আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া কোনো কিছুই আইনের বাইরে নয়।
মৌলিক অধিকার
অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা এই পাঁচটিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করে আমরা প্রায়শই ভুল করি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে উল্লেখিত পাঁচটি বিষয়কে ‘জীবনধারণের মৌলিক উপকরণ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। অথচ মৌলিক অধিকার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে সংবিধানের তৃতীয় ভাগে ২৬- ৪৭ ক অনুচ্ছেদে। ২৭-৪৪ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ১৮টি মৌলিক অধিকার হলো- আইনের দৃষ্টিতে সমতা; ধর্ম-গোষ্ঠী-বর্ণ, জন্মস্থান বা নারী-পুরুষভেদে বৈষম্যের শিকার না হওয়া; সরকারি নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতা; বিদেশি খেতাব প্রভৃতি গ্রহণের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা; আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার; জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার; গ্রেপ্তার ও আটক সর্ম্পকে রক্ষণ; জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধকরণ; বিচার ও দণ্ড সর্ম্পকে রক্ষণ; চলাফেরার স্বাধীনতা; সমাবেশের স্বাধীনতা; সংগঠনের স্বাধীনতা; চিন্তা, বিবেক ও কথা বলার স্বাধীনতা; পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা; ধর্মীয় স্বাধীনতা; সম্পত্তির অধিকার; গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ এবং মৌলিক অধিকার বলবৎকরণের অধিকার।
যে কোন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদে দেওয়া অধিকারবলে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে মৌলিক অধিকার আদায় করার জন্য ‘রীট পিটিশন’ দায়ের করতে পারেন এবং হাইকোর্ট বিভাগ ১০২ অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ জারি করতে পারেন।
মুসলিম বিয়ে রেজিস্ট্রেশন
মুসলিম বিয়ে ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন ১৯৭৪ এর ৩ ধারায় বলা হয়েছে ‘অন্য যে কোন আইন, রেওয়াজ বা প্রথায় যাহাই থাকুক না কেন মুসলিম আইন অনুযায়ী সম্পন্ন প্রতিটি বিয়ে এ আইনের বিধান অনুসারে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে’।
এই রেজিস্ট্রেশন করার জন্য যে ফি প্রদান করতে হয় তার যথাযথ হিসাব না জানার কারণে অনেক সময় বিয়ের সময় ঝামেলা হয়। রেজিস্ট্রেশন ফি হিসাব করা হয় বিয়েতে নির্ধারিত দেনমোহরের উপর। দেনমোহর যতই নির্ধারিত হোক না কেন এর জন্য সর্বোচ্চ রেজিস্ট্রেশন ফি হচ্ছে চার হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ফি পঞ্চাশ টাকা। দেনমোহরের প্রতি হাজারের জন্য ফি প্রদান করতে হয় ১০ টাকা।
এই ফি বর বা বর পক্ষকে পরিশোধ করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেওয়ার পর কাজীর কাছ থেকে একটি প্রাপ্তি রশিদ বুঝে নেওয়া উচিত।
বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না করা এই আইনের ৫(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যার জন্য তিন মাস পর্যন্ত বিনা শ্রম কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডই হতে পারে।
স্ত্রীর তালাকে দেনমোহর
মুসলিম আইনে তালাক প্রদানের ক্ষেত্রে স্ত্রীর চেয়ে স্বামীর ক্ষমতা বেশি। নারীরা এ ক্ষেত্রে সীমিত ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। কিন্তু স্ত্রী স্বমীকে তালাক দিলে দেনমোহর পায় না বলে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে।
তবে স্বামী যদি স্ত্রীকে নিয়ে ঘর সংসার করতে চাইলেও স্ত্রী তার প্রাপ্য দেনমোহর ছেড়ে দেওয়ার শর্তে তালাক চায়, সেক্ষেত্রে দেনমোহর পাবে না।
সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী
মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে বাবার মৃত্যুর আগে তার কোনও ছেলের বা মেয়ের মৃত্যু ঘটলে এবং ওই ছেলের বা কন্যার যদি কোনও সন্তান থাকে তাহলে সেই সন্তান দাদার সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী হবেন। অনেক সময় দেখা যায় গ্রাম্য সালিশীতে এ বিষয়ে ভুল সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ৪ ধারা প্রতিনিধিত্বের নীতি প্রবর্তন করে দাদার সম্পত্তিতে নাতি- নাতনীর সম্পত্তি লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
বৌ রেখে শালি বিয়ে
