ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কোথায় কত দুর্নীতি হয়েছে তার স্পষ্ট তথ্য দেন: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
কোথায় কত দুর্নীতি হয়েছে তার স্পষ্ট তথ্য দেন: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করে কোথায়, কত দুর্নীতি হয়েছে তার স্পষ্ট তথ্য চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্পষ্ট তথ্য দিলে তার জবাব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্ন উত্তর পর্বে গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খানের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

মোকাব্বির খান তার প্রশ্নে বলেন, আমাদের অর্থনীতিতে আজকে যে সঙ্কট চলছে তার জন্য শুধু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ি করার কোনো কারণ নেই। এখানে আমাদের অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয় আছে। আর্থিক খাতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা, মেগা প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার, ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে ব্যাপক লুটপাট, জ্বালানি খাতে কুইক রেন্টাল ইনডেমনিটি এগুলো অনেক বিষয়ই দায়ী।

এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে হচ্ছে সংসদ সদস্য বিরোধী দলের শক্তিশালী হবার চেষ্টা করছেন। তবে তিনি যেসব অভিযোগ এনেছেন তা একেবারেই অমূলক। উনি মেগা প্রকল্পের কথা বলেছেন, এর সুবিধাভোগী কারা? এদেশের সাধারণ মানুষ। মেগা প্রকল্প তো অন্য কোনো সরকার করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার করতে সক্ষম হয়েছে। পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে করেছি। মেট্রোরেলও সাধারণ মানুষ ভোগ করছে। সংসদ সদস্য অনেক বেশি সম্পদশালী, ওনার হয়তো এসব লাগে না। আমি সংসদ সদস্যকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি কোথায়, কত দুনীতি হয়েছে- সেই কথাটা তাকে এখানে স্পষ্ট করে বলতে হবে, যার জবাব আমি দেব। আমি স্পষ্ট বলতে চাই ওয়াল্র্ড ব্যাংক তো পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল। তারা তা প্রমাণ করতে পারেনি। কানাডার ফেডারেল কোর্টে যে মামলা হয় তার রায়েই বলা হয়েছিল, যেসব অভিযোগ করা হয়েছিল তার সবটাই মিথ্যা। ওনার একটা সেকেন্ড হোম আছে। সেই সেকেন্ড হোম যেখানে অর্থাৎ ইংল্যান্ডে বিদ্যুতের দাম দেড়শ শতাংশ বেড়েছে। সেখানে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে ১৩.৩ শতাংশ। সেখানে ভোগপণ্য খাদ্যদ্রব্যসহ সব জিনিষের দাম ১৩.৩ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশে এখনো সে অবস্থার সৃষ্টি হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ কুইক রেন্টালের প্রয়োজন ছিল বলেই আমরা এনেছিলাম, তার জন্য আমরা মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছিলাম। আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন বিদ্যুৎ পেয়েছিলাম ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। যখন আমি ‘৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত ক্ষমতায় আসি তখন আমরা ১৬শ মেগাওয়ার্ট থেকে ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করি। বিএনপি সরকারের আমলে মানুষ বিদ্যুৎ পেত না, শুধু খাম্বা পোতা ছিল, বিদ্যুৎ উদপাদন হ্রাস করা হয়। বিদ্যুতের জন্য ছিল হাহাকার। কোনো কারখানা চলতে পারতো না, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের স্বল্পতা ছিল। তারপরে আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন কী কী দ্রুত উন্নতি করা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করি। কুইক রেন্টাল তখন প্রয়োজন হয়। আমরা বিএনপির রেখে যাওয়া ৩২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ থেকে ২৫ হাজার ৮০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছি। এখন প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ দিচ্ছি। কুইক রেন্টালে যদি দুর্নীতি হতো তাহলে বিদ্যুৎ তো এতদিনে পাওয়ার কথা ছিল না। বিএনপি আমলে এই বিদ্যুতের ওপর দুর্নীতি করেছিল বলেই বিশ্বব্যাংক টাকা দেওয়া বন্ধ করেছিল।

তিনি বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে দুর্নীতির কারণে অর্থ বন্ধ হয়। যেখানে বড় বড় মহারথীরাই দুর্নীতির খোঁজ পায়নি, সেখানে আমাদের কিছু লোক ভাঙা রেকর্ডের মতো দুর্নীতির কথা, কুইক রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বাজিয়েই যাচ্ছে। কিছুদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ একটু কমিয়ে দেওয়া হলেই চারিদিকে হাহাকার উঠেছিল। সেজন্যই তো কুইক রেন্টালের প্রয়োজন। যারা এসব অভিযোগ করছে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগটা যদি বন্ধ করে দিই, তা হলে দেখি কী হয়?

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
এসকে/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।