নাবিলার ইদানিং ঘুমের খুব সমস্যা হচ্ছে। প্রতিরাতেই ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয় সে ঘুমাতে পারবে না।
আমাদের চারপাশে নাবিলার মতো অনেকেরই প্রথমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ সেবনের ফলে সে অভ্যেস আশক্তিতে রূপ নেয়। আর এটা হয় আমাদের অসচেতনতার কারণে। দীর্ঘদিন ঘুমের ওষুধ সেবনের ফলে আমাদের শরীরে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়:
• ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়
• ফুসফুসের ক্রিয়া দুর্বল হয়ে যায়
• শ্বাস নিতে কষ্ট হয়
• মানুষের বুদ্ধিমত্তা লোপ পেতে থাকে
• মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়া
• পেটে ব্যথা, হজমের সমস্যাসহ খাদ্যে অরুচি দেখা দেয়
• এছাড়াও হাত পা এবং বুক জ্বালা করে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, নিয়মিত ঘুমের ওষুধ সেবনের ফলে মানুষ দ্রুত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়।
আমাদের অনেকেরই ভাল ঘুম না হওয়ার সমস্যা রয়েছে। রাতে স্বাভাবিক পরিমাণে ঘুমের অভাবে মানসিক সমস্যা সৃষ্টির পাশাপাশি ডায়াবেটিসের মতো অসুখও শরীরের বাসা বাঁধতে পারে।
ঘুমের ওষুধ না খেয়েই রাতে নিয়মিত ঘুমের যা করবেন:
• বাইরে থেকে ফিরে গোসল সেরে নিন। সারা দিনের কান্তি এক নিমিষে চলে যাবে
• সন্ধ্যার পরই চা-কফি খাওয়া বন্ধ করে দিন
• ঘুমোতে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে টিভি, কম্পিউটার বন্ধ করুন
• পরের দিনের কাজের পরিকল্পনা আগেই করে ফেলুন, টেনশনে ঘুম নষ্ট হবে না
• ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন
• রাত ১০টা / ১১টার মধ্যেই ঘুমোতে যান। এ সময় বিছানায় গেলে ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে
• বিছানা আর শোবার ঘর যেন আরামদায়ক হয়। বেশি গরম বা বেশি ঠাণ্ডা যেন না হয় এবং সেখানে যেন বেশি শব্দ না হয়
• নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন। হাঁটা বা সাঁতার কাটা শরীরের জন্য ভাল
• প্রিয় জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখুন, সারাদিনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করুন
• চেষ্টা করুন দুশ্চিন্তা না করার
• সব ধরনের মাদক থেকে দূরে থাকুন
• যদি ঘুম না আসে, জোর করে ঘুমানোর চেষ্টা না করে উঠে বই পড়ুন, টিভি দেখুন অথবা পছন্দের গান শুনুন
• সুযোগ পেলেও দিনে বেশি সময় ঘুমাবেন না
• ঘরে বেশি আলো ঢুকে যেন ঘুমে ব্যাঘাত না ঘটায় তা নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনে ভারি পর্দা ব্যবহার করুন।
• শোবার ঘরটি অযথা একগাদা জিনিস দিয়ে ভরে রাখবেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলেন একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন অন্তত ৬ ঘণ্টা গভীর ঘুম হতে হবে। বন্ধুরা এতো কিছু করার পরও যদি ঘুমের সমস্যা না যায় তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।