নীলফামারী: দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় অস্থায়ী কর্মচারীদের নিয়োগ বাতিল করে নতুন কর্মচারী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
এমনটা করা হলে নতুন কর্মচারীদের কাজ শিখতে অনেকটা সময় ব্যয় হওয়ার পাশাপাশি রেলওয়ের খরচ বাড়বে।
আগামীকাল রোববার (০১ জানুয়ারি) নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় কর্মরত অস্থায়ী ৫০০ কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সেখানে নতুন করে জনবল নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ৫০০ কর্মচারীর ভবিষ্যৎ। এখন চাকরি স্থায়ী করার দাবি করছেন তারা।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলওয়ে কারখানার জনবল সংকটের কারণে ‘কাজ আছে, মজুরি আছে’ ভিত্তিতে খালাসি পদে ৫০০ জন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী কুদরত-ই খুদার সুপারিশে সৈয়দপুর কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা সাদেকুর রহমান এই নিয়োগ দেন। এর মধ্যে চলতি বছর ৩০০ লোক নিয়োগ করা হয়েছে। এর আগে ২০০ শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরির ভিত্তিতে এসব শ্রমিক কাজ করেন। দিনে দিনে প্রশিক্ষিত হয়ে তারা এখন রেলওয়ে কারখানায় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রেলপথ মন্ত্রণালয় অস্থায়ী এসব কর্মচারীকে ছাঁটাই করতে যাচ্ছে।
রেলওয়ের ঘোষণা অনুযায়ী অস্থায়ী এসব কর্মীর চাকরি শেষ হচ্ছে আগামী রোববার। এসব কর্মীকে বাদ দিয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে ওই পদগুলোতে নিয়োগের জন্য নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি। অনেক ঠিকাদার কর্মী স্থায়ী নিয়োগের বরাত পেতে মন্ত্রণালয়ে তদবির ও দৌড়ঝাঁপও শুরু করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হলে বছরে রেলকে অন্তত ২৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত গুনতে হবে। এমনিতেই লোকসানে ধুঁকছে রেলওয়ে। তার ওপর দক্ষ জনবল বাদ দিয়ে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নতুন লোকবল নিয়োগ দেওয়া হলে প্রশিক্ষণ ব্যয় বাড়বে।
রবিউল হোসেন নামের এক অস্থায়ী কর্মচারী বলেন, আমি রেলওয়ে ক্যারেজ শপে প্রায় তিন বছর ধরে কাজ করছি। আমার কাজ শিখতেই প্রায় দুই বছর লেগেছে। এখন শুনছি আমাদের বাদ দেওয়া হবে। কিন্তু নতুন লোক এলে তাকেওতো কাজ শিখতে প্রায় দুই বছর লাগবে!
চাকরি হারিয়ে আবেদুল ইসলাম নামের আরেক কর্মচারী বলেন, প্রায় এক বছর প্রশিক্ষণ নিয়ে শেষে এখানে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছি। চাকরি থেকে ছাঁটাই করায় বৃদ্ধ মা-বাবাসহ স্ত্রী ও ছোট দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে পথে নামতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হলে রেলওয়ের প্রায় ১৫ ভাগ ব্যয় বাড়বে। এর বাইরেও নানা খরচ যুক্ত হবে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সেই পথেই হাঁটছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
এফআর