ভোলা: চলছে শীত মৌসুম। বছরের অন্য মৌসুমের তুলনায় এ মৌসুমে শুঁটকির কদর বাড়ে।
বিগত সময়ের তুলনায় শুঁকটির দাম কিছুটা বাড়লেও স্বাদ আর সাধ্যের মধ্যে শুঁটকি কিনছেন ক্রেতারা। দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ভোলার শুঁটকি। চাহিদা থাকায় যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।
এ মৌসুমে জেলার আড়তগুলোতে খুচরা ও পাইকারি দরে শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে।
আড়তদাররা জানান, ছুরি মাছের শুঁটকি কেজি প্রতি ৩শ টাকা, চিংড়ি কেজিপ্রতি ১৭৫, চেউয়া ১০০-১২৫, লইট্ট্যা ও মলা কেজিপ্রতি ৫শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে শহরের কালীনাথ রায়ের বাজারে শুঁটকির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সেখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হচ্ছে শুঁটকির কেনা-বেচা।
জানা গেল, এক শ্রেণির ক্রেতাদের প্রিয় খাবার শুঁটকি। আর তাই নানা ধরনের মুখরোচক খাবার তৈরিতে শুঁটকি কিনছেন তারা। বাজারে চিংড়ি, চেউয়া, লইট্ট্যা, মলা ও কাচকিসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় মাছের শুঁটকির চাহিদা অনেকটা বেশি। এসব শুঁটকির দাম কিছুটা বেশি বলে জানালেন দোকানিরা।
আড়তদার মো. কবির জানান, করোনার ৩ বছর আমরা তেমন কেনা বেচা করতে পারিনি। এ মৌসুমে শুঁটকির দাম বেশি হলেও কেনাবেচা ভালো। শুঁটকি মাছ একটি জনপ্রিয় খাবার তাই, ক্রেতারা এসব মাছ কিনেন। এখানে প্রতিদিন ৫০ হাজার থেকে ৬০ জাজার টাকার মাছ বিক্রি হয়।
ক্রেতা রহিমা বেগম বলেন, শুঁটকি মাছ আমার প্রিয়, মাঝে মধ্যেই শুঁটকি কিনতে আসি।
সাত্তার ও সোহাগ নামে অপর ক্রেতা জানালেন, শুঁটকি মাছের দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। তবুও খাবার স্বাদ নিতে কিনতে হচ্ছে। আমাদের মত অনেকেই শুঁটকি কিনতে আসেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, উপকূলীয় জেলা ভোলার চারদিক নদীবেষ্টিত। এ জেলার এক শ্রেণির জেলে রয়েছেন যারা শুধুমাত্র শীতের মৌসুমে মেঘনা-তেঁতুলিয়া, খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয় থেকে মাছ আহরণ করেন। সেই সব মাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করেন। বিশেষ করে দ্বীপজেলার মনপুরা, ঢালচর, কুকরি-মুকরি ও কচ্ছপিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শুঁটকি প্রস্তুত করেন তারা। সেই সব শুঁটকি পাইকারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে আড়তে বিক্রি করেন। এছাড়াও কক্সবাজার, কুয়াকাটা, সুন্দরবন, সোনারচর থেকে শুঁটকি চলে আসে ভোলার আড়তে। ঢেলা, ফ্যাপসা, ছুরি, লইট্ট্যা, চাপিলা, চিংড়িসহ ৩০ থেকে ৩৫ প্রজাতির মাছ দিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়। এ মাছ অনেকের কাছেই প্রিয়। তাই আড়ত থেকে মাছ কিনে নিয়ে যান। এ মৌসুমে শুঁটকির কেনা-বেচা অনেক ভালো বলে জানান কয়েকজন বিক্রেতা।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লা বলেন, ভোলার মনপুরা এবং চরফ্যাশনে প্রায় ৮-৯ হাজার জেলে রয়েছেন যারা শুঁটকির ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। চাহিদা বেশি থাকায় এ জেলার শুঁটকি বাইরের জেলায় যায়। দিন দিন শুঁটকি জনপ্রিয় হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন জেলেরাও।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, জানুযারি ১৯, ২০২৩
আরএ