গাজীপুরের পুবাইলে নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর ‘পালিয়ে বিয়ে’ নাটকের শুটিং থেকে ১৯ আগস্ট বুধবার গভীর রাতে অপূর্ব ও প্রভা নাটকীয়ভাবে ময়মনসিংহ পালিয়ে যান এবং পরদিন সকালে বিয়ে করেন। তারপর তাদের পরিকল্পনা ছিল কক্সবাজারে গিয়ে কয়েকটা দিন নিরিবিলি কাটানোর।
গাজীপুরের খামারবাড়িতে অবস্থানকালে অপুর্ব ও প্রভার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডির সঙ্গে। দুই দিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর গতকাল রাতে অপূর্ব তার শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। অপূর্ব জানান, তিনি ও প্রভা ভালো আছেন। পরস্পরের সান্নিধ্যে বেশ সুন্দর সময় পার করছেন। অপূর্ব বলেন, আমাদের এভাবে বিয়ে করাটা হয়তো অনেকেই ভালো চোখে দেখছেন না। অবশ্য এটাই স্বাভাবিক। তবে যা হওয়ার কথা ছিল তাই ঘটেছে। দূর থেকে অনেকে অনেকরকম কথা বলছে। আমাদেরও বলার কিছু কথা আছে। ঢাকায় ফিরে অবশ্যই সব বলবো।
কতোদিন আত্মগোপন করে থাকবেন? জানতে চাইলে অপূর্ব বলেন, আমরা আত্মগোপন করে নেই। আমরা চুরি করি নি বা এমন কোন অপরাধ করিনি যে, আমাদের পালিয়ে থাকতে হবে। দুজনই আমরা প্রাপ্তবয়স্ক। আমরা স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে দুইজন অনেক চিন্তা ভাবনা করেই বিয়ে করেছি। বিয়ের পর কিছুটা সময় আমরা কাছাকাছি থাকার জন্য ময়মনসিংহে আসি। সেখানে আমাদের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে চমৎকার সময় কাটিয়েছি। এখন এসেছি গাজীপুরে এক বন্ধুর খামারে। খুবই সুন্দর পরিবেশ। আসলে কয়েকটা দিন নিজেদের মতো করে কাটানোর জন্যই লোকজনের ভীড় থেকে একটু দূরে থাকা। এই সুন্দর সময়টা তো আর ফিরে পাবো না। অপূর্ব জানান, ইচ্ছে করলেও বেশিদিন তাদের পক্ষে ঢাকার দূরে থাকা সম্ভব নয়। কারণ ঈদের কিছু নাটকের শুটিং এখনো তাদের বাকি রয়ে গেছে।
পরিবারের সঙ্গে দুজনের যোগাযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে অপূর্ব বলেন, আমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ প্রথম থেকেই ছিল। তারা এই ঘটনায় একটু অসন্তুষ্ট হলেও বিষয়টা সহজভাবেই দেখছেন। আমার বিশ্বাস প্রভার পরিবারও পুরো বিষয়টা জানার পর সব মেনে নিবেন।
অপূর্ব সবার দোয়া চেয়ে আরো বলেন, দুই পরিবারের মুরব্বীদের সমঝোতায় আমরা বিষয়টির একটা সুন্দর সুরাহা করবো বলে আশা রাখি। দুই পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদের পর পরই মিডিয়ার সব সতীর্থদের আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠান করার ইচ্ছে আছে আমাদের।
প্রভার সঙ্গেও কথা হয় বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডির। প্রভা বলেন, বেশ চমৎকার সময় কাটছে আমাদের। তবে পরিবারের জন্য কিছুটা মন খারাপও হচ্ছে। এভাবে হুট করে সবাইকে না জানিয়ে বিয়ে করার জন্য আমরা দুজনেই ক্ষমাপ্রার্থী । আপনাদের মধ্যকার ভালোবাসার সম্পর্ক কতোদিনের জানতে চাইলে প্রভা বললেন, এটা আসলে হিসেব করে বলা মুশকিল। আমরা আসলে একে অন্যেকে অনেকদিন ধরে পছন্দ করতাম। এটা দুজনই টের পেতাম, বুঝতাম। কিন্তু কেউ কাউকে কিছু বলিনি। আমিই বিষয়টি অপূর্ব’র সামনে তুলে ধরি।
পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রভা বললেন, বাবা-মার সঙ্গে এখনো কথা হয় নি। তবে ১৯ আগস্ট রাতেই আমি আমার খালার সঙ্গে কথা বলি। তাকে সবকিছু জানাই। খালা নিশ্চয়ই বাবা-মাকে সবকিছু জানিয়েছেন। তারা হয়তো সাময়িকভাবে আমার উপর রেগে আছেন। আমার ধারণা তারা আমার সিদ্ধান্তের মূল্য দিবেন। প্রভা আরো বলেন, জীবনটা তো আমার নিজের। জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটা তাই আমাকেই নিতে হয়েছে। সেটা আমি খেয়ালের বশে নেই নি। সবদিক ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্তটা নিয়েছি।
রাজীবের সঙ্গে বাগদান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রভা এ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, রাজীব আমার আট বছরের পুরনো বন্ধু। আমরা খুব ভালো বন্ধু। এই বন্ধুত্ব আশা করি আগামীতেও থাকবে। প্রভা আরো বলেন, ঈদের অনেক আগে থেকেই নির্মাতাদের আমি শিডিউল দিয়ে রেখেছি। এমনিতেই দু’একজনের প্রডাকশনে ঝামেলা করে ফেলেছি। সেই ঘাটতি আমাকেই পুরণ করতে হবে। শিগগিরই আমি আবার নিয়মিত শুটিংয়ে অংশ নেয়া করবো। সবশেষে প্রভা তাদের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১২২৫, আগস্ট ২১, ২০১০