ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

নারীদের ঘর থেকে বের হতে হবে

ইমরান আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১২
নারীদের ঘর থেকে বের হতে হবে

“নারীদের ঘর থেকে বেরুনোর সময় হয়েছে। এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই।

প্রত্যেকটি নারীর নিজেদের প্রয়োজনে চাবরি, ব্যবসা বাণিজ্যসহ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে”।

বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেন নারী উদ্যোক্তা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পারু জামান। অনেকটা সখের বসে বুটিক ব্যবসা শুরু করা পারু জামান ব্যবসা বাণিজ্যে এগিয়েছেন অনেক দূর। ব্যবসা বাণিজ্যের সুবাদে পৃথিবীর বহুদেশও ঘুরেছেন। নিজের চাওয়া পাওয়ায় পূরণ হয়েছে। এখন মানুষের উপকার করতে পারাকে সবচেয়ে বড় মনে করেন তিনি।

পারু জামান ধানমন্ডি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করার পর ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় থেকে বাংলায় মাষ্টার্স করেন। ১৯৯৩ সালে বিয়ের পর অনেকটা সখের বসেই তিনি শুরু করেন বুটিক ব্যবসা। ধানমন্ডিতে একটি শোরুম দিয়ে তার নাম দেন ‘প্রত্যাশা’ বুটি হাউজ। এই নাম দেয়ার পেছনে কারন হিসেবে তিনি বলেন, মানুষ অনেক আশা নিয়েই দোকানে আসবে। তাই তিনি শোরুমের নাম দেন ‘প্রত্যাশা’।   বুটিকের ব্যবসা সেই সময় শুরু দিকে হওয়ায় ব্যবসায় দ্রুত লাভ আসতে থাকে। পরিবারের সহযোগীতা ও ব্যবসা ভালো হওয়ার পাকিস্তান ও ভারত থেকে থ্রিপিস আনা শুরু করেন। এসব থ্রিপিসে কাজ করার পর সেগুলোর চাহিদা বাড়ে। এ কারণে ক্রমেই ব্যবসাও ভালো হতে থাকে। ৬ জন কর্মচারী দিয়ে শুরু করা বুটিক হাউজে কর্মচারী খুব দ্রুত ছাড়িয়ে যায় অর্ধশতাধিকে।

এর মধ্যে প্রায় বাংলাদেশে বুটিকের উপর সবাই ঝুঁকে পড়ে। দিন দিন বুটিক ব্যবসা বাড়ায় একদিকে যেমন তিনি গর্ব করতে থাকেন তেমনি ব্যবসা পরিবর্তনের দিকে মনোযোগী হন। অবশেষে ব্যবসা পরিবর্তন ও করেন। প্রথমবারে মেয়েদের পোশাকের ব্যবসা শুরু করলেও পরে ছেলেদের পোশাকের নিয়েও কাজ করেন। ছোট বেলা থেকে ফ্যাশনের প্রতি ঝোঁক থাকায় দিনে দিনে তিনি ব্যবসার পরিধি বাড়াতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় ছেলেদের জন্য দেশের বাইরের বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশনেবল প্যান্ট, শার্ট, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি এনে বসুন্ধারা শপিং মলে ‘ব্যাঙ্ক” নামের এক শোরুম দেন।

পোশাকের পাশাপাশি রাব্বি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসাও শুরু করেন পারু জামান। সব মিলিয়ে গত প্রায় দুই দশক ধরে ব্যবসা বাণিজ্যে তিনি অনেকদূর এগিয়েছেন।

পারু জামান ব্যবসার বাণিজ্যের মহিলাদের সংগঠন ওয়েবের সদস্য, পাশাপাশি গুলশান ক্লাব এবং জেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ক্লাবের সদস্য।

পারু জামান বলেন, আমার এই পথচলায় পারিবারিকভাবে ব্যাপক সহযোগীতা পেয়েছি। তারপরও যদি চিন্তা করতাম মেয়ে মানুষ হয়ে আমি কীভাবে এগুবো তাহলে আমি এতদূর আসতে পারতাম না। আমি মনে করি প্রতিটি নারীরই এখন আত্মনির্ভরশীলতার জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ। ঘরমুখো মেয়েরা পরনির্ভরশীলতার কারণে তাদের পদে পদে নির্যাতন সহ্য করতে হয়। কিন্তু নিজের পায়ে দাড়ালে সেটি আর কখনো হবে না।

তিনি বলেন, পুরুষ শুধু কাজ করবে, মহিলারা করবে না এ চিন্তা ধারাও থাকা উচিৎ না। কেননা পুরুষ মহিলা এক সঙ্গে কাজ করলেই তো দেশের উন্নয়ন। দেশের এক বিশাল জনগোষ্ঠীকে কাজের বাইরে রেখে আমরা দেশের সমষ্টিগত উন্নয়নের কথা চিন্তা করতে পারি। তিনি বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে মহিলা পুরুষ সমানতালে কাজ করে। তাই তারা উন্নত।

তিনি বলেন, বর্তমানে মেয়েরা এগিয়ে আসছে। এটি ভালো দিক। ভবিষ্যতে মেয়েরা আরো এগিয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা তার।

পারু জামান বলেন, এখন মানুষের জন্য উপকার করতে পারলে নিজের ভালো লাগে। নিজের তো অনেক হয়েছে এখন যদি মানুষের কল্যানে কিছুটা অবদান রাখতে পারি সেটি আমার বড় পাওয়া।  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।