প্রজাপতিটা যখন তখন... সত্যি, এই গানটির মতো ঠিক প্রজাপতিটা আপনার চারপাশে ঘুরে বেড়াবে। আর প্রজাপ্রতিটা ঘুরে আসার সাথে সাথে সেই প্রজাপতির রাজ্যে আপনিও প্রজাপতির মতো ডানা মেলে ঘুরে আসতে পারেন।
চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিন পতেঙ্গায় অবস্থিত এই প্রজাপতি পার্ক। ব্যস্ততার যান্ত্রিক নগরী থেকে একটু স্বস্তির নিশ্বা:স পেতে পরিবার-পরিজন নিয়ে এই প্রকৃতির সানিধ্যে বিচরণ করে আসতে পারেন।
অনেকটা নিরবে এই পার্কটির যাত্রা শুরু হয় গত পহেলা বৈশাখ। থাইল্যান্ড, মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর ও চায়না’য় প্রজাপতি পার্ক থাকলেও দক্ষিন এশিয়ায় এই প্রথম ইনট্রেকো গ্র“প বাংলাদেশে ৬ একর জায়গার ওপর প্রজাপতি পার্ক গড়ে তুলেছে। এই পার্কে প্রতিদিন ৩ শতাধিক দর্শনার্থী এই পার্কটি দেখতে আসে, আসে বিদেশী দর্শনার্থীরাও।
একটি মিউজিয়াম, একটি রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, ওয়াটার রাইড, কৃত্রিম ঝর্না, বর্নিল ফুলের বাগান আর সেই বাগানে প্রজাপতির মেলা সব মিলিয়ে বিনোদন উপভোগের অপূর্ব সমম্বয় আছে পার্কটিতে। মাত্র একশ টাকায় টিকিট কেটে ঘুরে আসা যাবে পার্কটিতে।
এখানে ঘুরতে এসে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রিয়াংকা বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশে ঠিক আগের মতো রং-বেরংয়ের প্রজাপতি দেখা যায়না, এখানে গবেষনাগারটি পূর্ন র“পে চালু করা হলে দেশে প্রজাপতির বিস্তারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
দেশে বনভূমি কমে আসায় প্রজাপতির প্রজনন কমে আসছে আর প্রজনন বাড়াতে এই পার্কটি আগামীতে আরও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। প্রজাপতি নিয়ে দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা গবেষনা করতে পারবে। আর এই গবেষনার বিষয়টি এগিয়ে নিতে এর পেছনে কাজ করছে দেশের প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ প্রফেসার শফিক হায়দার চৌধুরিসহ দেশর দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। দেশে প্রজাপতির ৬শ প্রজাতি থাকলেও এই পার্কেও মিউজিয়ামে ২শ প্রজাপতি সংরক্ষণ করা হয়েছে।
এই ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা সাগর বাংলানিউজকে বলেন, ব্যবসায়িক উদ্দ্যেশ্যে নয়, জীব-বৈচিত্র সংরক্ষন করতে পারছি সেটাই আমাদের জন্য বড় কথা।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে আরো জানান, প্রজাপতি সংরক্ষন ও রক্ষার জন্য ব্যাপক প্রচারনা চালাতে আগামীতে প্রজাপতির লোগো সম্বলিত বিভিন্ন পন্য বিক্রি করা হবে এবং ব্যাপক পরিসরে কাজ শুর“ করতে আরও দুই একর জায়গার ওপর পার্কটি বর্ধিত করা হবে ।
দেশে দিন দিন বনভূমি কমে আসার কারনে জীব-বৈচিত্র আজ হুমকির মুখে। দেশ থেকে হারিয়ে যা”েছ বিভিন্ন জীব-বৈচিত্র। আর এই প্রতিষ্ঠানটির মতো দেশের অন্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান জীব-বৈচিত্র সংরক্ষনে এগিয়ে আসলে একদিকে দেশের জীব-বৈচিত্র সংরক্ষন অন্যদিকে ব্যবসায়িক ভাবে লাভবান হতো এমন মত বিশেষজ্ঞদের।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো: মনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রজাপতি নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, প্রানীবিদ্যা বিভাগ আয়োজিত গতবারের প্রজাপতি মেলায় ইনট্রেকো গ্রুপ আর্থিক সহযোগিতা করেছে এবং প্রণীজগতের এই প্রজাপতিসহ অন্যান্য বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় সহযোগিতা এবং একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।