দেখতে দেখতে যেন চলে যায় একটি বছর। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি ২০১১ কে বিদায় জানিয়ে ২০১২ কে বরন করে নেওয়ার।
রঙ-এ বিয়ের পোশাক প্রর্দশনী:
বিয়ে মানে দুজনের নতুন জীবন শুরু। বিয়েতে সবার আগেই যে বিষয়টি প্রাধান্য পায় তা হল বর-কনের পোশাক। গায়ে হলুদের শাড়ি, বিয়ের শাড়ি, বৌভাত এর শাড়ি,: ১ম শাড়ি, ২য় শাড়ি, ৩য় শাড়ি এভাবেই কেনাকাটা করে থাকে বিয়ে বাড়ির লোকজন। একইভাবে বরের জন্য বিয়ের শেরওয়ানি, পাঞ্জাবি ও অন্যন্য পোশাক সামগ্রী ক্রয় করা হয়ে থাকে।
এই সব বিষয়কে বিবেচনা করে রঙ-এ বর ও কনের পোশাকের বিশেষ প্রর্দশনীর আয়োজন করেছে। ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসজুড়ে এই প্রর্দশনী চলে।
ঢাকায় সুস্মিতা সেন:
বাংলাদেশের অভিজাত ফ্যাশন হাউস ভাসাবির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নিযুক্ত হয়েছেন বাঙালি বংশোদ্ভূত বলিউড অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গত ১৬ ডিসেম্বর শুক্রবার ঢাকায় আসেন সাবেক এই বিশ্বসুন্দরী। অভিজাত এলাকা গুলশানে দোকানটির শাখা উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় বাংলাদেশের অনেক তারকাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ওয়েডিং ডায়েরি’র প্রদর্শনী:
বিয়ে জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, স্মৃতি ধরে রাখা ছবি বা ভিডিও অথবা বিয়ের অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করে তোলার বিভিন্ন ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন নিয়ে ১১-১৯ নভেম্বর পর্যন্ত ধানমন্ডির দৃক গ্যালারিতে চলে ‘ওয়েডিং ডায়েরি’ প্রদর্শনী।
প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধর প্রীত রেজা জানান, প্রদর্শনীর মাধ্যমে শুধুমাত্র ফটোগ্রাফি নয়, ওয়েডিং প্লানার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে।
দৃষ্টিনন্দন এই প্রদর্শনীতে বিয়ে বাড়ির চমৎকার আবহ তৈরি করা হয়।
সিল্কেন সিনার্জি:
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মডেল ও ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের জীবন ও কর্মতৎপরতাকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র- ‘সিল্কেন সিনার্জি’। বাংলাদেশে ফরাসি রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে ২১ অক্টোবর ২০১১ সন্ধ্যায় ‘সিল্কেন সিনার্জি’র বিশেষ প্রদর্শনী উপলক্ষে বিবি রাসেলের ডিজাইন করা পোশাক ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রীরও একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
রাষ্ট্রদূত শার্লে কোজেরে আমন্ত্রিত দর্শকদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, বিবি রাসেল তার সৃজনশীল কাজের মধ্য দিয়ে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছেন। এই প্রামাণ্যচিত্রে তার কাজের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে।
ফ্যাশন মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করে বিবি রাসেল ১৯৯৪ সালে ইউরোপ থেকে জন্মভূমির টানে ফিরে আসেন। বাংলাদেশ ছাড়াও তিনি ভারতের রাজস্থানের জয়পুরের ঐতিহ্যবাহী তাঁতবস্ত্র ও হস্তশিল্প, শ্রীলঙ্কা ও কম্বোডিয়ায়ও তাঁতিদের নিয়ে কাজ করেছেন। সেসব দেশের কাজও প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়।
ফ্যাশন শো বাটেক্সপো নাইট:
ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিজিএমইএ আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী বাটেক্সপো মেলা। নানা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এ আয়োজনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বর্ণাঢ্য ফ্যাশন শো। ফ্যাশন শোতে অংশ নিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থনীয় রয়্যাম্প মডেলরা।
বাটেক্সপো নাইটে ফ্যাশন শোর পাশাপাশি সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন, আইয়ুব বা”চু, ন্যান্সি। এছাড়াও ভারতের জনপ্রিয় দুই শিল্পী কুনাল গাঞ্জাওয়ালা ও রিচা শর্মার মন মাতানো পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ করে।
এলিজাবেথ টেলরের বিয়ের পোশাক নিলামে:
