ঝুমা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে জিহাদকে বিয়ে করেছে। জিহাদের পরিবারও স্বচ্ছল, শিক্ষিত, সমাজে প্রতিষ্ঠিত।
কীভাবে এই সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে? যেমন, জিহাদ হয়ত ঝুমার জন্য একটা গিফট নিয়ে এলো। শালিনি এটা নিয়ে এমন মন্তব্য করে ফেলে যা ঝুমার ভালো লাগেনি। আবার ঝুমার জন্মদিনে খুব আগ্রহ নিয়ে শালিনি কেক থেকে শুরু করে উপহার কেনা, গেস্ট দাওয়াত করা, খাবারের ব্যবস্থা সব করেছে। কিন্তু কেক কাটার সময় শালিনিকে ডাকতেই ভুলে গেল ঝুমা। এবার বোঝেন অভিমানী শালিনির কী অবস্থা! আর এভাবেই দুজনের মধ্যে বাড়তে থাকে দূরত্ব।
আসলে বিয়ের পর বরের বোন থাকলে অনেক পরিবারেই সমস্যার শুরু হয় এই ননদ ভাবীর সম্পর্কের জটিলতা থেকে। আর এদের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকলে তার প্রভাব পড়ে নতুন বিবাহিত দম্পতির জীবনেও।
ননদ ভাবীর সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক রাখতে হলে সবাইকেই উদ্যোগী হতে হবে। কিছু বিষয়ে লক্ষ রাখলেই একে অপরের সঙ্গী হতে পারবেন:
দ্বিমত হলেও শান্ত থাকা: সব কথা বা কাজে সবার মত এক থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। যে কোনো বিষয়ে ননদের সঙ্গে দ্বিমত হতেই পারে। তাই বলে ননদের কথাকে বড় কোনো ইস্যু তৈরি করে অশান্তি করা ঠিক নয়। একই কথা ননদের জন্যও। ভাবীরও নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তিনি নিজের মতো ভাববেন আর তার সিদ্ধান্ত জানাবেন। যদি আপনার কথার বিপক্ষে চলে যায় তবে বিরুদ্ধে গিয়ে কটুক্তি করা বা আচরনে এমন কিছু প্রকাশ করা যা ভাবীর ব্যক্তিত্বে লাগে এমন কিছু করা যাবে না।
সরাসরি কথা বলা: কোনো সমস্যা হলে বা নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হলে ভাবী প্রথমেই বরের কাছে বা নিজের বাবার বাড়ির আত্মীয়দের কাছে ননদ সম্পর্কে কটুক্তি করবেন না। আর ননদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে, ভাবীও কিন্তু একটি পরিবারের আদরের মেয়ে। আপনাদের পরিবারে এসে সে সবার সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছে, কিছু ভুল তো হতেই পারে। এটা বড় করে না দেখে সরাসরি কথা বলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করুন।
বন্ধুত্ব: নিজেদের মাঝে বন্ধুত্ব তৈরি করুন। ননদের সঙ্গে সব কিছু শেয়ার করুন। তার কাছে পরামর্শ চান কীভাবে পরিবারের সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করবেন বা কোনো কাজ করতে গেলে তার সাহায্য চান। এভাবেই দেখবেন এক সময় দুজনের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ আর নির্ভতার সম্পর্ক গড়ে উঠবে।
একসঙ্গে সময় কাটানো: সময় পেলে ননদ ভাবী বেড়িয়ে পরুন। শপিং-এ, কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে বা আত্মীয় বন্ধুর বাড়িতে একসঙ্গে যান। বিকেলে চা খেতে খেতে বা রাতে টিভি দেখার সময়ও একসঙ্গে থাকুন। হয়তো ননদ পরীক্ষার পড়া নিয়ে ব্যস্ত তো ভাবীই চা নাস্তা নিয়ে চলে যান ননদের ঘরে।
মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে: কখনোই নিজের মতামত অন্যের ওপর চাপিয়ে দেবেন না। যদি ননদ কোনো বিষয়ে তার মতামত দেয় তবে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করুন। সে যেন ভাই ভাবীর সংসারেও নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।
পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে হলে নিজেদের সহ্য এবং ধৈর্য দুটোই বাড়াতে হবে। ননদ, বরেরও নিশ্চয় খুব আদরের বোন। আর বিয়ের পর ভাইয়ের কাছে ভাবীর গুরুত্ব কিন্তু অন্য অনেকের চেয়েই বেশি। তাই ননদ ভাবী নিজেদের স্বার্থেই বন্ধুত্ব গড়ে ভালো থাকুন।