ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় অপটোপ্রেনার

রিটেইলার শপে মিলছে কাজ, পাঠ ও সার্টিফিকেট

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৪
রিটেইলার শপে মিলছে কাজ, পাঠ ও সার্টিফিকেট Prof Dr. Datu Chin See Keat

কুয়ালালামপুর থেকে: মালয়েশিয়ায় এবার পড়াশোনার খরচ যোগাবে স্টারবাকস বা কেএফসি'র মতো আন্তর্জাতিক রিটেইলার ও চেইনশপ কোম্পানিগুলো। আর পড়াশোনার অংশ হিসেবেই এসব প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করবেন শিক্ষার্থীরা।

এতে টিউশন ফি'র দুঃচিন্তা যেমন থাকবে না, তেমনি কাজ করার জন্য পুলিশি ঝামেলায়ও পড়তে হবে না তাদের।  

ইনস্টিটিউট অপটোপ্রেনার (Institute Optopreneur) শিক্ষার্থীদের জন্যে নিয়ে এসেছে এ সুবিধা। ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. চিন সি কিট (Prof Dr. Datu Chin See Keat) নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছেন। রিটেইল শপগুলোতে দক্ষ কর্মী গড়ে তুলতে তার প্রতিষ্ঠানে চালু করেছেন দুই বছরের ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম। ডিপ্লোমা ইন রিটেইলিং নামে এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী বিশ্বমানের রিটেইল শপগুলোতে দক্ষ সেলসম্যান হিসেবে গড়ে উঠবে। ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতে পারবে। এমনকি এক সময় নিজেও প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে উঠবে।  

ইনস্টিটিউট অপটোপ্রেনার’র ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন কনসালট্যান্ট মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, এখানে শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্যে প্রথম বছরের টিউশন ফি বাবদ ২ লাখ ২০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা ব্যয় করতে হয়। এই টাকা দিয়ে শিক্ষার্থীরা এখানে আসেন।   কিন্তু সেখানেই শেষ নয়, তাদের ভিসা নবায়নের লক্ষ্যে পরের বছরের জন্য টিউশন ফি জমাতে হয়। যা দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। শিক্ষার্থীদের জন্য কাজটি বেশ কঠিন। তখন তারা খণ্ডকালীন কাজ করে যা আয় করেন, তা দিয়ে ঘর ভাড়া, খাওয়া খরচ আর পড়াশোনার ব্যয় চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ২০ ঘন্টার বেশি কাজের অনুমতি নেই। কিন্তু যখন তাদের কাজটি হবে শিক্ষার অংশ তখন তারা এই সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন। আর ঠিক সে কাজটিই করছে ইনস্টিটিউট অপটোপ্রেনার।

আনিসুজ্জামান বলেন, ডিপ্লোমা ইন রিটেইলিং প্রোগ্রামের পাঠ্যসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রিটেইল শপের আউটলেটে কাজ করতে পারেন। এখানকার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোর্সটির অনুমতি নেওয়া হয়েছে এভাবেই। রিটেইল শপে কাজকে শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। ফলে পুলিশি সমস্যা থেকেও তারা মুক্ত। আর শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকেই নিজেদের তৈরি করে নিতে পারছেন ভবিষ্যতে ভালো কাজের জন্য। অন্যান্য কোর্সে ক্লাসে যেটা কাগজে কলমে শেখানো হয়, এখানে সেটাই কাজের মাধ্যমে শিখছেন শিক্ষার্থীরা।

কারিকুলাম অনুযায়ী সপ্তাহে চার দিন কাজ করবেন শিক্ষার্থীরা। বাকি দুই দিন একাডেমিক ক্লাস আর এক দিন সাপ্তাহিক ছুটি।

মালয়েশীয়রা এ ধরনের রিটেইল শপে কাজ করতে চায় না। অন্য দিকে ১৫০০ থেকে ২০০০ রিঙ্গিতের বেশি বেতন দিতে চান না এগুলোর মালিকরা। এ ক্ষেত্রে কাজের দক্ষতা, নৈতিকতা আর পরিশ্রমের বিচারে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাই মালিকদের প্রথম পছন্দ।

শিক্ষার্থীদের জন্যে সুবিধার বিষয়টি হচ্ছে, যে রিটেইল কোম্পানিতে তারা চাকরি করবেন সে প্রতিষ্ঠানই তার দ্বিতীয় সেমিস্টারের টিউশন ফি জমা দেবে। এছাড়াও দেবে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা। আর পকেট মানিতো রয়েছেই।

অধ্যাপক ড. চিন সি কিট আশিয়ান গ্রান্ড রিটেইল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট। তার মাধ্যমেই বিভিন্ন রিটেইল কোম্পানির সঙ্গে এ সর্ম্পকিত চুক্তি করেছে ইনস্টিটিউট অপটোপ্রেনার। চুক্তি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

এই কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা খদ্দেরদের সঙ্গে ব্যবহার, কথা-বার্তা তাদের প্রতি সেবা দেওয়ার প্রক্রিয়া সব কিছুই শিখে নিতে পারেন। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের দক্ষ বিক্রেতা হিসেবে গড়ে তোলেন।

ইংল্যান্ড অপটিক্যাল গ্রুপের সত্ত্বাধিকারী এই চিন সি কিটের চীনে ৪০টির বেশি আউটলেট রযেছে। মালয়েয়শিয়াতেও রয়েছে বেশ কয়েকটি আউটলেট। নিজের প্রতিষ্ঠানেই দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে তাকে হিমশিম খেতে হয়। এই উদ্যোগ সে সমস্যারও একটি সমাধান দেবে।

বিক্রেতা যে পণ্যটি বিক্রি করছে, সেটির ওপরেও তার জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন ড. চিন। আর এ তাগিদেই ডিপ্লোমা ইন রিটেইলিং প্রোগ্রামের উদ্যোগ।  

ইনস্টিটিউট অপটোপ্রেনারে ডিপ্লোমা ইন রিটেইলিং প্রোগ্রাম সর্ম্পকে জানতে [email protected] মেইল করে জেনে নিতে পারেন বিস্তারিত। আর www.io.edu.my ওয়েবসাইট ব্রাউজ করে যে কেউ দেখে নিতে পারেন ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘন্টা, ২৮ নভেম্বর ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