কিংবদন্তি অভিনেত্রী প্রয়াত এলিজাবেথ টেলরের বিয়ের পোশাক নিলামে তুলেছে নিউইয়কের্র নিলাম প্রতিষ্ঠান ‘ক্রিস্টি’। ডিসেম্বরের ১৪ থেকে ১৬ তারিখে লিজ টেলরের বিয়ের পোশাকসহ তার প্রায় ৪০০টি পোশাক নিলামে তোলা হয়। জানা গেছে, এই বিয়ের পোশাকটি ১৯৬৪ সালে লিজ তার বিয়েতে পরেছিলেন। রিচার্ড বার্টনের সঙ্গে বিয়ের সেই দিনটিতে লিজকে অপ্সরীর মতো দেখাচ্ছিল। এই পোশাকটি লিজ দ্বিতীয়বার আবার পরেন ১৯৭৫ সালে।
রূপকথার বিয়ে:
২০১১ সালের সব চেয়ে আলোচিত বিয়ে প্রিন্স উইলিয়াম ও তার দীর্ঘদিনের মেয়েবন্ধু কেট মিডলটনের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
পুরো বিশ্বের মানুষের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০১১ লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে ধর্মীয় অনুশাসন ও রাজকীয় রীতিনীতি অনুযায়ী তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ ড. রোয়ান উইলিয়ামস প্রায় দুই হাজার অতিথির উপস্থিতিতে তাদেরকে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করেন। এ সময় হাজার হাজার শুভাকাংখী প্যালেসের বাইরে অবস্থান করেন এবং শতশত কোটি দর্শক টেলিভিশনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা উপভোগ করে এবং নব দম্পতিকে শুভকামনা জানায়।
গীতাঞ্জলি ওয়েডিং ফেস্টিভাল:
বিয়ে আমাদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বিয়ের উৎসবকে আকষর্ণীয় এবং সফল করতে চাই আমরা। আর আমাদের এই চাওয়াকে সহজ করতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গীতাঞ্জলি আয়োজন করা হয় ‘গীতাঞ্জলি ওয়েডিং ফেস্টিভাল’। হোটেল রেডিসনের গ্রান্ড বল রুমে ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর দুইদিন ব্যাপী মেলায় বিয়ের পোশাকসহ যাবতীয় সামগ্রী রাখা হয়।
প্রদর্শনীর শেষ দিন উপমহাদেশের প্রখ্যাত ডিজাইনার ঋতু কুমারের ২৫ টি বিয়ের পোশাক নিয়ে ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হয়। ফ্যাশন শো-তে দেশের নামকরা মডেলরা অংশ নেন।
ঢাকা ফ্যাশন উইক ২০১১:
দেশের সব চেয়ে আলোচিত, আড়ম্বরপূর্ণ ফ্যাশন ইভেন্ট ‘ঢাকা ফ্যাশন উইক ২০১১’ চার দিনব্যাপী ফ্যাশন উইকের শো শেষ হয় ১৮ জুন । এই দিন রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চোখ ধাঁধানো ফ্যাশন শো প্রদর্শন করা হয়। চার দিনের অনুষ্ঠানে মোট ৫০ টি ফ্যাশন শো প্রদর্শীত হয়। বাংলাদেশের ফ্যাশন আইকন, ডিজাইনার এবং মডেল ছাড়াও বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের ফ্যাশন বোদ্ধারা উপস্থিত থেকে ঢাকা ফ্যাশন উইককে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
এবারের ফ্যাশন উইকের স্লোগান ছিলো-‘আ সেলিব্রেশন অব সাইট’। ফ্যাশন শো তে দেশ বিদেশের নাম করা ডিজাইনারদের দৃষ্টিনন্দন পোশাক প্রদর্শন করা হয়।
ঢাকা ফ্যাশন উইক, চাইল্ড সাইট ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যৌথভাবে শিশু অন্ধত্ব রোধে সচেতনতা বাড়াতে শো এর মাধ্যমে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেছে।
স্বাধীনতা ও ফ্যাশনের ৪০ বছর:
ঢাকা ক্লাবের ১০০ বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয় ফ্যাশন শো ‘স্বাধীনতা ও ফ্যাশনের ৪০ বছর’। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ।
সম্প্রতি ঢাকা ক্লাবের ১০০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে এক বর্ণিল ফ্যাশন শো-র মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করা হয় ‘স্বাধীনতা ও ফ্যাশনের ৪০ বছর’। রিলাস ফ্যাশন বুটিক-এর সৌজন্যে এবং মানতাশা মুহিতের নের্তৃত্বে লুনার কোরিওগ্রাফিতে র্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন দেশের প্রখ্যাত র্যাম্প মডেলরা।
ডিডিএসও`র ফ্যাশন শো:
বাংলাদেশের এতিম শিশুদের সাহার্য্যার্থে তহবিল উন্নয়নের লক্ষ্যে ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিডিএসও) এর আয়োজনে ৩১শে জানুয়ারী মাল্টিন্যাশানাল ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিভার্সিটির কমনওয়েলথ বলরুমে সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ফ্যাশন শো চলে। এই মহতি আয়োজনকে সফল করতে প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি ডিডিএসও নেতৃবৃন্দকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করেন।