মৌলভীবাজার: উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরিচালিত বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষকের কোয়াটারের বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক শাহ আলমের কোয়াটারে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সচিব এবং প্রধান শিক্ষক আফরোজা বেগম, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এবং বিটিআরআই এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, সদস্য ও স্টোরকিপার মুকুল রায়, বিদ্যালয়ের হিসাবরক্ষক হাবিব বাহার চৌধুরী ও বিদ্যুৎ এবং গ্যাস বিভাগের কর্মকর্তারা।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকালে বিটিআরআই স্কুল সংলগ্ন তিনতলা ভবনে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই কোয়াটারে কোনো লাইট জ্বলছে না। নেই গ্যাস ও পানির কোনো ব্যবস্থা। কোয়াটারের বৈদ্যুতিক বোর্ডের পাশে খুব অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শাহ আলম।
বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোক্তভোগী ওই সাবেক শিক্ষক শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, আমি দীর্ঘ ৩৮ বছর নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষকতার পর অবসর গ্রহণ করি। কিন্তু বিটিআরআই কর্তৃপক্ষ বিধিমোতাবেক আমার প্রাপ্য গ্র্যাচুইটির টাকা আমাকে বুঝিয়ে না দিয়ে কোয়াটার ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। বিধি মোতাবেক আমার প্রাপ্যতা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমি উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছে।
তিনি বলেন, আমি প্রথমে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করি ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর। উচ্চ আদালত থেকে প্রথম চিঠি এসেছে ২২ ডিসেম্বর এবং দ্বিতীয় চিঠি এসেছে ২৯ ডিসেম্বর। সেই রিট পিটিশনের পাঠানো পত্রে উল্লেখ করা হয় যে, উচ্চ আদালতে এই আবেদনটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাকে কোনো প্রকার হয়রানি এবং আমার কোয়াটারের বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। কিন্তু বিটিআরআই কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতের এ নির্দেশ অমান্য করে আমার কোয়াটারের বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আমাকে বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
শাহ আলম জানান, অবসর শেষে আমার গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড এর জন্য বিধিমোতাবেক পরিচালক (স্কুল সভাপতি বরাবর) আবেদন করি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বিধিমোতাবেক প্রকৃত পাওনা না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছা মতো সামান্য অর্থের চেক এর প্রাপ্তিস্বীকারপত্রে সই করতে বলেন। এ টাকা গ্রহণে আমি অপারগতা প্রকাশ করি।
জালালাবাদ গ্যাস এর শ্রীমঙ্গল আঞ্চলিক অফিসের ম্যানেজার প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, কোয়াটারগুলোর গ্যাস গ্রহীতা বিটিআরআই পরিচালক। যখন কোয়াটারে কোনো লোক থাকেন না তখন আমাদের লিখিতভাবে জানালে আমরা গিয়ে সেই সংযোগ বিছিন্ন করি। আবার কোনো কোয়াটারে কোনো লোকে এলে সেই বিষয়টি আমাদেরকে লিখিতভাবে চিঠিতে অবহিত করা হলে আমরা সেখানে পুনসংযোগ দিয়ে থাকি।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এবং বিটিআরআই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ড. ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি একটু মিটিয়ে আছি। আপনি সাক্ষাতে কথা বলতে পারেন। আমি ফোনে কিছু বলবো না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
বিবিবি/আরআইএস