আমাদের কাউকে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করতে হয়, কাউকে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় অথবা কাউকে প্রচুর ভ্রমণ করতে হয় আমরা প্রত্যেকেই কিন্তু এই রোগের ঝুঁকিতে রয়েছি।
যেহেতু, আমাদের অনেকেরই ডেস্কে বসে কাজ করতে হয়, তাই ডেস্ক ওয়ার্কারদের মাসকিউলোস্কেলিটাল ডিজিজের(বাত ব্যথা) কারণ ও প্রতিকার নিয়ে আমরা জানবো।
সকল সমস্যার প্রতিকার নিয়ে সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড হেলথ প্রমোশন (সি ডি পি এইচ পি)এর পরামর্শ:
ডেস্ক ওয়ার্কারদের মাঝে মাসকিউলোস্কেলিটাল ডিজিজ শুরু হয়ে থাকে। এগুলো হলো-
কাজের সময় শরীরের পসচার(অঙ্গভঙ্গি) সঠিক না থাকার ফলে শরীরের কোনো কোনো অংশে চাপ বেড়ে গিয়ে ব্যথা শুরু হতে পারে। যেমন- মেরুদণ্ড কুঁজো করে বসার অভ্যাসে ইন্টারভার্টিব্র্যাল ডিস্ক এর চাপ বেড়ে কোমর ব্যথা, দীর্ঘ সময় সামনে ঝুঁকে ল্যাপটপে কাজ করার কারণে ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে।
কাজের সময় সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার না করার ফলে শরীরের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়া। যেমন- ডেস্কের নিচের ড্রয়ার থেকে বার কাত হয়ে অথবা ঝুঁকে প্রয়োজনীয় ফাইল বের করা, ঝুঁকে ভারি কোনো বস্তু ওঠানো ইত্যাদি।
অনেক সময় কর্মক্ষেত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির নকশাগত ত্রুটির জন্যও আমাদের শরীরে চাপ ও আঘাত আসে, এজন্য মাসকিউলোস্কেলিটাল ডিজিজ শুরু হয়। যেমন- চেয়ার-টেবিল এর ত্রুটির কারণে মেরুদণ্ডের সমস্যা হতে পারে।
আসলে কাজের সময় আমাদের সঠিক অঙ্গবিন্যাস খুব সহজ একটা পদ্ধতি যা আমাদের শরিরের অনেক অঙ্গকে ভালো রাখে। একই সঙ্গে এটা আমাদের স্মার্ট দেখানোর জন্য দরকার। একটু খেয়াল করলেই আমরা দেখতে পাব আমাদের মাঝে যারা কুঁজো হয়ে বসে অথবা দাঁড়িয়ে কাজ করে তাদের আর যাই হোক স্মার্ট দেখায় না। সঠিক অঙ্গবিন্যাস আমাদের দেহের মাংসপেশী, হাড় ও মেরুদণ্ড সুস্থ রাখতে ও সঠিকভাবে কাজ করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ভুল অঙ্গবিন্যাসে কাজ করার ফলে আমাদের দেহের মাংসপেশী, হাড় ও মেরুদণ্ডের ক্ষতির কারণে আমাদের পারিবারিক, সামাজিক ও কর্মক্ষেত্রে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে কাজের ফলাফল ভালো হচ্ছে না, সময়মত শেষ হচ্ছে না, অসুস্থতার জন্য কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতির হার বেড়ে যাচ্ছে, কর্মীরা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে, অফিস এবং কর্মী উভয়ই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেও হতে হচ্ছে।
সুস্থ থাকার জন্য তিনটি সহজ পদ্ধতি মানতে হবে:
একভাবে একই কাজ বেশি সময় না করা, ৩০ মিনিট পর-পর ৩০ সেকেন্ডের জন্য হলেও অঙ্গবিন্যাসের পরিবরতন করা এবং ২/৩ ঘণ্টা পর ১০ মিনিটের বিরতি নেয়া।
সোজা হয়ে বসে অথবা দাঁড়িয়ে কাজ করা, সামনে ঝুঁকে কাজ করার অভ্যাস পরিবর্তন করা। প্রাথমিকভাবে খেয়াল রাখতে হবে বসলে যেন কান, কাঁধ ও হিপ জয়েন্ট যেন একটি সমান রেখা বরাবর থাকে এবং দাঁড়িয়ে থাকলে কান, কাঁধ, হিপ জয়েন্ট, হাঁটু ও পায়ের গোড়ালি যেন একটি সমান রেখা বরাবর থাকে।
প্রতহিক স্বাভাবিক ব্যায়াম করার অভ্যাস করা, বিশেষভাবে মাংসপেশীর স্ট্রেচিং করা।
শাপিন ইবনে সাঈদ
ফিজিওথেরাপিস্ট
01712796699