আর কদিন পরেই ঈদ। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত নগরবাসী।
আসছে ঈদে ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন পণ্যের বিপুল সমাহার ঘটেছে রাজধানীর সর্ববৃহৎ শপিং মল বসুন্ধরা সিটিতে। পোশাক, গহনা, জুতা থেকে শুরু করে হাজার রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা ।
আসুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক এই ঈদে বসুন্ধরা শপিং মল আপনার জন্য কী কী পোশাক এনেছে।
শিশুদের পোশাক
মার্কেটের বিভিন্ন লেভেলে রয়েছে শিশুদের পোশাকের অসংখ্য দোকান । এসব দোকানে ক্রেতার চাহিদা এবং সামর্থ্যরে কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন দাম ও ডিজাইনের পোশাক তোলা হয়েছে।
ছেলে শিশুদের পোশাক বলতে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার শার্ট-প্যান্টের সেট । এক্ষেত্রে এবার সুতি কাপড়েরই প্রাধান্য। গ্রামীণ চেকের হাফহাতা শার্টের উপর নানা রকম স্ক্রিন প্রিন্ট, লেখা, কার্টুনের ছবি দিয়ে করা হয়েছে বিভিন্ন ডিজাইন । সাথে রয়েছে হাফ, ফুল অথবা থ্রি-কোয়ার্টার জিন্স বা গ্যাবাডিনের প্যান্ট ।
নিটের কাপড়ে স্ক্রিন প্রিন্ট করে তার সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে লেদার অথবা মোটা নিটের প্যান্ট । এসব পোশাকের দাম ৫৮০-১২০০ টাকা পর্যন্ত।
বিভিন্ন দোকানে স্থান পেয়েছে রঙবেরঙের শিশুদের পাঞ্জাবি-পাজামা। দেশি দশসহ দেশীয় বুটিক হাউসগুলোতে এসব পাঞ্জাবি পাওয়া যাবে। দাম পড়বে ৫৭০-১৩০০ টাকা পর্যন্ত । এসব বুটিক হাউসে শিশুদের বিভিন্ন শার্ট ও ফতুয়াও পাওয়া যাবে। দাম পড়বে ১৫৮-৫৫০ টাকা পর্যন্ত।
তাছাড়া রেক্সসহ অন্যান্য পোশাকের দোকানে শিশুদের বিভিন্ন ডিজাইনের টি-শার্ট ও পোলো শার্ট পাওয়া যাচ্ছে। দাম ৩৫০- ৬৫০ টাকার মধ্যে।
মেয়ে শিশুদের পোশাকের সংগ্রহ সেই তুলনায় অনেক বেশি। তাদের জন্য দোকানে দোকানে শোভা পাচ্ছে ঝলমলে, আকর্ষণীয় পোশাক। সুতি, সিল্ক, জর্জেট, নিট আরো অনেক ধরনের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এসব পোশাক। বাহারি এসব পোশাকের নামও বেশ বাহারি । কোনটার নাম ওয়াকা ওয়াকা আবার কোনটার নাম অক্টোপাস পল ।
নানা রঙের এসব পোশাকের মধ্যে প্রাধান্য পেয়েছে ফ্রক ও স্কার্ট। অতিরিক্ত সৌন্দর্যের জন্য আবার জুড়ে দেওয়া হয়েছে লেস, চুমকি, জরি আর নেটের কাজ। দাম পড়বে ৪৫০-৩৯০০ পর্যন্ত।
দেশীয় বুটিক হাউসগুলোতে আনা হয়েছে বাহারি নকশার থ্রি-পিস। দাম ৬৫০-৫৫০০ টাকা। স্কার্টের দাম পড়বে ৬৫০-১৬০০ টাকা।
তাছাড়া শাড়িও তৈরি করা হয়েছে ছোট্ট সোনামনিদের জন্য। সুতি এসব শাড়ির দাম পড়বে ৬৫০-১২০০ টাকা।
নারীদের পোশাক
বিভিন্ন শো-রুমে অসংখ্য ডিজাইনের থ্রি-পিস তোলা হয়েছে ঈদ উপলক্ষে। মাসাককলি, সানিয়া মির্জাসহ বিভিন্ন নামের এসব পোশাকে সিল্ক ও জর্জেট কাপড় প্রাধান্য পেয়েছে। জরি, চুমকি, লেস আর হাতের কাজের এসব পোশাকের দাম ২১০০-১২০০০ টাকা পর্যন্ত ।
এবারের ঈদে ফোরাল প্রিন্টের থানকাপড়ের চাহিদা খুব বেশি। সুতি, জর্জেট, টিস্যু আর লিলেনের এসব থান কাপড়ের দাম ২৫০ টাকা প্রতি গজ। কাতান ৪৫০ টাকা । এছাড়া আনস্টিচ থ্রি-পিস ৬৫০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। টিস্যু, জর্জেট, নেট ও হাতের কাজ করা ওড়নার দাম পড়বে ১৫০-৬৫০ টাকা।
দেশীয় বুটিকে সিল্ক, তসর, দুপিয়ান, খাদি আর কাতান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন থ্রি-পিস । সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে চুমকি, জরি, কাঠের পুতি, কড়ি আর সুতোর কাজ। দাম ধরা হয়েছে ৯৫০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত।
