ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

অনুপ্রেরণার নাম বেগম রোকেয়া 

শারমীনা ইসলাম, লাইফস্টাইল এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৯
অনুপ্রেরণার নাম বেগম রোকেয়া  বেগম রোকেয়া 

আজকের দিনে বাঙালি নারীর যে অবস্থান তৈরি হয়েছে, তার ভিত তৈরি করে গেছেন নারী জাগরণের অগ্রদূত ও নারী-অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পৃথিকৃৎ বেগম রোকেয়া।

বাস্তবে তো অনেক দূরের কথা, যখন বাঙালি নারীর স্বপ্ন বা চিন্তার স্বাধীনতাও ছিল না, তেমনি ‌একটা সময়ে অবরোধ প্রথার বিরুদ্ধে ও নারী মুক্তির-নারী স্বাধীনতার দাবি তুলে ধরেন মহিয়সী এই নারী। ১৮৮০ সালের ০৯ ডিসেম্বর খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রংপুরের পায়রাবন্দে জন্ম গ্রহণ করেন।

 


নারীদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে মাত্র পাঁচ জন ছাত্রী নিয়ে ১৯০৯ সালে তিনি ভাগলপুরে প্রথম রোকেয়া সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণবশত স্কুলটি বেশিদিন টেকেনি। পরবর্তীতে একবছর পর ১৯১১ সালে কলকাতায় পুনরায় একই নামে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন।  

নারী মুক্তির পথ তৈরি করতে তিনি বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে যোগ দেন ও তাদের এসব কাজে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান। এর ফলশ্রুতিতে ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠা পায় মুসলিম নারী বিষয়ক সংগঠন আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম। এই তহবিল থেকে অসহায়-দরিদ্র মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা হতো, অভাবী মেয়েরা সমিতির অর্থে শিক্ষালাভের সুযোগ পেতেন।

বেগম রোকেয়া সমাজের তখনকার অবরোধবাসী নারীদের অবস্থা তুলে ধরতে লেখালেখি শুরু করেন। তার লেখায় সমাজের কুসংস্কার ও অবরোধ প্রথার কুফল, নারী শিক্ষার প্রতি তার নিজস্ব মতামত, নারীদের প্রতি সামাজিক অনাচার ও অপমানের কথা উঠে আসে। তেমনি বাল্য-বিবাহ ও বহুবিবাহের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন তিনি।  


নারী শিক্ষার প্রসার, নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি এবং মুসলমান সমাজের অবরোধ প্রথার অবসান হবে এমনটাই স্বপ্ন দেখতেন বেগম রোকেয়া।  

১৯৩০ সালে বঙ্গীয় মুসলিম সম্মেলনে বেগম রোকেয়া বাংলা ভাষার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, শিক্ষা ছাড়া নারী জাতির মুক্তি সম্ভব নয়। তাই তিনি নারী শিক্ষা প্রসারে কাজ করেছেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। ১৯৩২ সালের ০৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
 

বেগম রোকেয়ার বিশেষ কিছু গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী ও মতিচুর। তার উল্লেখযোগ্য রচনা সুলতানার স্বপ্ন। মৃত্যুর আগে বেগম রোকেয়া একটি অসমাপ্ত প্রবন্ধ রেখে যান। এর নাম ‘নারীর অধিকার’।  

শত বছর আগে যে নারী কথা বলেছেন নারীর স্বাধীনতা-অধিকার নিয়ে, তার সেই কাঙ্ক্ষিত মুক্তির স্বাদ, সামাজিক-মানবিক অধিকার কি আজও আমরা বাঙালি নারীরা পেয়েছি? সময় হয়েছে ভেবে দেখার... বিশেষ এই দিনে বিনম্র শ্রদ্ধা বাঙালি নারীর মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা বেগম রোকেয়ার প্রতি।  


বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৯
এসআইএস


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।