ঢাকা: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না, হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই, যদি আল্লাহ নিজের হাতে গজব না দেয়। সামনে বোরো আবাদ হচ্ছে, বোরোর আবাদও মানুষ পাগলের মতো করছে, ফলনও ভাল হবে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে চলমান জেলা প্রশাসক সম্মেলন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আগে খরার জন্য আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কায় থাকলেও এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, সংগ্রহ ভালো হয়েছে, সরবরাহও ভালো আছে। সর্বশ্রেষ্ঠ মজুদ এখন প্রায় ১৯ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। আমাদের এখনও সংগ্রহ চলছে।
এত ফলনের পরেও কেন দাম কমছে না এমন প্রশ্নের জবাবে সাধন চন্দ্র বলেন, আপনি এর থেকে যদি কমের কথা বলেন তাহলে কৃষকদের কাছ থেকে ৭০০ টাকা মণ ধান কিনতে হবে। মারা পড়বে কৃষক, তখন ধান-চালই পাওয়া যাবে না। আমরা যে ধানের দাম নির্ধারণ করেছি এর থেকে বেশি ধামে কৃষকেরা বাজারে ধান বিক্রি করছে। ন্যায্যমূল্যের উপরে দাম পাচ্ছে।
একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, আমরা খাদ্য মন্ত্রণালয় ধান কিনি একটা কারণে, যাতে সিন্ডিকেট করে কৃষকদের না ঠকানো হয়। আমাদের কাছে না আসুক, বাজারে বেশি মূল্য পাক, এটাই যথেষ্ট।
পাশে থাকা কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক যোগ করেন, আমরা খরচ হিসাব করি, ডিজেল-সার-সেচের কতটুকু খরচ, ধান কাটা থেকে শুরু করে মাড়াই পর্যন্ত এক মণ ধানে কত খরচ হলো তার ওপরে। আমরা কেজিপ্রতি এক টাকা, দুই টাকা বেশি ধরে দাম নির্ধারণ করি। এত ধান বিক্রি হয়েছে, ১৮০০ টাকা মণ পর্যন্ত বাংলাদেশে ধান বিক্রি হয়েছে। এটা ভালো না, কিন্তু হয়েছে। আমনের ফলন ভালো হওয়ার পরও ১২০০-১৩০০ টাকা করে ধানের মণ বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষকের যেন লাভ হয়, সেটা ধরেই আমরা মূল্য নির্ধারণ করি।
খাদ্য আমদানির বিষয়ে তিনি বলেন, আরেকটা বিষয় আছে কৌশলগত, নিলামের যে সিন্ডিকেট- এরা সবসময় দাম বাড়িয়ে দেয়। তাদের ইচ্ছেমতো নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের যখন রপ্তানির কিছুটা সুযোগ থাকে, তখন তারা ভয় পায় যে রপ্তানি বেশি হলে তাদের লস হবে। তখন তারা মজুদটা কম করে। এটা আমাদের একটা কৌশল।
আবহমানকাল থেকে অতীতে কার্তিক মাসে মঙ্গা হলেও দেশে কোনো খাদ্যসঙ্কট হয় নাই, মঙ্গা হয় নাই। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, দেশে কোনো মানুষ কি না খেয়ে থাকছে?
এরপর আবার খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, তবে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। চালের দাম যাদের জন্য অসহণীয় পর্যায়ে তাদের জন্য ওএমএস, খাদ্যবান্ধব ভিজিডি, ভিজিএফ ইত্যাদি আছে। শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। সবাই ভালো আছে। বাঙালির পেট ঠাণ্ডা, মাথাও ঠাণ্ডা আছে। অপচয় বন্ধ করতে হবে, বিয়ে বাড়িতে দেখা যায় ১০-১৫ শতাংশ খাবার অপচয় হচ্ছে।
সরিষার ফলনে ভোজ্যতেল নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, শুধু মানিকগঞ্জ নয়, সারাদেশেই সরিষার আবাদ হচ্ছে, আমার ধারণা ৩০ শতাংশ ভোজ্যতেল এবার আমরা সরিষা থেকে সংগ্রহ করতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
এমকে/জেডএ