শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বেঁধে বা ঝুলিয়ে রাখতো।
তাদের অবসর বা বিনোদনের সময় শিকার এবং শিকারের প্রস্তুতির দৃশ্য অভিনয় করে দেখাতো। তখন মাথায়, গলায়, কোমর, বাহু, কব্জিতে শিকারের সাজসজ্জা হিসেবে পরতো যুদ্ধসরঞ্জাম। আর এভাবেই শুরু মানুষকে অলংকরণ করার জন্য অলংকারের প্রচলন। তখন অলংকার ছিল পৌরুষ আর শৌর্য-বীর্যের প্রতীক।
ধীরে ধীরে অলংকার অঙ্গ-শোভা হিসেবে ব্যবহার হতে থাকে। নারীরা তখন তা গ্রহণ করে শরীরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য। কালক্রমে গহনা হয়ে যায় নারীদের ।
উত্তর-আধুনিক সময়ে এসে পশ্চিমা বিশ্বের পুরুষ মডেল এবং গায়করা আবার অলংকার ব্যবহার করতে শুরু করেছেন ফ্যাশন হিসেবে । আর এ ফ্যাশন হটকেকের মতো গ্রহণ করেছে তরুণরা। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।
কণ্ঠশিল্পী জেমস ভ্রƒতে পরেন ছোট রিং, দেখাদেখি তার ভক্তরাও পরতে থাকে। এভাবে দেশ-বিদেশের তারকা ও মডেলদের দেখাদেখি তাদের ভক্তরাও জোরসে শুরু করেছে অলংকারের ব্যবহার। তবে কেবল ঢাকাতেই নয়, বিভাগীয় শহর এবং মফস্বলেও এ ফ্যাশন বেশ জনপ্রিয় এখন। ঢাকার বড় শপিংমল বা রাস্তাঘাটেও চলাফেরার সময় দেখা যায় ছেলেদের গহনার বৈচিত্র্য। একে কেন্দ্র করে দেশে গড়ে উঠেছে এর একটি বড় বাজার।
ছেলেরা সাধারণত গহনা ব্যবহার করে কানে, ঠোঁটে, গলায়, হাতে ও আঙুলে। এর জন্য আছে নানা পদ্ধতি। কানে গহনা পরতে চাইলে কান ফুটো করেও করা যায়, আবার না করেও করা যায়। তবে ভ্রƒ এবং ঠোঁটের নিচে গহনা ব্যবহার করতে চাইলে ছিদ্র করতে হয়। ভালো সেলুনগুলোতে এর ব্যবস্থা আছে। ব্যথানাশক ওষুধে প্রতি ফুটোয় ৫০০ টাকা, তবে সংখ্যায় বেশি হলে গড়ে ৩৫০-৪০০ টাকার মধ্যে পড়বে।
এখন হাতের কব্জিতে নানারকম ব্রেসলেট পরার চল। আছে পাঁচ আঙুলের জন্য আছে পাঁচ রকমের আংটি । সাধারণত এসব গহনা কাঠের, রাবারের, স্টিলের, সোনার, রুপার, মাটির এমনকি সুতার।
এসব অলংকার কিনতে পাওয়া যায় ঢাকার নিউ মার্কেট, গাউসিয়া, আজিজ সুপার মার্কেট, চারুকলার সামনে, দোয়েল চত্বরে। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটের ফুটপাথেও অনেকে পসরা সাজিয়ে বসেন। এগুলোর দাম ৩০ টাকা থেকে শুরু করে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত। দামি গয়নাগুলো তৈরি হয় সোনা, রুপা এবং হীরা দিয়ে। এ ফ্যাশনের সাথে সঙ্গতি রেখে পরতে হয় পোশাক, কাটতে হয় চুল।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১২৫৯, জুলাই ০৭, ২০১০