শাম্মী বলেন, ১৯৯৪ সালে প্রেম করে বিয়ে করে স্বামীর বাড়িতে আসা। রান্নার হাতেখড়ি হয়েছে আমার শাশুড়ির কাছ থেকে।
পুরোপুরি গৃহিনী যাকে বলে তাই ছিলাম। কিন্তু মনের মধ্যে সব সময়ে কিছু একটা করবার অজানা স্বপ্ন ছিল। কিন্তু নিজেও জানতাম না কি সেটা। আমাদের তিনটি সন্তান। বড় ছেলে এ বছর এ-লেভেল দেবে। মেয়েটা এবার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। ছোট ছেলের বয়স সাড়ে তিন বছর। স্বামী-সন্তান-সংসার এই ছিল জীবন।
২০১৬ তে আমাদের মেয়ের স্কুলে বাৎসরিক পিঠা উৎসব হয়। আমরা সেখানে যোগ দেই, বিক্রি ভালোই হয়। ২০১৭ ও ২০১৮-র পিঠা উৎসবেও অংশ নেই। এর ফলে একটা নেটওয়ার্ক তৈরি হয়। অনেকেই পিঠা নিতেন আমাদের কাছ থেকে। তারপর আমার স্বামী আমাকে বলেন, চলো একটা ফেসবুক পেজ খুলি এবং পিঠা বিক্রি করি।
আমি বললাম, তুমি টেকনিক্যাল দিকগুলো দেখলে আমি পারবো। শুরু করলাম আমাদের যাত্রা। ফেসবুকে পেজের নাম দেওয়া হলো “পিঠাশপ”। তখন অর্ডার আসত মাসে ৩/৪টি। ২০১৯ এর মাঝামাঝি এসে আমরা আমাদের ওয়েবসাইট তৈরি করি। আর বর্তমানে আমরা দিনে গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করছি।
আমরা স্বপ্ন দেখি “পিঠাশপ” হবে একটা ব্র্যান্ড। “পিঠাশপ” একটা স্টার্টআপ কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের নিজস্ব ডেলিভারি সিস্টেম থাকবে। ঢাকার বাইরে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সপ্তাহে একদিন আমাদের পিঠা যাবে এবং চিন্তা করছি ক্লাউড কিচেন পদ্ধতিতে আমাদের পিঠা দেশের বাইরেও বিক্রি হবে।
ব্যক্তিগত, কর্পোরেট, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের পিঠা সরবরাহ করি। আমাদের ফেসবুক পেজে আমাদের কাস্টমার বিশাল গল্প লিখে রিভিউ দেয় । আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডারের পরিমাণও বেড়েছে। গুণগত মান নিশ্চিত করতে আমরা আপসহীন। যা আমরা আমাদের সন্তানদের খেতে দেই সেরকম পণ্যই আমরা ক্রেতাকে সরবরাহ করে থাকি।
ধীরে ধীরে আমাদের জীবনের চাকা স্বচ্ছলতার দিকে ঘুরছে পিঠাশপের কল্যাণে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২০
এসআইএস