মুখগহ্বরের ঝিল্লির সফল অপারেশনের মধ্য দিয়ে পপসম্রারাট আজম খান অনেকটাই ক্যান্সারমুক্ত হয়েছেন। কিন্তু পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত হননি।
শিল্পীর বড় মেয়ে ইমা খান জানান, ১৪ সেপ্টেম্বর আজম খানের আবার সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে বিমানে উঠার কথা ছিল। কিন্তু অর্থের সংস্থান না হওয়ায় ফাইটটি বাতিল করা হয়। ফোনে বাতিল করা হয় মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তির শিডিউল।
তিনি জানান, অপারেশন-পরবর্তী ট্রমোথেরাপি নেওয়ার জন্য চিকিৎসা খরচ লাখবে প্রায় ৪০ লাখ টাকা, এর বাইরে থাকা-খাওয়া-যাতায়াতসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় হবে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। অথচ বিমানে উঠার আগে আজম খানের তহবিলে ছিল সাকুল্যে দুই লাখ টাকা। এ অবস্থায় ফাইট ও ট্রমোথেরাপি নেওয়ার শিডিউল বাতিল করা ছাড়া শিল্পী ও তার পরিবারের সামনে অন্য কোনো উপায় ছিল না।
পপসম্রাট ও মুক্তিযোদ্ধা আজম খান মুখগহ্বর-ক্যান্সারের অস্ত্রোপচারের পর গত ২৪ আগস্ট রাতে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন। টানা ৪০ দিন সিঙ্গাপুরে অবস্থান করে সাময়িকভভাবে তিনি দেশে ফেরেন। আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদ কাটানোর জন্য আজম খান অস্থির হয়ে ওঠায় চিকিৎসকরা তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেন। কিন্তু পুরোপুরি ক্যান্সারমুক্ত হতে হলে তাকে সিঙ্গাপুরে মোট ছয়বার ব্যয়বহুল ট্রমোথেরাপিসহ আনুষঙ্গিক চিকিৎসা নিতে হবে। এর ব্যবস্থা দেশে নেই। ট্রমোথেরাপির বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে কেমোথেরাপি নেওয়ার ব্যবস্থা আছে বাংলাদেশে। তবে শিল্পীর শারীরিক দুর্বলতার কারণে বিশেষজ্ঞরা ট্রমোথেরাপি নেয়ারই সুপারিশ করেছেন। বাংলাদেশের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, রোগীর অস্ত্রাপচার যারা করেছেন তাদের তত্ত্বাবধানে থেরাপি প্রয়োগ করাই ভালো। কিন্তু সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের ব্যয়বহুল এ চিকিৎসার অর্থসংস্থান নিয়ে শিল্পীর পরিবার এখন বেশ চিন্তিত।
এ যাবৎ আজম খানের চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৬০ লাখ টাকা। এর জোগান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন (বামবা), আইয়ুব বাচ্চু, কুমার বিশ্বজিৎ, এন্ড্রু কিশোর, বিপ্লব, মাহফুজুর রহমান, ফরিদুর রেজা সাগর, এনায়েত হোসেন বাপ্পী, মতিউর রহমান, হানিফ সংকেতসহ অনেকে। কিন্তু শিল্পীর পুরো চিকিৎসার জন্য দরকার হবে আরও প্রায় ৬০ লাখ টাকার। ইমা খান জানান, ঈদের ব্যস্ততা শেষে তাদের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই আমাদের টেনশন করতে নিষেধ করছেন, বিষয়টি তারা দেখছেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
অস্ত্রোপচারের প্রতিক্রিয়ায় এখনো শিল্পীর মুখের কথা জড়িয়ে যায় এবং চিকিৎসকরা তাকে প্রয়োজন ছাড়া কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান আজম খানের সফরসঙ্গী ও ছোট ছেলে হৃদয় খান। তিনি জানান, পরবর্তী চিকিৎসায় এই জড়তা থাকবে না এবং শিল্পী আবারও গান গাইতে পারবেন ।
আজম খান বর্তমানে তার কমলাপুরের কবি জসীমউদদীন রোডের নিজ বাসভবনে আছেন। শিল্পীকে একনজর দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্ত-সতীর্থরা ভিড় করছেন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৭৫০, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১০