যশোর: ছয় বছরের শিশু আরাবুর রহমান তাওসিন। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকালে বায়না ধরেছিল বাবার সঙ্গে হোটেলে গিয়ে পরোটা খেয়ে মাদরাসা যাবে।
ছেলের আবদার মেটাতে তাকে নিয়ে বাড়ির পাশের বাজারে গিয়েছিলেন কৃষক বাবা হাবিবুর রহমান। তবে পরোটা আর খাওয়া হয়নি। হোটেলে প্রবেশের আগেই বেপরোয়া গতির কাভার্ডভ্যান ফুটপাতে এসে বাবা-ছেলেকেসহ কয়েকজনকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাবা-ছেলেসহ স্থানীয় পাঁচজনের।
স্বামী-সন্তান হারিয়ে শোকে নির্বাক হয়ে পড়েছেন তহমিনা খাতুন। ঘটনার পর থেকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কাউকে দেখলে ফ্যালফ্যাল করে শুধুই তাকিয়ে থাকছেন। কোনো কথা বলছেন না।
আর মধ্যে মধ্যে সন্তানের নাম ধরে আহাজারি করছেন তহমিনা। স্বামী আর সন্তানহারা এ মায়ের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে টুনিয়া ঘরার আকাশ বাতাস। প্রতিবেশীরাও সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছেন।
বেগারিতলা বাজারের হোটেল মালিক আবু তালেব বলেন, নিহত হাবিবুরের বাড়ি বাজারের পেছনে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে রাস্তায় ওঠেন হাবিবুর। কাভার্ডভ্যানটি এসে প্রথমে তাদের দুজনকে চাপা দেয়। এরপর কাভার্ডভ্যানটি রাস্তার পাশের কয়েকটি দোকান ভেঙে নুরুল আমিনের চা দোকানে বসে থাকা লোকজনকে চাপা দিয়ে হোটেলে এসে ধাক্কা দিয়ে আটকে যায়। এরপর সবাই দৌঁড়ে এসে কাভার্ডভ্যানের নিচ থেকে পাঁচটি মরদেহ টেনে বের করে।
তিনি আরও বলেন, সড়কটি প্রশস্ত হওয়ার পরে এ সড়কের গাড়িগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই এ সড়কের কোনো না কোনো স্থানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো ঠেকাতে এবং নিয়ন্ত্রণহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশি টহল জোরদারের বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২২
ইউজি/জেএইচ