ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

লন্ডন

বাংলাদেশ সরকার ও গণমাধ্যম মন্তব্য ভুলভাবে প্রচার করছে : অ্যামনেস্টি

সৈয়দ আনাস পাশা, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৫
বাংলাদেশ সরকার ও গণমাধ্যম মন্তব্য ভুলভাবে প্রচার করছে : অ্যামনেস্টি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লন্ডন: গত ৩১ অক্টোবর যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার দাবি করে বিবৃতি দিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়া মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল লন্ডনে বাংলা সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে এর ব্যাখ্যা দিয়েছে। সংগঠনটির অভিযোগ, তাদের মন্তব্য ভুলভাবে প্রচার করছে বাংলাদেশের সরকার ও গণমাধ্যম।



শুক্রবার (৬ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় লন্ডনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান কার্যালয়ে বাংলা সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে এ ব্যাখ্যা দেয় তারা। তবে সাংবাদিকদের হাতে কোনো লিখিত বক্তব্য না দিয়ে মৌখিকভাবে তাদের বিবৃতির ব্যাখ্যা দেন অ্যামনেস্টি কর্মকর্তারা।

যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মুক্তি ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তারা বলেন, আমাদের বিবৃতি ভুলভাবে প্রচার করে প্রপাগাণ্ডা চালানো হচ্ছে।

এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ বিষয়ক গবেষক আব্বাস ফয়েজ। তাকে সহযোগিতা করেন সংগঠনের সাউথ এশিয়ান ডিরেক্টর অব রিচার্স ডেভিড গ্রিফিথ ও ডেথ পেনাল্টি বিষয়ক উপদেষ্টা চিয়ারা সানগিওরজিও।

আব্বাস ফয়েজ বলেন, আমরা কোনো অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি চাইনি। আমরা শুধু বলেছি, বিচারটি যেন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও নিয়মকানুন মেনে হয়।

তিনি বলেন, অ্যামনেস্টি একটি মানবাধিকার সংগঠন। বিশ্বের যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়, সেখানেই আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।

এ প্রসঙ্গে বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়া চৌধুরীর ওপর পুলিশি নির্যাতনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেই সময় আমরা ওই ঘটনারও প্রতিবাদ করেছি।

অ্যামনেস্টি মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার চায়নি মন্তব্য করে এ বিষয়ক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আব্বাস ফয়েজ বলেন, আমরা বলেছি, মুক্তিযুদ্ধকালে যারাই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদেরই বিচার হওয়া উচিত। এমনকি যদি মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যেও এ অপরাধী থেকে থাকে।

তিনি বলেন, আমাদের পুরো বিবৃতিটি বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে। আশা করি, আমাদের আজকের ব্যাখ্যার পর এ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক আর থাকবে না।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সব ধরনের মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী উল্লেখ করে আব্বাস ফয়েজ বলেন, শুধু বাংলাদেশের অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী নয়, বিশ্বের সব দেশের মৃত্যুদণ্ডের বিধানের বিষয়ে আমাদের এ আপত্তি।

বাংলাদেশ আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে, এর বিরোধিতা করা একটি দেশের আভ্যন্তরীণ বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জেনেভা চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে আমরা এ দাবি করতেই পারি। এ সময় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আন্তর্জাতিক মান নিয়ে আবারও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে ব্লগার হত্যা, সংখ্যালঘু ও পাহাড়ি আদিবাসীদের নির্যাতন এবং তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে মন্তব্য করে আব্বাস বলেন, এ নিয়ে হয়তো সরকারকে মাশুল দিতে হতে পারে। বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তদের ডিটেনশন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৫
আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লন্ডন এর সর্বশেষ