মুসলিম আইন অনুসারে প্রথম বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় সহোদর বোনকে বিয়ে করলে দ্বিতীয় বিয়েটি অনিয়মিত হবে। অনিয়মিত বিয়ের আইনগত ফলাফল হচ্ছে, স্বামী এবং দ্বিতীয় স্ত্রী পরস্পরের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারী হবেন না। স্বামী যদি প্রথম স্ত্রী অর্থাৎ বড় বোনকে তালাক দেন অথবা বড় বোন যদি মৃত্যুবরণ করেন তাহলে দ্বিতীয় বিয়েটি নিয়মিত বিয়েতে পরিগণিত হবে।
এফআইআর
এজাহার বা প্রাথমিক তথ্য বিবরণী বা এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) মামলা-মোকদ্দমায় বহুল ব্যবহৃত শব্দ হিসেবে আমরা জানি। ফৌজদারী কাবিধির ১৫৪ ধারায় বলা আছে- এজাহারের জন্য যে অপরাধের সংবাদ থানায় দেওয়া হয় তা অবশ্যই আমলযোগ্য অপরাধ (যে অপরাধের ভিত্তিতে পরোয়ানা ছাড়াই একজন পুলিশ কর্মকর্তা কোনও অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারেন) হতে হবে।
এজাহার মৌখিক বা লিখিত যে কোনভাবেই দায়ের করা যাবে। তবে মৌখিকভাবে হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তা লিখে নেবেন বা তার নির্দেশক্রমে তা লিখিত হবে এবং সংবাদদাতাকে তথ্যটি পড়ে শুনাতে হবে। তবে লিখিত বিবরণে এজাহারকারীর স্বাক্ষর অপরিহার্য।
এ উদ্দেশ্যে নির্ধারিত ফরমে রক্ষিত বইয়ে ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ লিপিবদ্ধ করতে হয়।
যে ব্যক্তি ঘটনার শিকার হয়েছেন তিনি কিংবা যিনি ঘটনাটি দেখেছেন বা শুনেছেন এমন যে কোনও ব্যক্তি থানায় এজাহার করতে পারেন। এর সূত্র ধরেই পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
পশুপালন আইন
অনেকে শখ করে বাড়িতে কুকুর পোষেণ। কুকুর যাতে মানুষকে কামড়াতে না পারে সে বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে কুকুরের মালিক বাধ্য। একইভাবে গরু, ঘোড়া, শুকর, বিড়ালসহ যে কোনও প্রাণী যারা পোষেণ তাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার পোষা প্রাণী অন্যের বিপদের কারণ না হয়। এ ক্ষেত্রে যে কোনও প্রকার অবহেলা দণ্ডবিধি অনুসারে অপরাধ।
দণ্ডবিধির ২৮৯ ধারা অনুসারে যে ব্যক্তি জ্ঞাতসারে বা অবহেলা করে তার পোষা প্রাণী দিয়ে অন্যের ক্ষতি করবে সেই ব্যক্তি প্রাণী সম্পর্কে তাচ্ছিল্যপূর্ণ আচরণের অপরাধে অপরাধী হবে। এ অপরাধের শাস্তি ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা এক হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।
মুদ্রা নকল
দণ্ডবিধির ২৩২ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রা নকল করা বা নকল করার কাজের সাঙ্গে যুক্ত থাকার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা যে কোনও বর্ণনার কারাদণ্ড যার মেয়াদ দশ বছর পর্যন্ত এবং অর্থদণ্ড হতে পারে। আর যে ব্যক্তি মুদ্রা নকল করার উদ্দেশ্যে বা মুদ্রা নকল করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে জেনে এ বিষয়ে উৎপাদনের জিনিসপত্র নিজ দখলে রাখে তার সর্বোচ্চ দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।
অন্যদিকে মুদ্রা নকল জেনে নিজের কাছে রাখা এবং পরে তা হস্তান্তর করাও অপরাধ। দণ্ডবিধির ২৪০ ধারা অনুযায়ী এই অপরাধের শাস্তি দশ বছরের জেল ও জরিমানা।
মৃত্যুতে নয়, বাঁচলে শাস্তি
আইন অনুসারে আত্মহত্যা একটি অপরাধ। দণ্ডবিধির ৩০৯ ধারায় রয়েছে- ‘যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে তার বিনাশ্রম কারাদণ্ড হবে। যার মেয়াদ এক বছর পর্যন্ত বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। ’
আবার আত্মহত্যায় সহায়তাকারী ব্যক্তিও আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী। যার শাস্তি ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক দশ বছর জেল এবং অর্থদণ্ড।
৫৪ ধারা
ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুসারে যে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ বা পরোয়ানা ছাড়া নিচের ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন: খুন, খুনের চেষ্টা, মারাত্মক আহত, ধর্ষণ, আত্মহত্যায় উৎসাহিত করা, সরকারকর্তৃক অপরাধী, পুলিশের কাজে বাধা, অবৈধ জিনিসপত্র রাখা ইত্যাদি আমলযোগ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি। এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত হিসেবে কারো বিরুদ্ধে যুক্তিসঙ্গত অভিযোগ করা হলে তাকেও পুলিশ বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তর করতে পারবে। এ ধরনের অপরাধ করেছে বলে কারো বিষয়ে পুলিশের যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ হলে সে ব্যক্তিকেও পুলিশ পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবে।
