ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

চালকবিহীন ট্রেন, যাত্রীদের সিটে বসার আগ্রহ কম!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৪
চালকবিহীন ট্রেন, যাত্রীদের সিটে বসার আগ্রহ কম! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মালয়েশিয়া থেকে ফিরে: পযর্টকদের কাছে টানতে নানা পরিকল্পনা একের পর এক বাস্তবায়ন করে চলেছে মালয়েশিয়া সরকার। এর মধ্যে অন্যতম অবকাঠামো উন্নয়ন।

অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সড়ক ও যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে।

কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে চালকবিহীন ট্রেন সার্ভিস চালু রয়েছে। এটি সাধারণত নতুন বিমানবন্দর থেকে পুরাতন বিমানবন্দরে যাত্রীদের পৌঁছে দেয়।

তিন কোচবিশিষ্ট এই ইলেকট্রিক ট্রেনে যাত্রীদের কোনো ভাড়াও পরিশোধ করতে হয় না। কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে যাত্রীরা নেমেই ট্রেনযোগে পুরাতন বিমানবন্দরে আসেন। পাঁচ মিনিট পর পর ট্রেনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচল করে।

অপরদিকে লাইট ৠাপিড ট্রানজিট (এলআরটি) পাতাল ট্রেনেও কোনো চালক নেই। কম্পিটারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এটি নিয়ন্ত্রিত। কুয়ালালামপুর মসজিদ জামেক থেকে কেএলসিসিতে এলআরটি-তে যাতায়াত করা যায়। এটিতে সাধারণত ১০ থেকে ১২টি কোচ আছে।

আধুনিক প্রযুক্তিতে ভাড়া দিতে হয় এই ট্রেনে। নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলের ভাড়া পরিশোধ করলে কম্পিউটার ৠাপিড কেএল লিখা একটি কয়েন দেবে যাত্রীকে।

ভ্রমণ শেষে কয়েনটি নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দিয়ে স্টেশন ত্যাগ করতে হয়। এতে ভ্রমণের সময় ভাড়া নিয়ে কারোর সঙ্গে কথা বলার দরকার হয় না।

অপরদিকে কুয়ালালামপুরে উড়াল সেতু দিয়ে মনোরেল চলাচল করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বুকিত বিনতাং মনোরেল স্টেশন থেকে কে.এল.সেন্ট্রালে যাওয়ার জন্য টিকেটের মূল্য ২ দশমিক ৬০ রিঙ্গিত। রিঙ্গিত দিয়ে প্লাস্টিকের ম্যাগনেটিক কয়েন পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট জায়গায় কয়েন চেপে ধরলে স্টেশনে প্রবেশের গেট খুলে যায়। কয়েনটি এরপর সংরক্ষণ করতে হয়।

গন্তব্যে নামার পর একইভাবে কয়েনটা গেটের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দিলে গেট খুলে যায়। যাতায়াতের সময় যদি কোনো যাত্রী প্লাস্টিকের সবুজ কয়েনটি হারিয়ে ফেলেন তবে তিনি স্টেশন ত্যাগ করতে পারবেন না। এতে করে নির্দিষ্ট পরিমাণে জরিমানা দিতে হবে সেই যাত্রীকে।

অপরদিকে কেটিএম ট্রেন সার্ভিস মালয়েশিয়ার দূরপাল্লার ট্রেন। এটি মালয়েশিয়ার প্রায় সবস্থানে চলাচল করে। এই ট্রেনে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি কোচ রয়েছে। তবে এলআরটি ও কেটিএম ট্রেন চালক নিয়ন্ত্রণ করেন।

মালয়েশিয়াই প্রায় সব ট্রেনেই রয়েছে এসি ও ফ্রি ওয়াইফাই। ওয়াইফাই সংযোগের জন্য যাত্রীদের কোনো পিনকোড ব্যবহার করতে হয় না। ট্রেনে উঠার সঙ্গে সঙ্গেই ওয়াইফাই সংযোগ হয়ে যায়।

আমাদের দেশে যাত্রীরা সাধারণত আসনে বসার জন্য এক ধরনের যুদ্ধ করেন। তবে মালয়েশিয়াতে ট্রেনের সিটে বসার জন্য যাত্রীদের কোনো আগ্রহ নেই। ট্রেনে যাত্রীদের জন্য আলাদা কোনো আসন নম্বরের ব্যবস্থা নেই। যে যার মতো করে ট্রেনে ভ্রমণ করেন। পাশের আসন ফাঁকা থাকলেও যাত্রীরা যেন দাঁড়িয়েই ভ্রমণ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন।

কুয়ালালামপুরে অফিস সময়ে যাত্রীদের যানজটে পড়তে হয়। এই যানজট দূর করার জন্য পুরো শহর জুড়ে চলছে পাতাল ট্রেন সার্ভিসের কাজ।

মালয়েশিয়ায় সমভূমি নেই বললেই চলে। বরং এটি একটি বন্ধুর ভূমির দেশ। বড় বড় পাহাড়-পর্বত কেটে যোগাযোগ খাতের উন্নয়ন করছে মালয়েশিয়া। যেখানে রেল যোগাযোগ খাতও অন্যতম দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