পটুয়াখালী: সরকারি টাকায় তৈরি পাবলিক টয়লেট হস্তান্তরের আগেই সেটি দখল করে হোটেল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জমির মলিক ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে।
কুয়াকাটা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ৮টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
এর মধ্যে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ট্যুরিস্ট পুলিশের অফিসের সামনে একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়। ব্যক্তিগত ব্যবসায়ীক সুবিধার আশায় পাবলিক টয়লেটের জন্য জমি দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ গাজী। কোনো লিখিত না নিয়ে দান করা জায়গায় পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেটি আর টয়লেট না বানিয়ে ছাদসহ আশপাশ দখল করে ব্যক্তি মালিকাধীন হোটেল ভবন নির্মাণ শুরু করেন আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ গাজী।
গত কয়েকদিন ধরে সেখানে হোটেল নির্মাণের কাজ চললেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কিংবা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কোনো কর্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। তবে মেয়রের দাবি, তিনি প্রকৌশল শাখা থেকে কাজ বন্ধের নোটিশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী বলেন, যে জমিতে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে সেটি আমার ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি। কুয়াকাটা পৌর মেয়র যখন এখানে টয়লেট নির্মাণ করার কথা বলেন, তখন আমি টয়লেটের জমি দিতে রাজি ছিলাম না। তারপরেও তিনি আমাকে বলেন যে, 'হস্তান্তর করার পর আপনি যা মন চায় করেন। টয়লেট নির্মাণ শেষ হলে আপনি আপনার মতো সেটি কাজে লাগাতে পারবেন। '
তিনি আরও বলেন, তাদের কথা মতো আমি জায়গা দেই। কিন্তু নির্মাণ হলেও, তারা টয়লেট হস্তান্তর করছে না। তাই আমি উপরে কাজ শুরু করি। তার সেই কথা মতো আমি জমি দিয়েছি। এখন যখন কাজ শুরু করেছি, তখন ইঞ্জিনিয়ার বলছেন টয়লেট হস্তান্তর হওয়ার পর কাজ করেন, সাংবাদিকরা ফোন দিচ্ছেন। অবশ্য মেয়র বলেছেন কাজ করতে। আমি আমার জমি দিয়ে এখন উল্টো বিপদে পড়লাম।
কলাপাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জাহিদ হোসাইন বলেন, পাবলিক টয়লেট নির্মাণের স্থানগুলো পৌর মেয়র নির্ধারণ করেছেন। তার নির্দেশনায় এসব টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে হস্তান্তরের আগে জায়গার মালিক ভবন নির্মাণ শুরু করলে আমরা বিষয়টি পৌরসভায় জানাই এবং কাজ বন্ধ করতে বলি। বর্তমানে কাজ বন্ধ আছে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। স্থাপনা না নির্মাণ করার জন্য তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। টয়লেট নির্মাণের জায়গার জন্য গাজীর সঙ্গে আমার কোনো ধরনের চুক্তি হয়নি। তিনি নিজের সুবিধার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের ইঞ্জিনিয়ারের যোগসাজশে স্থান নির্বাচন করে কাজ করিয়েছেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি জেনেছি। স্থাপনা নির্মাণের পর তা পৌরসভা কিংবা স্থানীয় প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেয় জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরে তাদের দ্বায়িত্বেই থাকে। তারপরেও এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩
এফআর