জ্বর একটি সাধারণ অসুখ বলে অনেকেই ধারণা করে থাকেন। এই জ্বর অনেক সময় এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
বর্তমান সময়ে দেশের উত্তরে লালমনিরহাট জেলায় ভাইরাসবাহিত জ্বরের প্রকোপ চলছে। চিকিৎসকরা একে বলছেন এনকেফালাইটিস, যা মাথার ভেতরে প্রদাহের সৃষ্টি করে। আর এই জ্বরের জন্য নিপাহ নামের একটি ভাইরাস দায়ী বলে জানিয়েছেন সরকারের আইইডিসিআর। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রতিষেধক না থাকায় এই জেলাতেই মারা গেছেন প্রায় ২৫ জন।
১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার নিপাহ গ্রামে প্রথম এই ভাইরাস পাওয়া যায়, এ কারণেই এই ভাইরাসের নাম নিপাহ। পরে ১৯৯৯ সালে সিঙ্গাপুরে এই ভাইরাসের সংক্রামণ দেখা দেয়। সেই সময়ে ২৭৬ জন মানুষ মারা যায় বলে জানা যায়।
বাংলাদেশে এর সংক্রমণ নতুন নয়। মেহেরপুরে ২০০১ সালে, নওগাঁয় ২০০৩ সালে, রাজবাড়ি ও ফরিদপুরে ২০০৪ সালে, ঠাকুরগাঁও ও কুষ্টিয়ায় ২০০৭ সালে এ রোগ দেখা গেছে। এই ভাইরাস বাদুর বহন করে বলে সরকারি সূত্রে জানা যায়।
নিপাহ ভাইরাসজনিত জ্বরের উপসর্গ
১. এই জ্বরে রোগী তীব্র জ্বর এবং মাথাব্যথা অনুভব করে থাকেন।
২. রোগীর ঘাড় ও পিঠ শক্ত হয়, এবং আলো সহনশীলতা কমে যায়।
৩. এই সময় রোগীর খিঁচুনি হতে পারে।
৪. রোগীর মানসিক পরিবর্তন ঘটে, এই সময় প্রলাপ বকতে থাকে।
৫. রোগী অচেতন হয়ে যেতে পারে।
সতর্কতা
এই ভাইরাসের সংক্রমণে শতকরা ৭৫ ভাগ রোগীর মৃত্যু হতে পারে। তাই এই রোগের সংক্রমণ রোধ এবং ব্যাপক প্রাণহানি রোধ করতে আইইডিসিআর-এর পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় এবং আক্রান্ত মানুষের লালা, হাঁচি, কাশি থেকে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার।
১. বাদুর নিপাহ ভাইরাস বহন করে বিধায় কাঁচা খেজুরের রস পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. বাদুরে কাটা আংশিক ফল খাওয়া যাবে না।
৩. যত দ্রুত সম্ভব ভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে।
৪. রোগীর বিছানা আলাদা করে দিতে হবে। সেখানে বসা অথবা ঘুমানো যাবে না।
৫. রোগীর কফ এবং থুথু মাটিতে পুঁতে রাখতে হবে।
৬. রোগীর পরিচর্যাকারীকে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময় ১৭১৭, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১১