অনেক অনেক আগের কথা, এক সাঁওতাল নারী মারা গেল অবিবাহিত অবস্থায়। কারণ, তার সমাজের আর সব নারীর তুলনায় এই মেয়েটির গায়ের রঙ একটু বেশিই কালো ছিল।
পুরুষদের আকৃষ্ট করতে পারেনি যে মেয়েটি, দেবতাদের দৃষ্টি কেড়েছিল সে। তাই প্রধান দেবতা তাকে বর দিয়ে বলেছিল, ‘তোর মৃতদেহটিকে আমি এমন একটি গাছে রূপান্তরিত করব, যে গাছের পাতা জগতের সব পুরুষের কাছে উপভোগ্য হবে। ’
সেই গাছটিই হলো তামাকগাছ।
দেবতার ‘বর’ ফলেছিল সন্দেহ নেই। অবিশ্বাসীদের কথা ভিন্ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানও তাই বলে। কিন্তু ব্রিটেনে ঘটতে যাচ্ছে অন্য ঘটনা। বিফলে যাচ্ছে দেবতার আশীর্বাদ।
সম্প্রতি ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইল খবর ছেপেছে, ‘২০৫০ সালে ব্রিটেনে কোনও ধূমপায়ী থাকছে না’। অথচ, বছর বছর জগৎজুড়েই ধূমপায়ীদের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষত, অনুন্নত দেশগুলোতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে এক যুগ আগে সারা বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা ছিল ১১০ কোটি। গেল বছর এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩০ কোটি।
২০১০ সালে ধূমপায়ীদের সংখ্যা কমেনি বলে টোবাকো-কোম্পানিগুলোর কর্তাব্যক্তিদের মুখে হাসি অটুট আছে। কিন্তু এই হাসি বেশিদিন থাকবে না, অন্তত ব্রিটেনে, এমনই মন্তব্য আছে মেইলের প্রতিবেদনটিতে।
‘যে হারে ধূমপায়ীদের সংখ্যা কমছে তাতে দেখা যাবে আগামী ৩০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ব্রিটেনে আর কোনও ধূমপায়ী থাকবে না,’ অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান সিটিগ্রুপ থেকে এই পূর্বাভাস জানিয়েছেন বিশ্লেষক অ্যাডাম স্পিয়েলমান।
গবেষণাটির হিসাবে, ১৯৬০ সালের তুলনায় ব্রিটেনে তরুণ ধূমপায়ীদের সংখ্যা কমেছে শতকরা ৫৩ ভাগ আর ২০০৮ সালের তুলনায় কমেছে ২১ ভাগ।
‘যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তামাকের বাজার শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়াবে,’ স্পিয়েলমানের মন্তব্য।
শুধু ব্রিটেনই নয় এই চিত্র অন্যান্য উন্নত দেশেও দেখা যাচ্ছে। প্রতিবেদনটির ভাষ্য মতে, আগামী ৩০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে অন্যান্য উন্নত দেশ থেকেও ধোঁয়ার মতো বাতাসে মিলিয়ে যাবে ধূমপায়ীদের অস্তিত্ব।
তবে মনে রাখতে হবে, তামাক ব্যবহারের পরিমাণ কমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে তামাকের দাম।
বাংলাদেশ সময় ১৮৫১, জানুয়ারি ১০, ২০১১