এসো গো শারদলক্ষী, তোমার শুভ্র মেঘের রথে,
এসো নির্মল নীলপথে,
এসো ধৌত শ্যামল আলো-ঝলমল বনগিরিপর্বতে-
রূপসী বাংলায় শরতের মনোহর রূপে মুগ্ধ হয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এভাবেই শরতকে স্বাগত জানিয়েছেন। শরতের এমন মনোহর রূপ শুধু বাংলাতেই দেখা যায়।
কবিগুরু শরতকে বরাবরই দেখেছেন শান্তি, মঙ্গল ও সমৃদ্ধির ঋতু হিসেবে। শরৎ যেন নিয়ে আসে তারুণ্যের বার্তা। প্রকৃতি সাজে নতুন রূপে। বর্ষা শেষে চারদিকে অপার সবুজের মাঝে সাদা কাশফুল নিয়ে আসে আনন্দের বার্তা। তাই বাংলার মাটি ও মানুষ শরতকে বরণ করে নিয়েছে নিজস্ব সত্ত্বায়। শরৎ হয়ে উঠেছে সুখ, আনন্দ ও ঐশ্বর্যের প্রতীক।
শরতের শুভ্র নীলাকাশ আর আকাশের মেঘের সাদা ভেলার সঙ্গে পরিচিতি সবার। “শরতের অনাবিল ¯িœগ্ধতা ছড়িয়ে আছে সাহিত্যের প্রতিটি বর্ণে। সেই কালিদাস থেকে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শামসুর রাহমান সবারই প্রিয় ঋতুর তালিকায় শরৎ স্থান করে নিয়েছে রবীন্দ্রনাথতো শরৎ নিয়ে লিখেছেন একাধিক প্রবন্ধ, বলেছেন শরত মানুষের মনের কলুষতা দূর করে দেয়। মনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় শরতের হালকা মেঘের মতোই। তাই শরতের রঙ দিয়ে যদি আমরা জীবনকে রাঙাই তাহলে আমাদের জীবনও হয়ে উঠবে এমন শুভ্রতায়-¯িœগ্ধতায় ভরা। ” শরৎকে নিয়ে বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শৌমিত্র শেখর।
শরতের আশ্চর্য , আবেশময় রূপটি হচ্ছে জ্যোৎ¯œালোকিত শরতের রজনী। যারা শরতের এই অদ্ভুত রূপটি দেখেছেন তাদের বুঝি প্রকৃতির কাছ থেকে এর বেশি কোন সৌন্দর্য পাওয়ার আকাঙ্খা নেই। শরতের অন্যতম আরেকটি আকর্ষণ হল শিউলি ফুল। গল্প-উপন্যাসের কমলা ডাঁটার সাদা শিউলি যেনবা মিশে গেছে বাঙালির মনের মাধুর্য। শিউলির মৃদু মিষ্টি গন্ধের আকর্ষণ এড়িয়ে যাবে এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া ভার। শত ব্যস্ততার এই নাগারিক জীবনে শরতের টান অনুভব করার সময় কোথায়?
তবুও শরৎ এসে কড়া নাড়ে আমাদের দুয়ারে। শিউলি কুড়ানো দিনের মত করে হয়তো ঘটা করে শরৎ উদযাপন সম্ভব নয় এই ব্যস্ত জীবনে তারপরও কার না মন চায় প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে যেতে। স্বাগতম হে শরৎ।
শরতের বসনঃ এই সুরভী ছড়ানো শরতে কেমন হতে পারে আপনার পরনের পোশাকটি সে সম্পর্কে বলেছেন দেশিয় ফ্যাশন হাউস রঙের ডিজাইনার ও স্বত্তাধিকারী বিপ্লব সাহা। তিনি বলেন শরৎ নিয়ে আসে আনন্দের বার্তা। শরতের রঙে এই সময়ে রাঙিয়ে নিন নিজেকে। এ সময় প্রকৃতি জুড়েই যেনবা থাকে নীল সাদা আর সবুজের সমাহার তাই পোশাকেও আনতে পারেন এই রঙগুলো।