সুতির বিভিন্ন স্কার্টের সাথে বড় বড় চুমকি জুড়ে দিয়ে আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। দাম-৬৫০-২৫০০ টাকা ।
শুধু কামিজ বা ফতুয়ার দাম ৩৫০-৭৫০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
বিভিন্ন উপাদানের তৈরি থান কাপড়ের দাম পড়বে ১০০-১৫০০ টাকা প্রতি গজ।
ওড়না কেনা যাবে ১৫০-৬৫০ টাকার মধ্যে।
শাড়ির মধ্যে রয়েছে সুতি, তসর, সিল্ক, কোটা, কাতান, টিস্যু ও মটকা। তাঁতের সুতি শাড়ির দাম নকশা আর কাপড়ের ঘনত্বের ওপর নির্ভর করে ৫৮০-১৯০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তসর ১৫০০-৩৫০০ টাকা, সিল্ক ১৫০০-৬০০০ টাকা, কোটা ৯৫০-১৪০০ টাকা, কাতান ৩৪০০-৬৮০০ টাকা, টিস্যু ১৬০০-৫০০০ টাকা, মসলিন ১৫০০-৯৫০০ টাকা আর মটকার দাম পড়বে ১৩২০-৩৭০০ টাকা।
এসব শাড়িতে ব্লক, অ্যাপলিক, চুনরি ও কাঠের কাজ করা হয়েছে। রাজশাহী সিল্কের একরঙা শাড়িতে করা হয়েছে নকশি কাজ। অপেক্ষাকৃত সুন্দর এসব শাড়ির দাম ৯০০০-১৫০০০ টাকা পর্যন্ত।
ওয়েক্স টেক্স ও এক্সটাসির মতো পশ্চিমাধাঁচের পোশাকের দোকানগুলোও পিছিয়ে নেয় খুব একটা। এসব দোকানে প্রাধান্য পেয়েছে বিভিন্ন টি-শার্ট, ফতুয়া আর স্কার্ট । দাম ৮৯০-৪০০০ টাকা পর্যন্ত।
পুরুষদের পোশাক
ঈদ উপলক্ষে ছেলেদের প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবি-পাজামা। বিভিন্ন দোকানে তাই নিত্যনতুন পাঞ্জাবির আগমন বিশেষ লক্ষণীয়। সুতি, তসর, মটকা, অরগ্যান্ডি ও দুপিয়ান কাপড়ে বিভিন্ন হাতের কাজ করে তৈরি করা হয়েছে এসব বিশেষ পোশাক।
সুতি পাঞ্জাবীর দাম ৭৯০-১৮৭০ টাকা, তসর ১৪৯০-২৪০০ টাকা, মটকা ১৫৬০-২১০০ টাকা, আরগ্যান্ডি ২৫০০-৪৫০০ টাকা ও দুপিয়ান ১৩০০-২৫০০ টাকা। সিল্কের পাঞ্জাবির দাম ২৫০০-৪৫০০ টাকা এবং জিন্সের পাঞ্জাবির দাম ১২০০ টাকা।
বুটিকে পাওয়া যাবে নানা রঙ ও ডিজাইনের শার্ট-ফতুয়া । উপাদান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে সুতি, সিল্ক ও নেট । দাম ৫৫০-১৭০০ টাকা পর্যন্ত।
ওয়েক্স টেক্স, রিচম্যান ও রেক্সে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন কাপড়ের তৈরি শার্ট। দাম ৮৫০-২৫০০ টাকা।
টি-শার্ট ও পোলো শার্ট পাওয়া যাবে ৮৫০-২৫০০ টাকার মধ্যে।
জিন্সের প্যান্টের দাম পড়বে ৭৮০-৩৫০০ টাকা। গ্যাবাডিন ও কডের প্যান্টের দাম ৬৫০-১৫০০ টাকা।
এছাড়া শার্ট ও প্যান্টের জন্য পাওয়া যাচ্ছে থান কাপড় । প্রতি পিস শার্টের কাপড়ের দাম পড়বে ৬৫০- ১৮০০ টাকা এবং প্যান্টের কাপড়ের দাম ১২০০-২৫০০ টাকা।
পোশাকের বিপুল সমাহারের সাথে সাথে মার্কেট কর্তৃপক্ষ ক্রেতাদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করেছেন, বাড়িয়ে দিয়েছেন নিরাপত্তাকর্মীদের সংখ্যাও । মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাকাটা চললেও এখানে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ভয় নেই। তাছাড়া পোশাকের সাথে থাকছে আনুষঙ্গিক নানা পণ্য। তাই নিশ্চিন্ত মনে এখান থেকেই কিনে ফেলুন আপনার ঈদের সবকিছু। এছাড়া প্রতি বারের মতো এবারও থাকছে কেনাকাটার জন্য র্যাফল ড্র। প্রতি ২০০ টাকার কেনাকাটার জন্য পাবেন একটি করে কুপন। সৌভাগ্যবান হলে পেয়ে যেতে পারেন গাড়ি, মোটরসাইকেল, ফ্রিজ-টিভি-ল্যাপটপ, ফার্নিচারসহ আকর্ষণীয় ভিভিন্ন পুরস্কার।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় : ২৩০০, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১০