আমরা জানি, কিডনি শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। আমাদের কিডনিতে মোট ২০ থেকে ২৫ লাখ ছাকনি রয়েছে, যা শরীরের রক্তকে পরিশোধন করে।
তবে সঠিক নিয়ম মেনে না চললে ও খাদ্যাভ্যাস যথাযথ না হলে, এমনকি ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের প্রভাবেও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। খাবারের নিয়ন্ত্রণের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে কিডনির সুস্থতা।
অ্যাপোলো হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরীর বলেন, ‘ভেজাল খাদ্য, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ, ঘন ঘন ইউরিন ইনফেকশন ছাড়াও আরও নানা কারণে আমাদের ঘরে ঘরে এখন কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিডনি রোগের চিকিৎসায় ডায়েটের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’।
জেনে নিন কিডনি ভালো রাখতে যেগুলো খাদ্য তালিকায় রাখবেন আর কোনগুলো বাদ দেবেন:
বাঁধাকপি
ফাইটোকেমিকেল সমৃদ্ধ বাঁধাকপিতে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি৬, ফলিক অ্যাসিড, ফাইবার ও অল্প পরিমাণে পটাশিয়াম, যা কিডনিকে সচল রাখে।
রসুন
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ রসুন শরীরের বিষ তাড়াতে সহায়তা করে এবং এর অ্যান্টি-ক্লটিং প্রপার্টিজ রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। তবে রান্না করা রসুনে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা ঠিক থাকলেও অ্যান্টি-ক্লটিং ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা কমে যায়। প্রতিদিন দুই থেকে তিন কোয়া কাঁচা রসুন খেলে কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়।
আপেল
উচ্চমানের ফাইবার ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ আপেল ফল হিসেবে কিডনির জন্য সবচেয়ে উপাকারী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ডিমের সাদা অংশ
ডিমের সাদা অংশে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড যা কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ কিডনি রোগীর জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিয়েটিনের মাত্রা, ইউরিন মাইক্রো এলবুমিনের মাত্রা, ইউরিয়া ও ইউরিক এসিডের মাত্রা, রোগীর ওজনের ওপর ভিত্তি করে প্রোটিনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।
পিউরিন ও উচ্চ পটাশিয়াম যুক্ত সবজি যেমন ফুলকপি, মটরশুটি, টমেটো, ঢেড়শ, কচুরলতি আরও বেশ কিছু সবজি নিষেধের তালিকায় থাকে।
কিডনি রোগীরা সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে দেড় লিটার পানি পান করতে পারেন। যা পানি, চা, দুধ সব মিলিয়ে হিসেব করতে হবে।
কিডনি রোগীর সোডিয়ামও নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা, ইডিমা এবং গ্রহণ করা ওষুধের ভিত্তিতে সাধারণত প্রতিদিন ২ থেকে ৫ গ্রাম লবণ গ্রহণ করতে পারেন। ১ চামচ সমান ৫ গ্রাম।
কিডনি বিকল প্রতিরোধের জন্য ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এছাড়া, রক্তশুন্যতা চিকিৎসার জন্য রক্তে বিভিন্ন লবণ ও উপাদানের সমতা রক্ষা করে শরীরে পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করলে কিডনি ভালো থাকবে।
কিডনির কোনো সমস্যা হলে অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৯
এসআইএস