ইশরাত ইয়াসমিন বেড়ে উঠেছেন ঢাকায়। তিনি মাস্টার্স পাশ করে বিএসএমএমইউ থেকে পিজিটি এবং জাতীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে ট্রেনিং কম্পলিট করে সাইকোলজিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন।
বিটিইবি বেকিং লেভেল ২ এবং বিটিইবি কুকিং লেভেল ১ কম্পলিট করেছেন ইশরাত। এখন পরবর্তী লেভেল পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বর্তমানে রান্নাকে পুঁজি করে নিয়েছেন তিনি। ইশরাতের পেইজের নাম বাটারক্রিম অ্যান্ড স্পাইস। রান্নাকে পুঁজি করার কারণ হিসেবে তিনি জানান- নিজ প্রতিষ্ঠানে একজন শেফ হিসাবে কাজ করতে যেয়ে অনেক স্বাধীনতা পাওয়া যায় এবং এ পেশা অন্য যে কোনো ক্যারিয়ারের চেয়ে আরও সৃজনশীল হতে সাহায্য করে। এছাড়া রান্না একটি শিল্প। যেহেতু রান্না করা একটি শিল্প তাই একজন শেফ হয়ে আমি বিশ্বের কাছে আমার শিল্পের প্রতিভা দেখাতে চাই।
এ কাজে কি ধরনের প্রতিকূলতা কাটাতে হয়েছে?
এতো পড়াশোনা করে এ সেক্টর আসা আমার পরিবার মেনে নিতে পারেনি। কুকিং এবং বেকিং যে একটি পেশা হতে পারে এটা আমার পরিবারকে বুঝানো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন কেমন যাচ্ছে?
এ বিষয়টা এখনো আমার পরিবার এক্সেপ্ট করতে পারেনি। তবে সবাই যখন আমার হাতের খাবারের প্রশংসা করেন, আমার স্টুডেন্টসরা যখন প্রশংসা করেন তখন সেটা নিয়ে পরিবারের সবাই অনেক খুশি হয়।
ফার্ম ফ্রেশের সৌজন্যে পপ অব কালার আয়োজিত শেফ বিয়ন্ড হোম ২০২২ উৎসবে পার্টিসিপেন্ট হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন, কেমন ছিল অনুভূতি?
যেহেতু আর্টিসান কেক নিয়ে গিয়েছিলাম তাই প্রথমে নার্ভাস লাগছিল। এ কেকগুলো একটু লাক্সারিয়াস কেক। গতানুগতিক কেক থেকে ভিন্ন। সবাইকে এ কেকগুলোর সঙ্গে পরিচিতি করাই ছিল মূল লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য একটু হলেও পূরণ হয়েছে। কারণ প্রথম দিন যারা কেক খেয়েছেন দ্বিতীয় দিন তারা আবার কেক নেওয়ার জন্য এসেছেন এবং অনেকে অপেক্ষা করেছেন কেক নেওয়ার জন্য।
আপনার বেস্ট সেলিং খাবার কোনটি?
আমাদের বেস্ট সেলিং আইটেম ছিল অনেকগুলো। তার মধ্যে ম্যাকাডেমিয়া চকলেট কেক এবং জার্মান চকলেট কেক অন্যতম। বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য জার্মান চকলেট কেক রেসিপিটি দিয়েছেন তিনি।
আসুন জেনে নেই কিভাবে তৈরি করতে হয় এ খাবার-
*কেক বেইজ
ময়দা ১১০ গ্রাম
কোকোয়া পাউডার ৩০ গ্রাম
মেল্টেড ডার্ক চকলেট ৩০ গ্রাম
চিনি ১৭০ গ্রাম
লবন ১/২ চা.চা.
বেকিং পাউডার ১ চা.চা.
বেকিং সোডা ১/২ চা.চা.
গলানো বাটার ৬০ গ্রাম
ডিম ১ টা
বাটার মিল্ক ১৫০ এম.এল
গরম কফি ৬০ এম.এল
ভ্যানিলা ১ চা.চা
*গানাশ
ডার্ক চকলেট ৫০০ গ্রাম
কুকিং ক্রিম ২৫০ এম.এল
লিকুইড গ্লুকোজ ১ টে.চা
ভ্যানিলা ১/২ চা.চা
*কোকোনাট পিকান ফিলিং
কোকোনাট ১ কাপ
দুধ ১/২ কাপ
চিনি ১০০ গ্রাম
ডিমের কুসুম ২ টা
বাটার ৬০ গ্রাম
ভ্যানিলা ১ চা.চা
টোস্টেড পিকান নাটস কুচি করা ৬০ গ্রাম
প্রস্তুত প্রণালী–
একটি বড় পাত্রে ময়দা, কোকো পাউডার, চিনি, বেকিং সোডা, বেকিং পাউডার, লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। একপাশে রাখুন। একটি স্ট্যান্ড মিক্সার দিয়ে গালানো বাটার, মেল্টেড চকলেট, ডিম, বাটারমিল্ক এবং ভ্যানিলা ভালোভাবে মিশে না যাওয়া পর্যন্ত মিশ্রিত করুন। শুকনো উপকরণগুলো লিকুইড উপাদানগুলোর সঙ্গে মিশান, গরম কফি যোগ করুন এবং সম্পূর্ণরূপে একত্রিত না হওয়া পর্যন্ত সবগুলো উপাদানকে বিট করতে থাকুন। ২ টি সাত ইঞ্চি প্যানের মধ্যে সমানভাবে বাটার ভাগ করুন। ১৮০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রিহিটেড ওভেনে ২০ থেকে ২৫ মিনিট বেক করুন। বেকিং সময় পরিবর্তিত হতে পারে ওভেন টু ওভেন ভেদে, তাই আপনার কেক বেকিংয়ের সময় খেয়াল রাখুন।
কেক বেক হয়ে গেলে প্যানে পুরোপুরি ঠান্ডা হতে দিন। কেক ঠান্ডা হলে ফ্রস্টিং করুন।
এরপর একটি পাত্রে কুকিং ক্রিম দিয়ে বলক না আসা পর্যন্ত জ্বাল দিন। বলক আসলে নামিয়ে কুচি করা চকলেটের ওপর ঢেলে দিন এবং দু’মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর একটি স্প্যাচুলা দিয়ে চকলেট আর ক্রিম ভালোভাবে মেশান হালকা হাতে। মিশে গেলে লিকুইড গ্লুকোজ আর ভ্যানিলা মেশান। ক্লিং র্যাপ দিয়ে ঢেকে রাখুন এবং ঠাণ্ডা হতে দিন।
চুলায় মাঝারি আঁচে একটি সসপ্যানে বাটার, চিনি, ডিমের কুসুম এবং দুধ মেশান। মিশ্রণটি অল্প ফুটে আসার সাথে সাথে মাঝে মাঝে নাড়ুন। একবার ফুটে উঠলে মিশ্রণটি ঘন না হওয়া পর্যন্ত ক্রমাগত নাড়ুন (৫ মিনিট)। চুলা থেকে নামান এবং ভ্যানিলা, টোস্টেড পিকান ও নারকেল দিয়ে নাড়ুন। কেক লেয়ারে দেওয়ার আগে পুরোপুরি ঠাণ্ডা হতে দিন। এটি ঠান্ডা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও ঘন হবে।
কেক লেয়ারে কোকোনাট পিকান ফিলিং এবং সাইডে গানাশ দিয়ে ফ্রস্টিং করুন।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
জেডএ