ঢাকা শহরের বৈচিত্র দিনকে দিন বেড়ে যাচ্ছে, এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। নতুন নতুন জিনিসের সাথে প্রতিনিয়ত পরিচিত হতে হচ্ছে আমাদের।
এই পরিচিতি পর্ব অনেক সময় আমাদের আনন্দ দেয় আবার অনেক সময় মানুষের নৈতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
মানুষ কি করে আরেকজন মানুষকে অন্ধকার জগতের বাসিন্দা হতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। একজন মানুষকে ক্রমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে ব্যবসা করার প্রবৃত্তি কি করে মানুষের মনে আসতে পারে? এরকম কতই প্রশ্ন মনে উঁকি ঝুঁকি দেয়। নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি তীব্র আকর্ষন কাজ করে যুবকদের মধ্যে। আর এটাই ট্রামকার্ড হিসাবে কাজে লাগায় একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী।
রাজধানীর স্কুল কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে জমজমাট হয়ে উঠেছে শিশা লাউঞ্জের ব্যবসা। এটি গত ৩/৪ বছরের মধ্যে শহরের আনাচে কানাচে ব্যাপকভাবে মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীদের টার্গেট যেহেতু যুবশ্রেণী তাই তারা ব্যবসাক্ষেত্র নির্বাচন করেন শিক্ষাকেন্দ্রগুলোর আশেপাশে। চাইনিজ রেন্টুরেন্টের চেয়েও অন্ধকার লাউঞ্জগুলোতে থাকে আলো আঁধারির খেলা। হুট করে ঢুকলে ধাতস্থ হতে সময় লেগে যায়। ধোঁয়াটে বাতাসে নিঃশ্বাস আটকে আসে। সেখানে অবাধে কমবয়সী ছেলেমেয়েরা সুগন্ধি ঠান্ডা ধোঁয়া নিচ্ছে। একবার দুইবার করে করে তারা আকৃষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই অবাঞ্চিত নেশায়।
শিশাতে কোন মাদক থাকেনা বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা শিশা গ্রহণকে হালের ফ্যাশন অনুসঙ্গ বলে ধারণা তৈরি করাচ্ছেন সবার ভেতরে। শীশাতে বিভিন্ন স্বাদের যেমন:- স্ট্রবেরী,চকলেট,নারকেল এবং গোলাপের সুগন্ধীযুক্ত ধোঁয়া থাকে। পছন্দ অনুযায়ী ধোঁয়া হুক্কা আকারে টেনে পাকস্থলী পূর্ণ করছেন লাউঞ্জের নির্দিষ্ট শ্রেণীর গ্রাহকরা। অথচ সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক সংবাদে বলা হয়, পূর্ন এক সেশনের শিশা গ্রহন এক প্যাকেট সিগারেট গ্রহনের মতই মারাত্মক।
যে কোন ব্যবসার জন্যে সরকারি অনুমোদন অবশ্যই জরুরি একটা বিষয়। সমাজের অধঃপতনের বিষয়টি বিবেচনা করে তরুণ সমাজের জন্য ক্ষতিকর কোনো দ্রব্য যেন আমাদের অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে ছাড় পেয়ে না যায়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
আমরা আমাদের লাইফস্টাইলকে জমকালো সুন্দর করে সাজিয়ে নিতে চাই। তবে অবশ্যই সব ধরনের বিকৃত ফ্যাশন দূরে রেখে।