ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জঙ্গি ছিনতাইয়ের দায় এড়াতে পারে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২২
জঙ্গি ছিনতাইয়ের দায় এড়াতে পারে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ঢাকা: ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের মুখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেছেন, দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় যদি আগাম গোয়েন্দা তথ্য থাকতো তাহলে আমাদের প্রস্তুতি থাকতো।

পূর্ব প্রস্তুতি থাকলে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হতো। তাহলে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা রোধ করতে পারতাম। এজন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায় এড়াতে পারি না।

সোমবার (০৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন খন্দকার আল মঈন।

আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় আগাম গোয়েন্দা তথ্য ছিল কিনা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর দায় এড়াতে পারে কিনা—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গিকে পুনরায় গ্রেফতারে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট কাজ করছে। যারা আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পালিয়েছে তাদের পূর্বের অপরাধ কার্যক্রম, তাদের বিচরণ, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ সার্বিক দিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, দুই জঙ্গি ছিনতাই বা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে আমরা দায় এড়াতে পারি না। যদি আগাম গোয়েন্দা তথ্য থাকতো তাহলে এই ঘটনায় আমাদের প্রস্তুতি থাকতো। পূর্ব প্রস্তুতি থাকলে পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হতো, আমরা জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা রোধ করতে পারতাম।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের ঘটনা রোধে সবারই সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। আমরা মনে করি, কারাগারের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিভাগ, গোয়েন্দাসহ সবার পক্ষ থেকে যদি সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হতো, এমন ঘটনা ঘটতো না। ২০১৪ সালে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছিলেন। তারপর অনেকদিন পর এমন একটি ঘটনা ঘটলো।

আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না উল্লেখ করে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা সব সময় নজরদারি রাখছি। এমন না যে, এমন ঘটনায় আমরা শতভাগ ফুলফিল করে কাজ করতে পেরেছি। দুই জঙ্গি পালিয়ে যাবার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে।

পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি দেশে নাকি দেশের বাইরে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে এটা বলার অবকাশ নেই। আমরা কাজ করছি। আমরা তাদের পালানো, বিচরণ, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহসহ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছি।

গত ২০ নভেম্বর বেলা ১২টার দিকে দুই জঙ্গিকে একটি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। হাজিরা শেষে পুলিশ সদস্যরা তাদের নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে জঙ্গি সদস্য মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এই দুই জঙ্গি দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জঙ্গি আসামি ছিনতাইয়ের মাস্টারমাইন্ড হলেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের প্রধান সমন্বয়ক মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া। তার অনুমতিতে এই ছিনতাই অপারেশন পরিচালনা করেন সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান মশিউর রহমান ওরফে আইমান।

গ্রেফতার থাকা জঙ্গি আরাফাত ও সবুরকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, কনডেম সেলে থাকা ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি আসামিরা প্রায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতেন। কারাগারে বসেই পরিকল্পনা হয় আসামি ছিনতাইয়ের।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২২
এসজেএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।