নীলফামারী: মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের স্বাক্ষরিত পত্রে ডিমলা উপজেলার তিস্তা ডিগ্রি কলেজের তিন শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করে এ বাবদ উত্তোলিত বেতন-ভাতার অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০২০ সালের ৩০ মে মাসে দেওয়া সেই নির্দেশনা রহস্যজনক কারণে এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
অভিযোগ উঠেছে, অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভুয়া পদে একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা।
এদিকে তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হয়েছে।
সূত্র জানায়, নিয়োগের সমস্ত নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তিস্তা ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে তৃতীয় কোটায় ভৃগুরাম চক্রবর্তী, আনোয়ারুল ইসলাম এবং অধ্যক্ষ সৈয়দ আলী তার নিজ শ্যালকের স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়োগ দেন। এবং অবৈধভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চল, রংপুর অফিস থেকে এমপিও ভূক্ত করানো হয়।
ল্যাক অব কোয়ালিফিকেশনের কারণে ভৃগুরাম চক্রবর্তীর ফাইল ২০২০ সালের ৩০ মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর থেকে তৃতীয়বারের মতো বাতিল হওয়ার পরে আলৌকিকভাবে আবার ওই মাসের এমপিও লিস্টে তার নাম আসে।
এদিকে ২০২১ সালের ৪ মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (কলেজ-২) এনামূল হক হাওলাদার স্বাক্ষরিত পত্রে ভৃশুরাম চক্রবর্তীসহ উল্লেখিত ওই তিন শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করে এমপিও বাবদ উত্তোলিত বেতন-ভাতার অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সূত্র আরও জানায়, ভৃগুরাম চক্রবর্তী এশিয়ান ইউনিভাসিটি থেকে যে সনদ দিয়ে চাকরিতে যোগদান করেন সেটিও ভুয়া। কারণ ২০১০ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে কোন ভাইস চ্যান্সেল ছিল না বলে ২০১৬ সারের ১৬ নভেম্বরের সরকারি প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়।
এছাড়া ভৃগুরাম চক্রবর্ত্তীকে নিয়োগ প্রদানের মাত্র সাতদিন আগে বাংলা বিভাগে তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে এনামূল হক নামের অপর একজনকে নিয়োগ দেওয়া হলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভৃগুরাম চক্তবর্ত্তী নাম এমপিও লিস্টে পাঠানো হয়। যা পরবর্তীতে স্থগিত হয়ে যায়।
এছাড়া ভৃগুরাম চক্রবর্তী ১৯৯৮সালে এসএসসি, ২০০৫সালে এইচএসসি, ২০০৯ সালে অনার্স ও ২০১০ সালে এমএ পাস করার বিষয়টি আমলে নিয়েই এমপিও তালিকা থেকে তার ফাইল বাতিল করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ সৈয়দ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভৃগুরাম চক্রবর্ত্তী ঘটনা ধামাচাপা দিতে তার নিয়োগ ও যোগদান পত্রের বিষয় পরিবর্তন করে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেছেন। যা গত ২৭ ফেব্রয়ারি মহাপরিচালক, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কার্যকরি কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয়ভাবে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২
এসএএইচ