মানুষের দেহের প্রায় ৬০ শতাংশই পানি। পানি সুস্থ জীবনের জন্য একটি আবশ্যক উপাদান।
অনেকেই বলেন, পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি (দুই লিটার) পান করা উচিত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমিস অব সায়েন্সের গবেষকরা বলছেন, এ তথ্যের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। গ্লাস মেপে পানি পান করার বিষয়টি দেহে পানি সরবরাহের দুটি বড় উৎসকে উপেক্ষা করে।
প্রতিটি খাবারের মধ্যেই পানি বিদ্যমান। বিশেষ করে কাঁচা ফল-মূল ও শাক-সবজিতে অনেক বেশি পরিমাণ পানি থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে-তরমুজ, শসা ও স্ট্রবেরির মোট ওজনের ৯০ শতাংশই পানি। মানুষের পানি চাহিদার ২০ শতাংশই পূরণ হয় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে।
পানির আরেকটি বড় উৎস বিভিন্ন ধরনের পানীয়। চা, কফি, দুধ, জুস, কোল্ড-ড্রিংক ইত্যাদির বেশিরভাগই পানি এবং এসবই দেহের পানি ঘাটতি পূরণে কাজ করে। গবেষকরা বলছেন, কফি পানি চাহিদা পূরণের একটি আদর্শ উৎস। তবে অতিরিক্ত কফি পান করা দেহের জন্য ক্ষতিকর।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি নারী দৈনিক খাবার ও পানীয় থেকে গড়ে দুই দশমিক সাত লিটার পানি পান করে থাকেন, পুরুষদের ক্ষেত্রে পরিমাণটা তিন দশমিক সাত লিটার। কিন্তু গবেষকরা বলছেন- মানুষের বয়স, ওজন, দৈহিক কাজ-কর্ম, এমনকি জলবায়ুর ওপর নির্ভর করছে তার পানি চাহিদার পরিমাণ।
ঘামের সঙ্গে যে, পরিমাণ পানি দেহ থেকে বেরিয়ে যাবে, তা পূরণ করতে এর চেয়েও বেশি পানি পানের দরকার। যে ব্যক্তি গ্রীষ্ম প্রধান অঞ্চলে দৈহিক পরিশ্রমের মাধ্যমে আয় করেন, তাকে তুলনামূলক বেশি পানি পান করতে হবে। আর যিনি শীততাপ-নিয়ন্ত্রিত অফিসে কাজ করেন, তাকে কিছুটা কম পানি পান করলেও চলে।
আপনার পানি ঘাটতি রয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য গবেষকরা সহজ একটি পদ্ধতি বলে দিয়েছেন। দেহে পানি ঘাটতি দেখা দিলে প্রাকৃতিকভাবেই আপনি তৃষ্ণা অনুভব করবেন। তাছাড়া আপনার প্রস্রাবের রং বলে দেবে পানি খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কিনা। যদি প্রস্রাবের রং হলুদ বা কমলা হয়ে আসে, তবে পানি পান করুন। আর দেহের ঘাম ঝরলে পানি পান করতে ভুলবেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২২
এএটি