ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৬ বছর আগে হত্যার পর লাশ গুম, আসামির স্বীকারোক্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
৬ বছর আগে হত্যার পর লাশ গুম, আসামির স্বীকারোক্তি গ্রেফতার আসামি, ইনসেটে হত্যার শিকার রাজীব

যশোর: যশোর শহরের পুরাতন কসবায় প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে উদ্ধার সেই কঙ্কালের পরিচয় মিলেছে। কঙ্কাল উদ্ধারের পর ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করেছে যশোর পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)।

ছয় বছর আগে খুলনার দিঘলিয়ার চন্দোলি মহল এলাকার ফারুক হোসেনের ছেলে রাজীব হোসেন কাজীকে (৩২) হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছিল।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সালাম (৫৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সালাম নড়াইলের লোহাগড়া থানার মঙ্গলহাটা গ্রামের মৃত নুর মিয়ার ছেলে। বর্তমানে যশোর সদরের কিসমত নওয়াপাড়া গ্রামের আবদার ড্রাইভারের বাড়ির ভাড়াটিয়া।

পিবিআই যশোরের এসআই জিয়াউর রহমান জানান, গত ২০২২ সালের ৩০ মে যশোর শহরের পুরাতন কসবা নিরিবিলি এলাকা থেকে বজলুর রহমানের দেয়াল ঘেরা জমিতে ভবন নির্মাণের জন্য ভাঙার কাজ করে। এ সময় পরিত্যক্ত পুরাতন টয়লেটের রিং স্লাবের কুয়ার ভেতর রাখা প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্যে থেকে রাজিবের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনার পর পিবিআই কর্মকর্তারা তদন্ত কাজ শুরু করেন। পরে তারা জানতে পারেন শহরের পুরাতন কসবা আবু তালেব সড়কের শেখ আজিজুল হকের ছেলে শেখ সজিবুর রহমান (৩৪) হত্যার শিকার রাজিবের চাচা হাসমতের অফিসে কাজ করতেন।

২০১৬ সালের ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে রাজিব তার বাবাকে ফোন করে তাদের খুলনার বাড়িতে আসছে বলে জানায়। কিন্তু রাজিব খুলনায় তাদের বাড়িতে যায়নি। রাজিবে মা মাবিয়া বেগম ও চাচা হাসমত সজীবের বাসায় গিয়ে রাজিবের খোঁজ করলে সজীব জানায় রাজিব কোথায় গেছে সে তা জানে না। প্রয়োজনে মামলা করে ছেলেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করতে পরামর্শ দেন তিনি।

দীর্ঘদিন পর গত বছরের ৩০ মে চাচা হাসমত রাজিবের বাবা ফারুক হোসেনকে ফোন করে জানান যশোর শহরের পুরাতন কসবা নিরিবিলি এলাকায় টয়লেটের রিং স্লাবের কুয়ার মধ্যে থেকে মানুষের কঙ্কাল পাওয়া গেছে। শেখ সজীবুর রহমানের যেখানে অফিস ছিল সেখান থেকে ওই কঙ্কাল পাওয়া গেছে। রাজিব নিখোঁজ হওয়ার কিছুদিন পর সজীব তার অফিস ভেঙে ফেলেছিল। ফারুক হোসেন তার ভাই হাসমতের কথা শুনে যশোরে আসে।

ছায়া তদন্তকালীন সময়ে মৃত রাজিবের বাবা ফারুক হোসেন পিবিআই যশোর অফিসে এসে পুলিশ সুপারকে তার ছেলেকে শনাক্তকরণের জন্য অনুরোধ করে। পিবিআই যশোর কার্যালয়ে তিনি একটি জিডি করেন।  

জিডির সূত্র ধরে পিবিআই যশোর জেলার এসআই জিয়াউর রহমান রাজিবের বাবা ফারুক হোসেন এবং তার স্ত্রী মাবিয়া বেগমকে আদালতের নির্দেশ গ্রহণ করে কঙ্কালের সঙ্গে তাদের পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরে ডিএনএ পরীক্ষায় ড্রামের মধ্যে পাওয়া মানবদেহের কঙ্কালের সঙ্গে ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মাবিয়ার ডিএনএর মিল পাওয়া যায়।

পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, মামলাটির তদন্ত করতে গিয়ে যশোর সদরের কিসমত নওয়াপাড়ার আবদার ড্রাইভারের বাড়ির ভাড়াটিয়া সালামকে (৫৫) নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানায় পরিকল্পিভাবে রাজিবকে হত্যা করে শেখ সজিবুর রহমানের অফিসের টয়লেটের কুয়ার মধ্যে ফেলে দেয়।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) গ্রেফতার সালামকে যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালালের আদালতে সোপর্দ করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। লাশ বহনের কাজে ব্যবহৃত রিকশা জব্দ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য অসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
ইউজি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।