ঢাকা: বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রস্তাব দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দেওয়ার ও জঙ্গি সরকার কায়েমের চক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। বিএনপির ১০ দফাকে অস্বাভাবিক সরকার আনার ষড়যন্ত্র বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে হাসানুল হক ইনু এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশকে এগিয়ে নিতে রাতদিন কাজ করছেন তখন বিএনপি-জামায়াতসহ দেশের কিছু রাজনৈতিক দল দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পথে কাঁটা ছড়াচ্ছে। বিএনপি যে ১০ দফা, ২৭ দফা দিয়েছে সেই দফার মধ্যে লুকিয়ে আছে গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত। বিএনপির ১০ ও ২৭ দফা হচ্ছে—অস্বাভাবিক সরকার আনা; যথা সময়ে নির্বাচন বন্ধ করার; ’৭১ ও ’৭৫ এর খুনি, রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াতের পক্ষ অবলম্বন এবং সাজাপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ, যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি, খুনি ও সন্ত্রাসীদের মুক্ত করার। দেশে কোনো আলেম বা ধর্ম প্রচারক ধর্মপ্রচারের জন্য কারাগারে নেই; যারা আছে তারা কেউ আলেম নন, সবাই হত্যা, খুন, নারী ধর্ষণকারী, সন্ত্রাসে দোষী ও অপরাধী। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রস্তাব হচ্ছে দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দেওয়ার প্রস্তাব, জঙ্গি সরকার কায়েমের চক্রান্ত।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার কথা উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার জন্য বাজেটের ভেতর থেকেই স্বল্প সময়ের জন্য কিছু অদল-বদল করে অন্তত ৬ মাসের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক প্যাকেজ করা দরকার। নিত্যপণ্যের মূল্য ঠিক রাখতে গরিব-নিম্নবিত্তদের ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখতে দৃশ্যমান শাস্তি দিয়ে সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস জ্বালানির জন্য মূল্যবৃদ্ধি আপাতত বাতিল করেন। আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতের লুটপাট এবং বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ধ্বংস করতে হবে। তারেক, কোকোর পাচার করা টাকা যেভাবে ফেরত আনা হয়েছে সেভাবে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে হবে। সমাজতন্ত্র ছাড়া গণতন্ত্র এক পোড়া রুটি। সমাজতন্ত্রকে সংবিধানের পাতায় রেখে পুঁজিবাদের চশমা পড়ে বৈষম্য দূর হয় না, বাড়তেই থাকবে।
ইনু আরও বলেন, উন্নয়নের ট্রেনে অনেক ঘরকাটা ইঁদুর ঢুকেছে। প্রশাসনের ভেতর নব্য রাজাকাররা মাকড়সার জাল বুনছে। সরকারের ভেতর দুই একটা খন্দকার মোস্তাকের ভূত ঢোকার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী সাবধান, কাণ্ডারি হুঁশিয়ার। ’৭১ এর মীমাংসিত মৌলিক বিষয়ে বিতর্ক রেখে শুধু একটি নির্বাচন সংঘাতের সমাধান দেবে না। এই যুদ্ধ পরিস্থিতির অবসান করতে হলে গণতন্ত্র ও শান্তি চাইলে শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠান নয়, ’৭১ এর মীমাংসিত মৌলিক রাজনৈতিক প্রশ্নেও ঐকমত্য প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সকলের ঘনিষ্ঠ ঐক্য দরকার। এই যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর ঐক্য গুরুত্বপূর্ণ। শত্রুরা মিত্রবাহিনীর ঐক্য ভাঙার চেষ্টা করবে। ঘরের শত্রু বিভীষণ, এটাও মনে রাখতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
এসকে/এমজেএফ