শীতকালীন র্যাশ
শীতকালে র্যাশ ত্বকের অন্যতম অসুখ। সাধারণত র্যাশ হলে ত্বকে আঁচের মতো হয়, ঘামাচির মতো হয়, অনেক সময় চর্বিযুক্ত (ফ্যাটি) টিস্যু জাতীয় কিছু স্পষ্ট হয় ত্বকে।
১। ফুলে যাওয়া
২। চুলকানি হওয়া
৩। লালচেভাব দেখা দেওয়া এবং
৪। দাগ হয়ে যাওয়া
এ র্যাশগুলো আপনার হাত, পা কিংবা বাহুতে হতে পারে। পুরো শরীরে খুব সহজে আক্রান্ত করে ফেলে এটি।
সঠিক যত্ন এবং পরিচর্যা না করলে আপনার র্যাশ সারাবছরই বিরক্ত করবে আপনাকে। কে-ই বা সেটি চায় বলুন? সেজন্যে আজকের আয়োজনে কয়েকটি ঘরোয়া উপায় বলে দেওয়া হলো, যেন র্যাশ দূর করে সুস্থ ও সুন্দর ত্বক ধরে রাখতে পারেন।
অ্যাভোকাডো, কলা এবং পেঁপের পেস্ট
পেঁপেতে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে যার মাধ্যমে ত্বক নরম, কোমল এবং ময়েশ্চারাইজড থাকে। অ্যাভোকাডো এবং কলা ভিটামিন-ই এবং পটাশিয়ামে ভরপুর, যেটি ত্বকের লাবণ্য বজায় রাখে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
- একটি কলা ছিলে ফেলুন এবং পেঁপে ও অ্যাভোকাডোর সঙ্গে মেশান। মিহি করে মিশ্রণ তৈরি করুন।
- পুরো মুখে ভালো করে লাগিয়ে ফেলুন।
- পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং ভাল ফলাফল পেতে সপ্তাহে দু’দিন ব্যবহার করুন।
শশা
শশা পুষ্টিগত গুণে পরিপূর্ণ একটি সবজি। এটির ঠাণ্ডা এবং শান্তিদায়ক গুণাগুণ আছে যেটি ঘামাচি, প্রদাহ এবং র্যাশ কমিয়ে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
- সম্পূর্ণ শশা নিন একটি।
- ভালোমত খোসা ছাড়িয়ে মিহি পেস্টে রুপান্তর করুন।
- সারা মুখে ভালোমতন লাগিয়ে ত্রিশ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
তেল
তেল মুখের ত্বককে সুরক্ষিত রেখে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
-জলপাই তেল, নারিকেল তেল কিংবা বাদাম তেল ব্যবহার করতে পারেন।
-গোসলের পর কিংবা রূপচর্চা রুটিনের একদম শেষ ধাপে মুখে এবং শরীরে আলতোভাবে মালিশ করুন।
-আপনি চাইলে ব্যবহারের পূর্বে তেল হালকা গরম করে নিতে পারেন।
ওটমিল
ওটমিলে আছে ভিটামিন-ই যেটি ত্বককে কোমল ও মোলায়েম রাখে এবং প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবেও কাজ করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
- এক কাপ ওটমিল ব্লেন্ডারে ভালোমত ব্লেন্ড করুন এবং মিহি গুঁড়ো তৈরি করুন।
- এতে পানি যোগ করুন মিশ্রণ বানানোর জন্যে।
- ত্বকের বিভিন্ন স্থানে এটি লাগিয়ে ফেলুন।
- পরিষ্কার একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন এবং ত্রিশ মিনিট রেখে দিন।
- পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন।
- প্রতিদিন এই কৌশলটি অবলম্বন করতে পারেন শীতকালীন র্যাশ প্রতিরোধ করতে।
দুধের সর
দুধের সরে ল্যাকটিক এসিড আছে যেটি ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে আপনার ত্বক নরম ও স্বচ্ছ হয়ে ওঠে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
- একটি পাত্রে দুধের সর নিন এবং কলা চটকে তার সঙ্গে মেশান।
- মুখে লাগিয়ে নিন এবং ত্রিশ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মধু
মধু একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এর মধ্যে অন্তর্গত আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন
- ২-৩ টেবিল চামচ মধু তাপ দিন।
- আক্রান্ত স্থানে লাগান।
- ১৫-২০ মিনিট রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধিয়ে ফেলুন।
কয়েকটি বোনাস টিপস
১। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে কিসমিস, কাজু বাদাম এবং কাঠবাদাম রাখুন। এটি ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধে সহায়তা করবে।
২। গরম পানিতে গোসলের অভ্যাস বাদ দিন এবং সুগন্ধীহীন সাবান ব্যবহার করুন।
৩। সুতির কাপড় পরিধান করুন।
৪। শীতকালে প্রতিবার বাইরে যাবার সময় গ্লোভস পরার অভ্যাস করুন।
৫। উপরোক্ত যাবতীয় কৌশল অনুসরণ করার পরেও র্যাশ দূর না হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৭
বিএটি/এইচএ/