সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’ ছবিতে পূর্ণিমার ঝলমলে পারফরমেন্স আবার তাকে নিয়ে এসেছে আলোচনায়। জনপ্রিয় নায়িকা পূর্ণিমাকে নিয়ে চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা ছিল অনেক।
কেমন আছেন পূর্ণিমা? কেমন চলছে আপনার?
ভালো আছি। কাজ নিয়ে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। একসঙ্গে তিনটি ছবির শুটিং করছি। চলছে ডাবল শিফট। সব মিলিয়ে ভালোই চলছে।
ক্যারিয়ার নিয়ে কী ভাবছেন?
ক্যারিয়ার নিয়ে আগের যে কোনো সময় থেকে আমি সিরিয়াস। মাঝে ইচ্ছে করেই একটু ঢিল দিয়েছিলাম। পারিবারিক কারণে বেশ কিছুদিন দেশের বাইরে থাকতে হয়েছে। আসলে একটানা কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম, তাই কিছুদিন বিরতি নিলাম। তবে কাজের ক্ষেত্রে আমি আগের মতোই চুজি। গড়পরতা ছবিতে কাজ করার ইচ্ছে নেই। নায়িকাকে শোপিস বানিয়ে নায়কনির্ভর যেসব ছবি হয়, সে ধরনের ছবিতে কাজ করতে আমি রাজি নই। আগে চরিত্র সম্পর্কে জেনেবুঝে তবেই আমি নতুন ছবিতে সাইন করছি। ঘরে বসে থাকতে রাজি আছি, তবু নিজেকে গুরুত্বহীন শোপিস নায়িকা হিসেবে ভাবতে পারি না।
টিভি নাটকে অভিনয় বা নিয়মিত মডেলিং কি আপনার ক্যারিয়ারকে প্রভাবিত করেছে?
অভিনয়ের নানা মাধ্যম আছে। একজন অভিনয়শিল্পী শুধু এক মাধ্যমে কেন নিজেকে সীমিত রাখবেন? বড়পর্দার পাশাপাশি তাই ছোটপর্দায় কাজ করতেও আগ্রহী হয়েছি। তবে আমার প্রিয় ও প্রধান মাধ্যম চলচ্চিত্র। নাটকে কাজ করাটা আমার কাছে এক ধরনের শখ। টিভিতে কাজ করলেই কোনো ফিল্মস্টার দর্শকের কাছে সহজলভ্য হয়ে যায় তা ঠিক নয়। খেয়াল করলে দেখবেন, টিভিনাটকে কখনো আমি নিয়মিত ছিলাম না। সিনেমাই আমার ধ্যান-জ্ঞান। মডেলিংয়ের কথা নতুন করে কী আর বলবো, এটা আমার প্যাশন। সবাই কি আর মডেলিংয়ে আসতে পারে! মডেল হওয়ার জন্য যোগ্যতা লাগে। ক্যারিয়ারে এটা ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
বর্তমানে নায়কপ্রধান ছবি বেশি হচ্ছে। নায়িকানির্ভর ছবি হচ্ছে না বললেই চলে। এটার কারণ কী?
এটা আমাদের এই সময়ের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সীমাবদ্ধতা। বোধহয় তারা মনে করছেন, নায়িকা প্রধান ছবি দর্শকদের সিনেমা হলে টানতে পারবে না। আবার এটাও হতে পারে যে, ভালো স্ক্রিপ্ট পাওয়া যাচ্ছে না বলেই নির্মাতারা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। ভালো গল্প হলে ছবি না চলার কোনো কারণ নেই। তবে কেন হচ্ছে না, সেটা নির্মাতারাই ভালো বলতে পারবেন।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র বর্তমানে একজন নায়কনির্ভর হয়ে গেছে, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য?
এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। শুধু এটুকু বলবো, একটা ছবির সাফল্য একজনের ওপর নির্ভর করে না। ছবির সাফল্যের পেছনে নির্মাতা-কলাকুশলীসহ সব অভিনেতা-অভিনেত্রীর অবদান থাকে।
আপনি কি মনে করেন, বিয়ে একজন নায়িকার ক্যারিয়ারের ক্ষতি করে?
বিয়ে যদি নায়িকার ক্যারিয়ারের ক্ষতিই করতো তাহলে শাবানা ম্যাডামের ছবি দেখতে দর্শক ভিড় করে সিনেমা হলে আসতো না। সুচিত্রা সেন বিয়ে করেছেন নাকি করেননি, সেটা দশর্কের কাছে বড় বিষয় নয়। সুচিত্রা সেন হৃদয়ছোঁয়া অভিনয় দিয়েই দর্শকের মন জয় করেছিলেন।
একজন নায়ক বা নায়িকার জন্য ফিটনেস কতটা জরুরি?
অবশ্যই জরুরি। শরীর ফিট না থাকলে তো কোনো কাজ গুছিয়ে করা সম্ভব না।
অনেকেই বলছেন, আপনার আগের সেই ফিটনেস নেই। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য?
হ্যাঁ, আমি খানিকটা মুটিয়ে গেছি। কাজের মধ্যে না থাকলে যা হয়। কাজে আবার নিয়মিত হয়েছি। জিম করছি। ডায়েটিং মেনে চলছি। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
আমাদের চলচ্চিত্রের এই সময়ের অবস্থা কেমন?
আগের চেয়ে অনেক ভালো। গড়পরতা ছবি বেশি হলেও কিছু ভালো ছবি তৈরি হচ্ছে। ভালো ছবির দর্শকও আছে। সিনেমা হলগুলো আধুনিকভাবে সংস্কার করা হলে দর্শকসংখ্যা আরো বাড়বে। নতুন কিছু ছেলেমেয়ে আসায় শিল্পী সংকট কমেছে। তবে নতুনদের কেউই এখনো নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি। আমাদের দেশের ছবি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফেস্টিভ্যালে যাচ্ছে ও পুরস্কার পাচ্ছে। দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে। সব মিলিয়ে চলচ্চিত্রের জন্য সময়টা বেশ ভালো। এখন দরকার আরো ভালো ভালো ছবি।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৮০০, জুলাই ০৯, ২০১০