আমাদের বাঙালির অহংকার সুচিত্রা সেন চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তিনি অন্তরালে থেকেই পাড়ি দিলেন সেই অচেনা পথ।
প্রিয় নায়িকা সম্পর্কে বলতে গিয়ে গর্বে আর বেদনায় এক মিশ্র অনুভূতি জানালেন আমাদের বাঙালির আরেক কিংবদন্তী ডিজাইনার আন্তর্জাতিক মানের মডেল বিবি রাসেল।
প্রথমেই জানালেন তার দেখা সবচেয়ে সুন্দর বাঙালি নারী সুচিত্রা সেন। খুব ছোটবেলায় বিবির সৌভাগ্য হয় কলকাতার একটি স্টুডিওতে সুচিত্রা সেনের শুটিং দেখার।
সেই অল্প সময়ের দেখায় প্রিয় নায়িকার প্রতি তৈরি হওয়া ভালোলাগা, মুগ্ধতা যেন আজও ঘিরে রেখেছে বিবি রাসেলকে।
বিবির চোখে এতো বড় ফ্যাশন আইকন বাঙালির মধ্যে আর একজনও তৈরি হয়নি। কারণ সাদাকালো সিনেমাগুলোতেও নিজেকে সবচেয়ে সুন্দর আর আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করেছেন তিনি। কোন শাড়ি কীভাবে পরতে হবে তা সুচিত্রা জানতেন।
সাজ, পোশাক সবসময়ই ছিলো সময়ের চেয়েও এগিয়ে। শার্ট-প্যান্ট হোক বা সালোয়ার কামিজ, শাড়ি প্রতিটি পোশাকেই তিনি ছিলেন সাচ্ছন্দ্য। পছন্দের পোশাক নিয়ে বেশ গবেষণা করতেন সুচিত্রা সেন, এটা বোঝা যায় তার রুচিশীল নিত্য নতুন ডিজাইনের পোশাক দেখে।
অভিনয়ে চোখ, হাত ভুরু সবকিছুর ব্যবহার করেছেন তিনি। তাইতো তার সিনেমার প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি ১০০ বার দেখলেও দেখার সাধ মেটে না।
তার অভিনয় ছিলো অনন্য অসাধারণ। তাই তো যখনই সময় হয়েছে শাপমোচন, সাগরিকা, পথে হল দেরি, হারানো সুর, সাত-পাকে বাঁধা বার বার দেখেছেন বলে উল্লেখ করেন বিবি রাসেল। সবার মতো উত্তম-সুচিত্রা জুটিই তার প্রিয়।
বিবি রাসেলের কাছে সুচিত্রা সেন এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। যেখানে সবাই মিডিয়ায় নিজের প্রচার আশা করে, ভক্তদের মাঝে আলোচনায় থাকতে চায়। তখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে থেকেও দীর্ঘ দিন সবার অগোচরে জীবন যাপন করে পৃথিবীতে সত্যি এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন তিনি। খুব স্ট্রং পারসোনালিটির কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন বিবি।
সুচিত্রা সেনের মেয়ে মুনমুন সেনের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে বিবি রাসেলের। সেই সুবাদে তিনি জেনেছেন সারা জীবন খুব সাধারণ জীবনযাপন করছেন এই অসাধারণ বাঙালি নায়িকা।
সবশেষে বিবি রাসেলের মতো আমরা শত কোটি সুচিত্রাভক্ত এই মহানায়িকার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।