নওগাঁর মেয়ে আশরাফী মেরী জানালেন তার হতাশাকে পেছনে ফেলে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প। মেরী বলেন, আমার জীবনের গল্পটা আর সবার মতো হলে ও চিত্র টা কিন্তু আলাদা।
আর দশটা মেয়ের মতো একবুক স্বপ্ন নিয়ে ভালোবাসা দিয়ে ঘর বাঁধার জন্য গিয়েছিলাম ও বাড়িতে। বিয়ে মানে একটা মেয়ের কাছে একডালা স্বপ্ন, স্বপ্নগুলোকে বুনে সুন্দর করে ঘর সাজাবো নতুন একজন মানুষকে নিয়ে। জীবন শুরু করব ভালোবাসায় পরিপূর্ণ একটি সংসার তৈরি করব। এসব ভাবনা নিয়েই পা রাখি এক নতুন পরিবারে।
শ্বশুর বাড়িতে বিয়ের পরদিনই ভোরবেলা স্বপ্ন টা আমার ভেঙে যায়। স্বপ্ন টা দুঃস্বপ্ন হয়েই রয়ে যায় আজ পর্যন্ত। যেখানে বিয়ের পর নতুন সংসার, নতুন পরিবার আনন্দঘন এক মোহের মধ্যে কাটানোর কথা। সেখানে অষ্টম দিনের মাথায় স্বামীর শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়।
এতো কষ্টের মাঝে ও কিন্তু বাবা-মা কে জানতাম না। চেষ্টা করেছিসব দিক বজায় রাখতে। একটা সময় সবাই জানলো। টেকাতে পারলাম না আমার সেই সংসার। সাত বছর পর ফিরে আসতে হলো আগের ঠিকানায়।
এবার আমার জীবনের এক নতুন লড়াই শুরু। এ লড়াই এখন বাঁচার লড়াই, ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই, ভালো থাকার লড়াই।
এতো কষ্টের পর যখন আমি হতাশ। এর মধ্যেই শুরু হলো পৃথিবীর অসুস্থতা। যেহেতু শিক্ষকতার পেশায় নিযুক্ত ছিলাম। ২০২০ সালের মার্চের ১৭ তারিখ থেকে স্কুল বন্ধ। বেসরকারি স্কুল তাই বেতন ও বন্ধ।
আমি যেন আর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। সবকিছু অন্ধকার। এমন হতাশা দানা বাঁধে, এমন ও গেছে সারারাত শুধু কেঁদেছি। এ এক হতাশাগ্রস্ত জীবন।
এই হতাশার জীবনে হঠাৎ আলো যেন দেখা দিলো উই। ২০২০ সালে জুলাই মাসে আমি উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) এ জয়েন করি। সেই থেকে আমার নতুন জীবন শুরু। ২০২১, ২০ এপ্রিল থেকে শুরু করলাম আমার উদ্যোক্তা জীবন।
টিউশনির আট হাজার টাকায় কাজ শুরু করি নির্ভেজাল গুঁড়া মসলা ও হাতের কাজের থ্রি পিছ, বেবি ড্রেস ও বেবি নকশিকাঁথা নিয়ে।
মাত্র তিন মাসে আমার মূলধন এখন ২০ হাজার টাকা। সামনে যেতে হবে অনেক পথ...
বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২১
এসআইএস