ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নোয়াখালীতে আ.লীগ সভাপতির বাড়িতে গুলি-ভাঙচুর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩
নোয়াখালীতে আ.লীগ সভাপতির বাড়িতে গুলি-ভাঙচুর

নোয়াখালী: নোয়াখালীর চাটখিলে আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফার (৫৮) বাড়িতে ঢুকে গুলি ছোঁড়া ও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

খবর পেয়ে খিলপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

  

রোববার (১৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।  

খিলপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি বলেন, রাতে ওই আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ির মেইন গেটের তালা ভেঙে ওয়াইফাই লাইন কেটে সিসি টিভির ফুটেজ নিয়ে গেছে। উনার ঘরের জানালার কাচ ভাংচুর করা হয়েছে। সিসি টিভির ফুটেজে কিছু লোক দেখা যায়। আমরা যাচাই-বাছাই করে শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।   

এর আগে, গত ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যার দিকে ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকে ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সুমনের ব্যক্তিগত অফিসে নিয়ে পেটানো হয়।  

ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফার অভিযোগ, প্রথম ঘটনার জের ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সুমনের নির্দেশে তার অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।  

তিনি বলেন, রোববার রাত ২টার দিকে ৭-৮ জন দুস্কৃতিকারী বাড়িতে প্রবেশ করে সিসি ক্যামেরার লাইন বিচ্ছিন্ন করে এবং ক্যামেরা ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে তারা ঘরের জানালার কাচ ভাঙচুর করে ফাঁকা গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি।  

দুস্কৃতিকারীরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকারও চেষ্টা করে বলে অভিযোগ এ আ.লীগ নেতার।   

কম্বল বিতরণের উদ্দেশ্যে তালিকা তৈরিকে কেন্দ্র করে দুই আ.লীগ নেতার মধ্যে এ দ্বন্দ্ব চলছে বলে দাবি খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মীর হোসাইনের।  

তিনি বলেন, কম্বল বিতরণের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা খিলপাড়া ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদককে তথ্য সংগ্রহ করে তালিকা করতে বলেন।  সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সুমন। তাকে না জানিয়ে কেন এই তালিকা করা হচ্ছে প্রশ্ন তুলেন সুমন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডাও হয় সুমন ও মোস্তফার মধ্যে। গত ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুমন তার দুই অনুসারী দিয়ে মোস্তফাকে বাজার থেকে তুলে নিয়ে যায় তার ব্যক্তিগত অফিসে। সেখানে নিয়ে মোস্তফাকে পদত্যাগ করতে চাপ দেন। একপর্যায়ে মোস্তফাকে বেধড়ক মারধর করে সুমন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।  

মীর হোসাইন আরও বলেন, মোস্তফাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। তিনি ১৩ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরলে আগের ঘটনার জের ধরে এবার তার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও গুলি চালানো হয়।   

খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আরও বলেন, আমি স্থানীয় এমপিসহ বিষয়টি সবাইকে জানিয়েছি। এ ঘটনার উপযুক্ত আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সুমনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান মো. জাহাঙ্গীর কবিরের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।  

নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম জানান, ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছিল। একটি গ্রুপ কাজগুলো করাচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকাশ হবে কারা এগুলো করাচ্ছে। কাউকে বিপদে ফেলতে ইন্টেনশেনালি করাচ্ছে এগুলো আমরা বুঝি। যারাই করাচ্ছে তারাই কাঁচা কাজ করে ফেলেছে। যে ভিডিও ফুটেজ ধরা পড়েছে সেখানে ওদেরকে চেনা যায়। ওরাতো অ্যারেস্ট হয়ে যাবে। অ্যারেস্ট হয়ে গেলে বুঝা যাবে এটা কারা করিয়েছে। আগের ঘটনাকে পাকাপোক্ত করার জন্য এটা করা হইছে। ভিডিও ফুটেজে পাওয়া চিহ্নিতদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমি নির্দেশ দিয়েছি।  

চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন জানান,  এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।