ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বছরের পর বছর অকেজো ১২ প্লেন

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৩
বছরের পর বছর অকেজো ১২ প্লেন

ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বছরের পর বছর ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে কয়েকটি প্লেন। আকাশযানগুলো দিয়ে কোনো আয় তো আসছেই না বরং বিমানবন্দরের কিছু অংশ পরিণত হয়েছে ডাম্পিং স্টেশনে।

অকেজো প্লেনগুলোর মধ্যে ২০১৬ সালের শুরুর দিকে বন্ধ হয়ে যাওয়া ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ক্রাফটই বেশি।

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজসহ কয়েকটি এয়ারলাইন্সের অন্তত ১২টি পরিত্যক্ত প্লেন রফতানি কার্গো ভিলেজের সামনে দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে আছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ক্রাফট আছে আটটি, জিএমজি এয়ারলাইন্সের একটি, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের দুটি, অ্যাভিয়েনা এয়ারলাইন্সের একটি। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) থেকে এ বিষয়ে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও পরিত্যক্ত প্লেনগুলো নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসেনি সংস্থাগুলো।

জানা গেছে, ২০২০ সালের আগস্টে কোনো এক সময় কার্গো ভিলেজের সামনে থেকে অকেজো প্লেন সরিয়ে ফেলার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্লেনগুলোকে সাময়িকভাবে কার্গো ভিলেজের সামনে থেকে সরিয়ে আরও উত্তর দিকে রাখা হয়। রেজিস্ট্রেশন কার্যকর থাকায় আইনি পদক্ষেপ নিয়ে আকাশযানগুলো বিক্রির করতে পারছে না বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

সূত্র জানিয়েছে, পরিত্যক্ত ১২টির মধ্যে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের আট ও জিএমজি এয়ারলাইন্সের একটি প্লেনের ডি-রেজিস্ট্রেশন করেছে বেবিচক। বাকিগুলোর ডি-রেজিস্ট্রেশন হলে নিলামে বাধা থাকবে না।

এ ব্যাপারে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, প্লেনগুলো সরানোর ব্যাপারে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি। আজও (সোমবার, ২ ডিসেম্বর) এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

ক্যাপ্টেন কামরুল বলেন, প্লেনগুলো সরিয়ে ফেলার বেশ কতগুলো ধাপ আছে। যেমন, কোনোটি ঠিক করার মতো আছে কিনা; আদৌ করা যাবে কিনা যাচাই করা। কোনোটি ওড়ানোর মতো উপযোগী কিনা। যেগুলো নেই সেগুলো নিলামের প্রক্রিয়ার জন্য ফিটনেস যাচাই করে সম্ভাব্য মূল্য নির্ধারণ করাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তারপর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। দ্রুত এসব কাজ প্রতীয়মান হতে পারে বলেও জানান তিনি।

এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নে ৭ বছর কেটে গেছে। এটি যথার্থ কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আগের কার্যক্রম নিয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। তবে, সে ব্যাপারে যদি বলতেই হয় আমাকে লেটার অব করেসপন্ডেন্টস দেখে বলতে হবে। আমরা, বিশেষ করে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত ৯ মাসে বেবিচক চেয়ারম্যানের নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের পেপার ওয়ার্ক চলমান। কোনো এয়ারলাইন্স দেউলিয়া হলে যে দেশ থেকে এয়ারক্রাফট আনা হয়, সেখানেও যোগাযোগ কর‍তে হয়। এই প্রক্রিয়াগুলো একটু সময়সাপেক্ষ। শেষ হলেই আমরা সার্ভে করব।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৭ বছর পর মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বার্ষিক সাধারণ সভা বসছে। বিগত বছরের শেষ দিকে বেসরকারি এ সংস্থার কাছে বেবিচকের দেনা মওকুফের সুপারিশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরই এ সভাকে ঘিরে ফের আকাশে ওড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে পুঁজি বাজারের একমাত্র তালিকাভুক্ত বিমান সেবা সংস্থাটির। তবে এতে কার্গো ভিলেজের সামনে থেকে প্লেন সরিয়ে ফেলার প্রক্রিয়া বিলম্ব হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২২
এমকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।