তবে পুলিশ যাতে এই ধারার অপব্যবহার না করতে পারে সেজন্য ‘যুক্তিসঙ্গত ও বিশ্বাসযোগ্যতার’ শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ছাড়াও গ্রেপ্তার
অনেকের ধারণা পুলিশই শুধু গ্রেপ্তার করতে পারে। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকও গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা রাখে। ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৯ ধারা অনুযায়ী এই ক্ষমতা একজন বেসরকারি বা সাধারণ নাগরিক কেবল তখনই এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেবেন যখন তিনি মনে করবেন কোনো ব্যক্তি জামিন অযোগ্য অপরাধ, আমলযোগ্য অপরাধ করেছে, সরকারকর্তৃক অপরাধী।
অবশ্য এক্ষেত্রে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা প্রয়োগকারী নাগরিকের কর্তব্য হলো যতশীঘ্র সম্ভব অপরাধীকে পুলিশ অফিসারের কাছে হস্তান্তর করা। যদি পুলিশ অফিসারকে না পাওয়া যায় তবে নিকটস্থ থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া।
ঘুষের শাস্তি
দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা অনুসারে কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক কোনি সরকারি কাজ বৈধ পারিশ্রমিক ছাড়া অন্যকোন রকম বখশিস নিয়ে করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বখশিস গ্রহণ বা গ্রহণে সম্মত বা গ্রহণের চেষ্টা করলে সেই কর্মকর্তা-কর্মচারী যে কোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যার মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত হতে পারে বা জরিমানা বা উভয়প্রকার দণ্ড হতে পারে।
নিজে না করে অন্য কাউকে দিয়ে কোনো কাজ করে দেওয়ার জন্য বখশিস গ্রহণও এই ধারা অনুসারে ঘুষের মধ্যে পড়ে। ঘুষ চাওয়া যেমন অপরাধ, তেমনি ঘুষ না দিলে বিপদ হবে এ ধরণের ধমক দেওয়াও ঘুষ নেওয়ার শামিল। আবার কাউকে ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাবও অপরাধ।
ইভ টিজিং
কোনো নারীর শালিনতার অমর্যাদা করার ইচ্ছায় কোনো মন্তব্য, অঙ্গভঙ্গি বা যে কোনো প্রকারের কাজই দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারা অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোন নারীকে দেখে শীষ দেয়া, গান গেয়ে উঠা, চোখ বাকা করে তাকানো, কৌতুক করা, হাসি- ঠাট্টা- বিদ্রুপ করা, মানহানিকর মন্তব্য করাসহ নারীর অমর্যাদার উদ্দেশ্যে করা যে কোন কাজই এ ধারায় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
এ ধারায় সে ব্যক্তি বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে। যার মেয়াদ এক বছর পর্যন্ত হতে পারে বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।
ধর্ষণ
দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় বলা আছে কোনো পুরুষ যদি নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ও সম্মতি ছাড়া, মৃত্যু বা আঘাতের ভয় দেখিয়ে সম্মতি আদায়, চৌদ্দ বছরের নিচে নারীর সঙ্গে যৌন সহবাস এবং কোন নারীকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আইনসঙ্গতভাবে বিবাহিত স্বামী বলে বিশ্বাস করিয়ে সম্মতি আদায় করে সঙ্গম করলে তা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন- ২০০০ এর ৩২ ধারা মতে ধর্ষিতা নারী ও শিশুর মেডিকেল পরীক্ষা ধর্ষণ সংঘটিত হওয়ার পর যত শীঘ্রই সম্ভব সম্পন্ন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক এতে অবহেলা করলে আদালত চিকিৎসকের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারবে।
আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত কমপক্ষে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ধর্ষণের অপরাধ সংঘটিত না হলেও শুধুমাত্র ধর্ষণের চেষ্টার জন্য সর্বোচ্চ দশ বছর কিন্তু কমপক্ষে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হবে।
শিশু অপরাধ
দণ্ডবিধির ৮২ ধারায় বলা হয়েছে সাত বছরের কম বয়স্ক শিশু দ্বারা কোনো কিছুই অপরাধ নয়। সাত বছরের নীচের বয়স্ক শিশুর ভাল-মন্দ বিচারের ক্ষমতা হয়নি এবং যার ভাল মন্দ বিচারের ক্ষমতা নেই সে যে কাজ করে তা না বুঝেই করে। আইনের দৃষ্টিতে অপরাধমূলক এমন কোনো কাজ উল্লেখিত বয়সের একটি শিশু করলেও তাকে সে কাজের জন্য অপরাধী বিবেচনা করা যাবে না। তবে ৮৩ ধারা অনুযায়ী সাত বছরের অধিক ও বারো বছরের কম বয়স্ক শিশুর কৃত কাজ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। যদি প্রমাণ করা যায় বারো বছরের কম বয়স্ক শিশুর জ্ঞানের অপরিপক্কতা রয়েছে তাহলে উক্ত বয়সসীমার কোনো শিশু দ্বারা কৃত কাজ আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।